প্রধান উপদেষ্টার কাছে চার কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব জমা
Published: 15th, January 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন চার সংস্কার কমিশনের প্রধান। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা এই প্রতিবেদন জমা দেন।
চার সংস্কার কমিশনের প্রধান সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
তারা হলেন, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড.
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন প্রকাশ করার কথা। একই সঙ্গে ছয়টি কমিশন গঠন করা হলেও বিচার ব্যবস্থা এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।
এসব কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। চলতি মাসেই এ আলোচনা শুরু হতে পারে। সংস্কার প্রস্তাব এবং এগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য হলে সংলাপ থেকে একটি রূপরেখা আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকার ৬ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এসব কমিশনকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রথমে তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে ৭ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পরে তাদের সময় বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারি করা হয়। এর পর সরকার গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শ্রমবিষয়ক সংস্কারসহ নানা বিষয়ে কমিশন গঠন করে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক শীর্ষ কূটনীতিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাবেক প্রধান কূটনীতিক ফেদেরিকা মগেরিনিসহ আরও দুজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। ইউরোপীয় কৌঁসুলির কার্যালয় (ইপিপিও) এ তথ্য জানিয়েছে।
যদিও অভিযোগে মগেরিনির নাম সরাসরি উল্লেখ করেনি ইপিপিও। শুধু এটুকু বলা হয়েছে, বেলজিয়ামের ব্রুজ শহরে অবস্থিত কলেজ অব ইউরোপের রেক্টরকে (প্রধান) অভিযোগের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে। বর্তমানে কলেজটির রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মগেরিনি।
অভিযুক্ত অন্যরা ওই কলেজ এবং ইউরোপীয় কমিশনের জ্যেষ্ঠ দুজন কর্মকর্তা। মগেরিনিসহ তিনজনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বেলজিয়ামের পুলিশ। এ ছাড়া তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফরেন সার্ভিসের সদর দপ্তর, কলেজ অব ইউরোপ এবং মগেরিনির বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।
নবীন কূটনীতিকদের একটি প্রশিক্ষণ একাডেমি পরিচালনার জন্য কলেজ অব ইউরোপকে দায়িত্ব দিয়েছিল ইইউর ফরেন সার্ভিস। কৌঁসুলিদের সন্দেহ, এই দায়িত্ব দেওয়ার জন্য যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল, তাতে জালিয়াতি করা হয়েছিল। এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন অভিযুক্ত তিনজন।
ইউরোপীয় তহবিল–সংক্রান্ত জালিয়াতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে ইউরোপীয় কৌঁসুলির কার্যালয় বা ইপিপিও। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই সংস্থা জানিয়েছে, তিনজনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর সঙ্গে ‘ক্রয় প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি, দুর্নীতি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব এবং পেশাগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের’ সম্পর্ক রয়েছে।
ইপিপিও আরও বলেছে, বেলজিয়ামের আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনজনই নির্দোষ বলে বিবেচিত হবেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে চলে যাবেন—এমন কোনো ঝুঁকি নেই। তাই তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি মগেরিনি। অভিযোগের বিষয়ে কলেজ অব ইউরোপ বলেছে, ‘স্বচ্ছতার জন্য এবং তদন্তপ্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানাতে’ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে তারা পুরোপুরি সহযোগিতা করবে।
অভিযুক্ত বাকি দুজনের একজন স্টেফানো স্যানিনো বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের মহাসচিব ছিলেন। তাঁর কাছে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলে, সেটি আবার ইউরোপীয় কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পরে ইউরোপীয় কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান কাজা কালাসের মেয়াদের আগের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করছে তারা। এর বাইরে তারা আর কিছু বলতে পারবে না।
মগেরিনি অল্প সময়ের জন্য ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ (উচ্চ প্রতিনিধি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর থেকে কলেজ অব ইউরোপের রেক্টর তিনি। এই কলেজে ইউরোপীয় কর্মকর্তা ও রাজনীতিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০২০ সালে কলেজটিতে মগেরিনির নিয়োগ নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সে সময় অভিযোগ উঠেছিল, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে এবং বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই।