শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বে উত্তাল রাজশাহী নার্সিং কলেজ
Published: 13th, May 2025 GMT
রাজশাহী নার্সিং কলেজে হামলা-পাল্টা হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ নানা দাবিতে আলাদা ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন বিএসসি ও ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের শিক্ষার্থীরা। সেই দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নার্সিং কলেজের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সভায় যান ডিপ্লোমা ইন নার্সিংয়ের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন। সেখানে বিএসসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা অশোভন আচরণ করেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হলে শুরু হয় উত্তেজনা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা কলেজের বাইরে এসে গেটে অবস্থান নেন। বিএসসি শিক্ষার্থীরা গেট বন্ধ করে ভেতরে অবস্থান নেয়। এ সময় ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা গেট ভাঙার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। তাদের উপস্থিতিতেই বিএসসির এক নারী শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ডিপ্লোমার এক শিক্ষার্থী। এ নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই ভাঙা হয় গেট। শুরু হয় দুই পক্ষের ইট ছোড়াছুড়ি। হামলা-পাল্টা হামলা, মারধরের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়।
ডিপ্লোমা নার্সিং শিক্ষার্থী সুমন বলেন, বিএসসির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে যাই। তারা হামলা করে। আমরা বের হওয়ার চেষ্টা করলে তারা বাধা দিলে হাতাহাতি হয়। আমরা কাউকে মারধর করিনি।
বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থী মারজিয়া তাইয়েবা বলেন, ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা আমাদের একজনের গলা চেপে ধরেছিল। ওদের ভয়ে আমাদের বন্ধু বাথরুমে লুকিয়ে ছিল। বিএসসি নার্সিং শিক্ষার্থী হওয়া কি অপরাধ? আমরা নিরাপত্তা চাই।
রাজশাহী নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মতিয়ারা খাতুন বলেন, দুই পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা.
নগর পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার হাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঊর্ধ্বতনরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসস
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে সাময়িক বরখাস্ত করলেন আদালত, কারণ কী
ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের ঘটনায় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর পদত্যাগের জোর দাবি উঠেছে। তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী ব্যাংককে।
গত মে মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিতর্কিত এক সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের সঙ্গে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ফোনের আলোচনা ফাঁস হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের নতুন ও সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী কে এই পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা১৭ আগস্ট ২০২৪ফোনে ওই আলোচনায় পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ বলে ডেকে তাঁর প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ করেন বলে জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়। এরপরই পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামেন মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে পিটিশন দায়ের করা হয়।
সাংবিধানিক আদালতে আজ মঙ্গলবার ভোটাভুটি হয়। আদালত ৭-২ ভোটে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত দেশের ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্ব পালন করবেন।
থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললে চলে। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুনথাই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ২৮ জুন ২০২৫সাংবিধানিক আদালতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন পদচ্যুত হলে ২০২৪ সালের আগস্টে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। থাইল্যান্ডে তিনিই হচ্ছেন সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৭ বছর। পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ফিউ থাই পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট মেয়ে।
পেতংতার্ন ব্যাংককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। উং ইং ডাকনামেও পরিচিত পেতংতার্ন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন ফিউ থাই পার্টির ইনক্লুশন অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির প্রধান হন তিনি।
আরও পড়ুনপেতংতার্ন ৩৭ বছরে, কম বয়সে আরও যাঁরা দেশ চালানোর ভার নিয়েছিলেন২০ আগস্ট ২০২৪২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় সন্তানের মা হন পেতংতার্ন। নির্বাচনে তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। পেতংতার্ন থাকসিন পরিবার থেকে সরকারের শীর্ষ পদে আসা তৃতীয় ব্যক্তি। বাবা থাকসিনের পাশাপাশি পেতংতার্নের ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রাও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের ২১৭ হাতব্যাগ, ৫০ লাখ ডলারের ঘড়ি০৩ জানুয়ারি ২০২৫