lযখন আপনি নবীন লেখক
ll আমার নানারা ছিলেন সুফিবাদী পীর। তার মধ্যে দেওবন্দে পড়াশোনা করা অনেকেই। মসজিদ-মাদ্রাসা এগুলো নিয়েই থাকতেন। এক নানার ছিল পানি পড়া, ফুঁয়ের ব্যবসা। আমরা ডাকতাম বলরামপুরের ছোট নানা। সকাল বেলা তার বসার ঘরের সামনে দূরদূরান্ত থেকে আসা অসুখী ও দুঃখী মানুষ লাইন ধরে দাঁড়াতেন। তাঁকে আমার অলৌকিক মানুষ মনে হতো। তিনি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। আমার কবিতায় সুফি ও মরমিবাদের যে তীব্র প্রভাব, সিলেটে জন্মগ্রহণ করা আর এই মানুষদের প্রভাব এবং আমার পূর্বপুরুষ ফকির আযমত শাহের উত্তরাধিকার বহন করা তার কারণ। আরেক নানা সারাদিন ঘরে বসে থাকতেন। বিচার আদালত করতেন। তাঁকে ডাকতাম নওয়াববাড়ির নানা। স্কুলে ছিলেন সংস্কৃতির পণ্ডিত মানবেন্দ্র স্যার। আমার লেখালেখির শুরুর দিকে তারাই লেখার পাঠক ছিলেন। খুদে কবি হিসেবে খানিকটা পরিচিতি পাওয়ার পর চাচাতো-ফুফাতো বোনরাও আমার কবিতার পাঠক, প্রেরণাদাত্রী হয়ে যান।
lপ্রথম প্রকাশিত বই ঘিরে স্মৃতি
ll ‘কাঠ চেরাইয়ের শব্দ’ প্রকাশিত হয়েছিল বাংলা একাডেমি তরুণ লেখক প্রকল্প থেকে। রিভিউয়ার ছিলেন আসাদ চৌধুরী। রফিক আজাদ, মুহম্মদ নূরুল হুদা– তারা পাণ্ডুলিপি তৈরির প্রতিটি পর্যায়ে ছিলেন। পাণ্ডুলিপিটি প্রকাশের আগে একদিন এক আনুষ্ঠানিক সেশনে ৩০-৩২ জন কাব্যবোদ্ধা কবিতাগুলোর একাংশের একক পাঠ শুনেছিলেন। তাদের চোখমুখের মুগ্ধতা আমার এখনও মনে আছে। বন্ধুরা তো আগে-পরে শুনেছেই। প্রকাশের পর বন্ধু কবির হুমায়ুন আজকের কাগজে ফিচার স্টোরি করেছিল। ড.
lপ্রিয় লেখক যারা এবং যে কারণে তারা প্রিয়
ll কবিদের মধ্যে বিদ্যাপতি, রামপ্রসাদ, কবির, লালন, বুল্লেশাহ্, মীর তকী, মীরা বাঈ, জীবনানন্দ, শক্তি, জয়, সিকদার আমিনুল হক। গদ্য লেখকদের মধ্যে বিদ্যাসাগর, কেরী, বঙ্কিম আর কমলকুমার। লেখায় আত্মমগ্নতা, অধ্যাত্ম চেতনা, গহনচারিতা আমাকে আকৃষ্ট করে। আর গদ্যের কাব্যগুণ। কোনো লেখা বা কাজ যদি ঘোর তৈরি করতে না পারে, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বারবার তার জগতে টেনে না আনতে পারে, বুঁদ করে রাখতে না পারে, তবে সে কাজ আমার প্রিয় হয় না। যুক্তি বা সত্যের চাইতে অধিসত্য, ইনটুইশান আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিপন্ন বিস্ময়।
lএখন যা লিখছি, পড়ছি
ll লিখছি কবিতা। ভারতবর্ষের দাঙ্গা, মানুষ হত্যার ইতিহাস নিয়ে ‘দাঙ্গার গাথা’। এর গরুকেন্দ্রিক মানুষ হত্যার প্রথম অংশ ইতঃপূর্বে সমকালের ঈদ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
ll গৌতমের বাণী– ‘বাসনা দুঃখের কারণ।’ যদিও নারীবাসনা একজন কবির পক্ষে ত্যাগ করা কঠিন।
গ্রন্থনা: ফরিদুল ইসলাম নির্জন
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্সপেক্টর-সুপারিনটেনডেন্ট পদবি ফেরাতে পেশাগত প্রোফাইল পরিবর্তন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টম ও ভ্যাটের নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা তাদের পুরোনো পদবি ইন্সপেক্টর-সুপারিনটেনডেন্ট পদ পুনর্বহালের দাবিতে সোচ্ছার হয়েছেন। সম্প্রতি পদবি ফিরে পেতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়ার পর এবার নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন পেশাগত প্রোফাইল পরিবর্তন করেছেন তারা। বৃহস্পতিবার এসব কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাকাএভ) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে রাজস্ব কর্মকর্তাদের সমমানের পদবি হলো সুপারিনটেনডেন্ট এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের সমমানের পদবি হলো ইন্সপেক্টর। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০-১১ অর্থবছরে তাদের পুরোনো ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদ পরিবর্তন করে যথাক্রমে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তা পদবি দেওয়া হয়। পুরোনো এই পদ ফিরে পেতে এসব কর্মকর্তারা দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছে। বর্তমানে কাস্টম-ভ্যাটের প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি কর্মকর্তা এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।
এর আগে বাকাএভ গত ৪ মে পুরোনো এ পদ পুনর্বহালের দাবিতে তারা এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বরাবর একটি চিঠি দিয়েছেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্তে কাস্টমস বিভাগের ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্টদের সঙ্গে কাজের সমন্বয়ে এমনকি সমুদ্রগামী জাহাজে কিংবা বিমানবন্দরে কার্যক্রমেও এনবিআরের রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা পরিচয় দিতে গিয়ে ‘পরিচয়সংকট’ বা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস অনুভব করেন। কারণ, বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন বা বিমানের পাইলট সবার কাছে ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবিতে পরিচিত।
চিঠিতে বাকাএভের নেতারা বলেন, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবি কাস্টমসের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের গৌরব ও ঐতিহ্য বহন করে। এটি আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। তাই ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবি পুনর্বহাল করতে হবে।