চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের লক্ষ্যে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে। শনিবার এ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন চীনের ভাইস প্রিমিয়ার হে লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট।
দীর্ঘ উত্তেজনার পর এ আলোচনা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সম্ভাব্য ইতিবাচক এক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আলোচনায় বড় অগ্রগতির আশা না থাকলেও উভয় পক্ষই এটিকে ইতিবাচক সূচনা হিসেবে দেখছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার দাবি করেন, চীন আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও বেইজিং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রই এই আলোচনার অনুরোধ করেছে। চীন চাইছে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক কমাক এবং পণ্য চাহিদার বিষয় স্পষ্ট করুক।
অন্যদিকে ওয়াশিংটন চায় বেইজিং তাদের ‘অর্থনৈতিক মডেল’ পরিবর্তন করে আরও ভোক্তাকেন্দ্রিক অর্থনীতির পথে হাঁটুক। বিবিসি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে গিয়েছিলেন, আর ফিরলেন না রাফিউল, রেলিং ভেঙে পড়ে নিহত
মা নুসরাত বেগমের সঙ্গে মহিষের মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলিতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে।
এই ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন রাফিউল ও তাঁর মা নুসরাত। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। রাফিউলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাঁর মা নুসরাত হাসপাতলে চিকিৎসাধীন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
বংশালের কসাইটুলির যে ভবনটির ছাদের রেলিং ভেঙে পড়েছে, সেটিতে থাকেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাওনাক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভূমিকম্পে পুরো বিল্ডিং দুলছিল। ওপর থেকে কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে তিনি নিচে যান। দেখেন, নিচের গলিতে একজন শিশুসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের কয়েকজন ধরে দ্রুত রিকশা ও ভ্যান করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে নিচের অনেক লোক জড়ো হয়ে গেছেন।
মাংসের দোকানটিতে শুক্রবার মহিষ জবাই করে বিক্রি করা হয়। এই মাংস কিনতে ভবনটির নিচে অনেকে ভিড় করেছিলেন।
দুপুর একটার দিকে দেখা যায়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে কান্না করছেন রাফিউলের সহপাঠী ইমতিয়াজ উদ্দিন নাদিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি, রাফিউল তাঁর মায়ের সাথে বাজার করতে গিয়েছিল। সকালে ফেসবুক গ্রুপে দেখলাম। রাফিউলের একটা ছবি দেওয়া। মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে। এখানে এসে দেখি, সে আর নেই। ওর মা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।’
রাফিউলের আরেক বন্ধু অপু প্রথম আলোকে বলেন, ‘সে (রাফিউল) খুবই শান্তশিষ্ট একটা ছেলে ছিল। আমাদের সঙ্গে এক সাথে ক্লাস করেছে। তাঁর মারা যাওয়ার ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মানতে পারছি। কী বলব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’
জানা গেছে, রাফিউলের গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তাঁরা দুই ভাই-বোন। বাবা চাকরি করেন দিনাজপুরে। হলে সিট পেলেও মা ও বোনের সঙ্গে বংশালের বাসায় থাকতেন তিনি।
ভূমিকম্পে হতাহতের খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান রাফিউলের একমাত্র বোন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজহারুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ২০ জনের মতো আহত ব্যক্তি এখানে আসেন। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
মিটফোর্ড হসপিটালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন নিহত রাফিউলের মা নুসরাত। দায়িত্বরত চিকিৎসক লুৎফুন নেসা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নুসরাতের সিটি স্ক্যান করেছি। তেমন বড় কোনো ইনজুরি আমরা পাইনি। তিনি মোটামুটি শঙ্কামুক্ত বলা যায়।’
নিহত বাকি দুজন হলেন আব্দুর রহিম (৪৮) ও তাঁর ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২)। তাঁরা রাজধানীর সুরিটোলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।