বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষনের অভিযোগ নিয়ে থানায় অভিনেত্রী
Published: 5th, May 2025 GMT
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অভিনেত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বলিউড অভিনেতা ও উপস্থাপক এজাজ খানের বিরুদ্ধে। একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন ওই অভিনেত্রী।
৩০ বছর বয়সী ওই অভিনেত্রী জানান, পরিচিত হওয়ার পর এজাজ তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন এবং পরবর্তীতে এবাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। কিন্তু বিয়ের কথা তুলতেই এজাজ পিছিয়ে যান। গত ২৫ মার্চ এজাজ খান তার বাসায় যান। সেই সময় তিনি একা ছিলেন। এই সুযোগে তাকে জোর করে ধর্ষণ করেন এজাজ।
সম্প্রতি বিতর্কিত শো ‘হাউস অ্যারেস্ট’ ঘিরে যখন বিতর্ক তুঙ্গে, ঠিক তখনই এই নতুন অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বলিউড অঙ্গনে।
পুলিশ জানায়, ওই নারীকে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এজাজ খান বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এটনায় অভিনেত্রী মুম্বাইয়ের চারকোপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভারতের দণ্ডবিধির ৬৪, ৬৪ (২)(এম), ৬৯ এবং ৭৪ ধারায় এজাজ খানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালে মাদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে তিনি দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন। ২০২৩ সালে জামিনে মুক্তি পেলেও বিতর্ক থেকে রেহাই মেলেনি তার।
সম্প্রতি উল্লু অ্যাপে প্রচারিত তার সঞ্চালিত রিয়েলিটি শো ‘হাউস অ্যারেস্ট’ ঘিরেও ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই শো-তে যৌনতায় ভরপুর কনটেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে, যেখানে প্রতিযোগী জুটিদের নানা ধরনের ‘সেক্স পজিশন’ প্রদর্শন করতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এমনকি শিব সেনা ও বজরং দলের পক্ষ থেকেও এজাজের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
অবশ্য অভিযোগের প্রেক্ষিতে এজাজ খান এখনো পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘তুমি কি মুসলিম’ বলেই নিউইয়র্কের সাবওয়েতে নারীর ওপর হামলা
নিউইয়র্ক নগরের সাবওয়েতে ৫৫ বছর বয়সী নারী হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ওই নারী বলেন, ‘তুমি কি মুসলিম’ প্রশ্ন করার পরই তাঁকে মারধর করেছেন হামলাকারী।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউএবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সংবাদমাধ্যমটি ওই নারীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছে।
গত বুধবার ভোরে নিউইয়র্ক নগরের কুইন্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই নারী যখন সাবওয়েতে ট্রেনে উঠছিলেন, তখন ৩৪ বছর বয়সী নাভেদ দুরানি নামের ওই হামলাকারী তাঁর খুব কাছাকাছি চলে আসেন।
ওই নারী বলেন, ‘তিনি (হামলাকারী) আমাকে বললেন, তুমি কোথা থেকে এসেছ? তুমি কি মুসলিম?’
হামলার শিকার নারী বলেন, ‘আমি বললাম, হ্যাঁ। তখনই ওই ব্যক্তি আমাকে লাথি–ঘুষি মারতে শুরু করেন, সবদিক থেকে আঘাত করেন।’
ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেনের দরজা বন্ধ হওয়ার পরপরই হামলা শুরু হয়। পরবর্তী স্টেশনে যাওয়া পর্যন্ত হামলা চলে। পরের স্টেশনে ট্রেন থামার পর নাভেদ দুরানি পালিয়ে যান।
ওই নারী বলেন, ‘আমি শুধু বলছিলাম, থামুন থামুন। কিন্তু হামলাকারী থামেননি। আমি বুঝতেই পারিনি, কী হচ্ছে।’
নিউইয়র্ক নগর পুলিশ বিভাগের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নাভেদ দুরানি মুখ ঢেকে রেখেছিলেন। তিনি ওই নারীর মুখ, মাথা ও ঘাড়ে ঘুষি ও লাথি মেরেছেন।
ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ জানিয়েছে, দুরানি ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি মুসলিম কি না। পরে তাঁকে মারধর করে পালিয়ে যান। দুজন নারী যাত্রী ও সাবওয়ে কন্ডাক্টরের সহায়তায় পুলিশ দুরানিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে।
নিউইয়র্ক নগর পুলিশ বিভাগ ইনডিপেনডেন্টকে জানিয়েছে, ঘৃণা ছড়ানোর অপরাধ ও আক্রমণের অভিযোগে দুরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডব্লিউএবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, আক্রান্ত নারী মাথায় চোট পেয়েছেন। হামলায় তাঁর নাক ভেঙে গেছে এবং তিনি সারা শরীরে আঘাত পেয়েছেন।
ওই নারী বলেন, ‘এই মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আগে কখনো এমন কিছু ঘটেনি। আমি কীভাবে তাঁর (হামলাকারীর) মুখ ভুলতে পারি?’
ওই নারীর চিকিৎসা, মানসিক সহায়তা, বাসাভাড়া ও খাবার কেনার মতো জরুরি খরচ মেটাতে ‘গো ফান্ড মি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তা নিজেকে ওই নারীর সন্তান উল্লেখ করে পেজে লিখেছেন, ‘তিনি (ওই নারী) শুধু নিজের ও তাঁর পরিবারের দুজন সদস্যের ভরণপোষণের চেষ্টা করছিলেন। একজন ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তিনি মুসলিম কি না। তিনি শান্তভাবে ‘‘হ্যাঁ’’ বলার পরপরই লোকটি আচমকা তাঁকে হিংস্রভাবে আঘাত করেন।’
ওই নারী ‘শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করছেন’ বলে জানিয়েছেন তহবিল সংগ্রহকারী। তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হামলাকারীকে আটক করা হলেও ‘শুধু ন্যায়বিচার পেলেই মানসিক আঘাত দূর হয় না, চিকিৎসার খরচও কমানো সম্ভব নয়।’
তহবিল সংগ্রাহক আরও বলেন, ‘জরুরি চিকিৎসা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো, ওষুধ এবং পরীক্ষা–নিরীক্ষার খরচ অনেক বেশি। তার চেয়েও খারাপ কথা হলো, মাথায় আঘাতের লক্ষণ এখনো যাচ্ছে না। এর ফলে তিনি কাজে ফিরতে পারছেন না। এ জন্য নিজের ও পরিবারের সদস্যদের খরচ জোগাড় করতে পারছেন না। বাসাভাড়া, বিদ্যুৎ ও ন্যূনতম জীবনযাত্রার খরচ মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছেন।’