Samakal:
2025-11-06@19:54:38 GMT

বড় পতনের পরদিন উত্থান

Published: 8th, May 2025 GMT

বড় পতনের পরদিন উত্থান

আগের দিনের বড় দরপতনের পর গতকাল একই ধারায় শেয়ারাবাজারে উত্থান হয়েছে। বুধবার দেড়শ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ হারানোর পরদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ১০০ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ ফিরে পেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। আগের দিনের পতন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থার কারণে আতঙ্ক থেকে হতে পারে বলে বাজারসংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেছিলেন। 
বুধবারের বড় দর পতনের পর গতকাল দিনের লেনদেনের শুরু হয় বিপরীত ধারায়। সকাল ১০টায় দিনের লেনদেন শুরুর মূহূর্তে প্রি-মার্কেট লেনদেনে ভর করে ৭ পয়েন্ট বেড়ে ডিএসইএক্স সূচক ৪৮০৯ পয়েন্টে ওঠে। প্রথম আধা ঘণ্টায় আরও ৭০ পয়েন্ট বাড়ে ৪৮৮০ পয়েন্ট ছাড়ায়। এর পর উত্থান কিছুটা বিঘ্নিত হলেও ১৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়নি। পরে লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত শেয়ারদর ও সূচক বেড়েছে। সোয়া ২টায় আগের দিনের থেকে ১০৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪৯০৯ পয়েন্ট ছাড়ায়। শেষ পর্যন্ত ১০০ পয়েন্ট বেড়ে সূচক দাঁড়ায় ৪৯০২ পয়েন্টে। 
ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৫৬টির কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩৯টির, কমেছে ১০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৭টির। ৫ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত দর বেড়েছে ১৭০ শেয়ারের। এ ছাড়া তালিকাভুক্ত ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে কেনাবেচা হওয়া ৩৬টির সবগুলোর গড়ে সাড়ে ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইতেও লেনদেন চিত্র ছিল প্রায় একই রকম। 

আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রির পর দ্রুত বিনিয়োগকারীদের বোধোদয় হওয়াকে আপাতত স্বস্তি হিসেবে দেখছেন ব্রোকারেজ হাউস সংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, না বুঝে আতঙ্কিত হলে শুধু নিজের সাময়িক ক্ষতি হয় না, এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদেও ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান, বুধবার অল্প কিছু বিনিয়োগকারীর অল্প কিছু শেয়ার কম দামে বিক্রি করাতেই দর পতনের ধারা গভীর হয়। কেন শেয়ার দর হারাচ্ছে, তা বুঝতে না পেরে অনেকে বিনিয়োগে বিরত থাকেন। যারা শেয়ার কেনার আদেশ দিয়েছিলেন, তারাও ক্রয় আদেশ তুলে নেন। এতে দর পতন ত্বরান্বিত হয়েছিল। গতকাল ছিল এর বিপরীত অবস্থা।

যমুনা ব্যাংক সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, কারণবিহীন ইস্যুতে অস্থিরতার ঘটনা দেশের শেয়ারবাজারে নতুন কিছু নয়। বুধবারের দর পতনের পর বৃহস্পতিবারের দর বৃদ্ধির কোনো ব্যাখ্যা করা যায় না। কেউ একজন অযথা আতঙ্কিত হয়ে কিছু শেয়ার কম দামে বিক্রি করলে তার ক্ষতি হয়তো অল্পই থাকে; কিন্তু বাকিদের ক্ষতি যোগ করলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় বিশাল। এর ফলে দীর্ঘ মেয়াদে শেয়ারবাজারেরও ক্ষতি হয়।

গতকালের খাতওয়ারি লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা এবং বস্ত্র খাতের গড় শেয়ারদর ৩ শতাংশের ওপর বেড়েছে। বড় খাতের ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ২ শতাংশ। অপেক্ষাকৃত ছোট খাতের মধ্যে সেবা ও নির্মাণ, কাগজ ও ছাপাখানা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সিরামিক খাতের দর ৪ শতাংশের ওপর বেড়েছে। শেয়ারদর কিছুটা পুনরুদ্ধারের দিনে কেনাবেচা হয়েছে ৩৬৬ কোটি টাকার শেয়ার, যা বুধবারের তুলনায় দেড়শ কোটি টাকা কম। একক কোম্পানি হিসেবে বিচ্‌ হ্যাচারির সর্বোচ্চ ২৩ কোটি টাকার এবং একক খাত হিসেবে ব্যাংক খাতের সর্বোচ্চ ৮৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র পতন র পর শ য় রদর দর পতন ল নদ ন গতক ল র পতন আতঙ ক

এছাড়াও পড়ুন:

সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে, বাজারে উদ্বেগ

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আবার ৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলকের নিচে নেমে এসেছে। এতে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তালিকাভুক্ত পাঁচটি ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণা করায় তা নিয়েও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে।

শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষিত পাঁচ ব্যাংকের লেনদেনের এখন কী হবে, সেই সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত করতে পারেনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সব মিলিয়ে নতুন করে বিনিয়োগকারীরা এখন আতঙ্কগ্রস্ত। একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা তালিকাভুক্ত পাঁচ ব্যাংক হলো এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।

টানা কয়েক দিনের দরপতনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ বুধবার ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৮৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। এর আগে সর্বশেষ গত ৮ জুলাই ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৯৮২ পয়েন্টে নেমেছিল।

গত ৫ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৪৪৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ এক মাসে তা ৪৬১ পয়েন্ট বা সাড়ে ৮ শতাংশ কমেছে। ৫ হাজার পয়েন্টকে একটি মনস্তাত্ত্বিক সীমা মনে করা হয়। এটি অতিক্রম করলে বাজারে যেমন আশাবাদ তৈরি হয়, তেমনি এর নিচে নামলে হতাশা দেখা দেয়। বিশেষ করে যাঁরা মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা শেয়ারের দরপতনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কারণ, শেয়ারের দাম নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ সমন্বয়ের জন্য শেয়ার বিক্রি করে দেয়। এটাকে বলা হয়, জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেল।

ঢাকার বাজারে গতকাল ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দরপতনেই মূলত সূচকের বড় পতন ত্বরান্বিত করে। লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইর সূচকে পতন এদিন বেশি পতন হয়েছে আল-আরাফাহ্‌ ইসলামী ব্যাংক, ওয়ালটন, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ ও পাওয়ার গ্রিডের শেয়ারের দাম কমায়।

বিএসইসির উচিত ছিল যখন ব্যাংকগুলো একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন শেয়ারবাজারে এগুলোর লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা; কিন্তু সেটি করা হয়নি। যার ফলে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব অন্যান্য শেয়ারের ওপর পড়ছেসাইফুল ইসলাম, সভাপতি, ডিবিএ

এদিকে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা তালিকাভুক্ত এক্সিম, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের শেয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক আজ এসব ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য বলে জানিয়েছে। ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ নিয়ে বুধবার বিএসইসির শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠক হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছে, এসব ব্যাংকের শেয়ারধারীরা কোনো অর্থ পাবেন না।

এই ঘোষণার পর ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেন কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর শেয়ার লেনদেনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য বিএসইসি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত জানতে চাইলেও মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেনি। বিএসইসিও ব্যাংকগুলোর শেয়ারের লেনদেনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে এসব ব্যাংকের শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির মুখপাত্র মো. আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন শুনেছি ও দেখেছি। তবে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের মূল্য শূন্য ঘোষণার বিষয়ে আমাদের দাপ্তরিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। দাপ্তরিক চিঠি পেলে এ বিষয়ে বিএসইসি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।’

তবে শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, ব্যাংক পাঁচটির শেয়ারের বিষয়ে আরও আগেই বিএসইসির সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল। সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে বরং সংস্থাটি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি ক্ষতির মুখে ফেলছে, যার প্রভাব পড়ছে পুরো বাজারে।

এ বিষয়ে ব্রোকারেজ হাউস মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিএসইসির উচিত ছিল যখন ব্যাংকগুলো একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তখন শেয়ারবাজারে এগুলোর লেনদেন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা; কিন্তু সেটি করা হয়নি। ফলে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের ক্রমাগত দরপতন হচ্ছে, যার প্রভাব অন্যান্য শেয়ারের ওপর পড়ছে। এখন ব্যাংকগুলোর বিষয়ে বিএসইসির দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা ৫ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের পতন
  • টানা ৫ কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে সূচকের পতন
  • সূচক আবার ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে, বাজারে উদ্বেগ
  • ধারাবাহিক পতন: ৪ মাস আগের অবস্থানে ডিএসইর সূচক
  • পুঁজিবাজারে সূচকের পতন, কমেছে লেনদেন