এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে মালদ্বীপের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলবে ভারত। ২০ মার্চ মালদ্বীপের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি তারা খেলবে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে। ২৫ মার্চ এই ভেন্যুতেই এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশকে আতিথ্য দিতে পারে ভারত। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন অনুমোদন দিলে দুই প্রতিবেশী দেশের ফুটবল লড়াইটি শিলংয়ে হবে।
এএফসির অনুমোদন পেলে লাল-সবুজের জার্সিতে হামজা চৌধুরীর অভিষেক হবে মেঘালয় রাজ্যের রাজধানীতে।
ভারতের মাটিতে সর্বশেষ বাংলাদেশ খেলেছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে। কলকাতার সল্টলেকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সেই ম্যাচের পর যতবার মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল, সবক’টি অন্য দেশে। যেহেতু কলকাতায় ফুটবল খুবই জনপ্রিয়, তাই সবারই ধারণা ছিল ওপার বাংলাতে হবে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি। যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দুই প্রতিবেশীর লড়াইটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কারণ অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন শিলংয়ে ম্যাচ আয়োজন করতে চায় বলে জানিয়ে দিয়েছে এএফসিকে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকেও। শিলংকে ভেন্যু ধরে নিয়েই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যেহেতু ঢাকার সঙ্গে শিলংয়ের সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। তাই চার্টার্ড বিমানে দলকে শিলং পাঠানোর চিন্তা করছে তারা। আর হামজা চৌধুরীকে রাজকীয় বরণ করার বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে।
বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, ভারত ম্যাচের আগে সৌদি আরব কিংবা কাতারে জাতীয় দলের প্রস্তুতি ক্যাম্প করার কথা চলছে। ইতোমধ্যে দুটি দেশের ফুটবল সংস্থাকে চিঠিও দিয়েছে বাফুফে। অতীতে সৌদি গিয়ে ক্যাম্প করার অভিজ্ঞতা থাকায় মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশেই দল পাঠাতে চায় ফুটবল ফেডারেশন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের মুখে জামাতার ভাষা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বপ্ন গাজা উপত্যকা থেকে সব ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে নেওয়া এবং সেটাকে সমুদ্রতীরের আন্তর্জাতিক রিসোর্টে রূপান্তর করা। এর নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। ট্রাম্পের এ পরিকল্পনা তাঁরই জামাতা জেরেড কুশনারের একটি মন্তব্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এক বছর আগে কুশনার বলেছিলেন, গাজার সমুদ্রমুখী এলাকা অত্যন্ত মূল্যবান। সেখানকার বাসিন্দাদের সরিয়ে সুদৃশ্য স্থাপনা নির্মাণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন এ রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প গাজা দখল ও সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন। সেই সঙ্গে তিনি গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ পরিকল্পনার সমালোচনায় নামে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোই। ফিলিস্তিনের মানুষ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, তারা গাজায়ই বাঁচতে ও মরতে চান। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটা জাতিগত নিধনের শামিল ও আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
এর আগেও ট্রাম্প গাজা নিয়ে একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। গত বছরের অক্টোবরে ট্রাম্প এক সাক্ষাৎকারে বলেন, যথাযথভাবে গড়ে তুললে গাজা ধনকুবেরদের শহর মোনাকোর চেয়েও ভালো কিছু হতে পারে। ২০২৩ সালে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে একে একে এসব পরিকল্পনা সামনে আসতে থাকে। শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামাতা কুশনারকে এসব বলতে শোনা যায়। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি মার্কিন প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত ছিলেন। তারই দূতিয়ালিতে ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে আব্রাহাম চুক্তি সই হয়।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হার্বার্ডের একটি অনুষ্ঠানে কুশনার বলেছিলেন, গাজার উপকূলীয় সম্পত্তি অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে, যদি সেখানে জীবিকা নির্মাণের দিকে মনোনিবেশ করা হয়। আরব-ইসরায়েল সংঘাত প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের দ্বন্দ্ব রিয়েল এস্টেট বিরোধ ছাড়া আর কিছু নয়। সেখানের পরিস্থিতি কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক। ইসরায়েলের দৃষ্টিকোণ থেকে বলব, আমি হলে লোকজনকে সেখান (গাজা) থেকে বের করে দিতাম এবং তার পর জায়গাটি পরিষ্কার করতাম।’
সম্প্রতি ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দিতে চাচ্ছেন এবং সেখানের ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা’ বানাতে চাচ্ছেন। ট্রাম্পের মতো কুশনারও একজন প্রপার্টি ডেভেলপার। বিশ্লেষকরা মনে করেন, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা তাদের দৃষ্টিতে গাজার পরিস্থিতি দেখছেন। তারা সম্পত্তি দেখছেন, সেখানকার ২২ লাখ মানুষ দেখছেন না।
গাজার বাসিন্দারা ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। আর চীন বলেছে, গাজার মালিক গাজার মানুষ। এটা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিবিসির বিশ্লেষণ
গাজা থেকে বাসিন্দাদের অন্য দেশে পাঠিয়ে এর দখল ও মালিকানা নেওয়ার ট্রাম্পের যে পরিকল্পনা, তা বাস্তবায়ন হওয়ার নয়। এটা করতে হলে আরব দেশগুলোর সহায়তা প্রয়োজন, যা মিলবে না। এরই মধ্যে জর্ডান, মিসর, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মিত্র দেশগুলোও। তবে এর দীর্ঘস্থায়ী নেতিবাচক প্রভাব থাকবে। কট্টরপন্থি ইহুদিদের পরিকল্পনায় ট্রাম্পের এ প্রস্তাব হাওয়া দেবে।
ইউএনএইচআরসি ছাড়ল ইসরায়েল
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল (ইউএনএইচআরসি) ছেড়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার সামাজিক মাধ্যম এক্সে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শতাধিক অভিযোগ করেছে মানবাধিকার কাউন্সিল, যা ইরান, কিউবা, উত্তর কোরিয়া ও ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে আনা মোট অভিযোগের চেয়েও বেশি। এ ধরনের বৈষম্য ইসরায়েল মেনে নেবে না।