জনপ্রতিনিধি ও তাদের পরিবারের সম্পদের হিসাব প্রতি বছর দাখিলের সুপারিশ
Published: 15th, January 2025 GMT
দুর্নীতি ও অনিয়মে সম্পৃক্ত কাউকে নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। এছাড়া জনপ্রতিনিধি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব প্রতি বছর দাখিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
বুধবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে চার সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রধান উপদেষ্টা ড.
ষষ্ঠ সুপারিশে বলা হয়েছে, নির্বাচনী আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও শুদ্ধাচার চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলসমূহ ও নির্বাচনের প্রার্থীরা অর্থায়ন এবং আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত করবে; জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও দুদকের সহায়তায় নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী হলফনামায় প্রার্থীগণ কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যের পর্যাপ্ততা ও যথার্থতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সকল পর্যায়ের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দায়িত্ব গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে ও পরবর্তীতে প্রতি বছর নিজের ও পরিবারের সদস্যদের আয় ও সম্পদ বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেবেন এবং নির্বাচন কমিশন উক্ত বিবরণীগুলো কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন এবং রাজনৈতিক দলসমূহ দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিকে দলীয় পদ বা নির্বাচনে মনোনয়ন দেবেন না।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভবন সংস্কারের সুপারিশ মূল্যায়ন কমিটির
সংস্কার না করলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের অংশবিশেষ এবং অবকাশ ভবনসহ মোট পাঁচটি ভবন ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝুঁকি মূল্যায়নসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি। ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতিতে গঠিত এ কমিটি ভবনগুলোকে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—এই দুই ভাগে ভাগ করে রেট্রোফিটিংয়ের সুপারিশ করেছে।
রেট্রোফিটিং এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে পুরোনো ভবনকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার করা হয় ও আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়। ভূমিকম্পের সময় ভবনকে সুরক্ষা দিতে ভবনে আলাদাভাবে স্টিলের কাঠামো যুক্ত করা কিংবা নতুন করে আস্তরণ দেওয়ার মাধ্যমে ভবনের আয়ু বাড়ানো হয়। সাধারণত ভবনের মূল কাঠামোতে বড় ধরনের সমস্যা না থাকলেই এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
ভূমিকম্প–পরবর্তী পরিস্থিতিতে গত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবন পরীক্ষা করে ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে ২৩ নভেম্বর একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিজ্ঞান ভবনের দক্ষিণ–পূর্ব, দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিম অংশ এবং অবকাশ ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ বেশি। তাই রেট্রোফিটিং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এসব ভবন ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
কমিটি গত বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া তাদের প্রতিবেদনে সাতটি সুপারিশ করেছে। সেগুলো হলো ক্লাস বা অফিস সময়ে সব সিঁড়ি ও কলাপসিবল গেট উন্মুক্ত রাখা; ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—এই দুই ভাগে ভাগ করে রেট্রোফিটিং করা; স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে অতি ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোর সংস্কারকাজ তাৎক্ষণিকভাবে শুরু করা; দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর ‘বিস্তারিত প্রকৌশল মূল্যায়ন (ডিইএ)’ করানো।
সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে ইতিমধ্যে ডিইএ সম্পন্ন হওয়া বিজ্ঞান ভবনের রেট্রোফিটিংয়ের জন্য প্রস্তাব প্রেরণ করা; ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে নতুন করে ফলস সিলিং করার অনুমতি না দেওয়া এবং পুরোনো ফলস সিলিংগুলোর ওপরে কোনো ফাটল বা ঝুঁকিপূর্ণ অংশ থাকলে তা পরীক্ষা করে রেট্রোফিটিংয়ের ব্যবস্থা করা।
কমিটির প্রতিবেদনে বিজ্ঞান ভবন ও অবকাশ ভবন ছাড়া সামাজিক বিজ্ঞান ভবন-১, ভাষাশহীদ রফিক ভবন, আইইআর ইনস্টিটিউট ভবন এবং পাঁচতলা কলাভবনকে তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে সেগুলোকেও সংস্কারের আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ঝুঁকি মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক মল্লিক আকরাম হোসেন আর সদস্যসচিব ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী। আট সদস্যের এই কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ইশতিয়াক আহমেদ।
কমিটির সদস্যসচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে প্রতিটি ভবনে সরেজমিনে কাজ করে এসব সুপারিশ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে আরও একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হচ্ছে, যাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিস্তারিত প্রকৌশল মূল্যায়ন করবে।’