কর্নেল সোফিয়াকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ‘বোন’ আখ্যা দিয়ে বিপাকে মধ্যপ্রদেশের বিজেপিদলীয় মন্ত্রী, মুখ বন্ধ মোদির
Published: 15th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অংশ নেওয়া ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে কটূক্তি করে বিপাকে পড়েছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী বিজয় শাহ। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি অতুল শ্রীধরণ ও বিচারপতি অনুরাধা শুক্লা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাজ্যের এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পরেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব এক্সে জানান, উপজাতিকল্যাণমন্ত্রী বিজয় শাহর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ওই নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন বিজয় শাহ। তাঁর আইনজীবীর আবেদন, মন্ত্রী ক্ষমা চেয়েছেন। তাঁকে ভুল বোঝা হয়েছে। গণমাধ্যমে তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি এ জি মাসিহ স্থগিতাদেশ না দিয়ে বলেন, আজ তাঁরা আবেদন শুনবেন। তার আগে স্থগিতাদেশের জন্য আবেদনকারী হাইকোর্টে যেতে পারেন।
প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘সাংবিধানিক পদমর্যাদার ব্যক্তিকে দায়িত্বশীল হতে হয়। তাঁর জানা দরকার কী বলছেন, কখন বলছেন। বিশেষ করে দেশ যখন এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে।’
দলমত–নির্বিশেষে সবাই বিজয় শাহর সমালোচনায় মুখর। বিরোধী কংগ্রেস তো বটেই, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের মধ্য থেকেও তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবি উঠেছে।
হাইকোর্টের দুই বিচারপতি গতকাল পুলিশকে এফআইআর দাখিলের নির্দেশ দিয়ে বলেন, কর্নেল সোফিয়াকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বিজয় শাহ যা বলেছেন, তা ‘নর্দমার ভাষা, ভয়ংকর ও ক্যানসার তুল্য’। বিচারপতিরা বলেন, মন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা বৃদ্ধি, হানাহানি ও সম্প্রীতি নষ্টে মানুষকে প্ররোচিত করবে।
পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী অপারেশন সিঁদুর শুরু করার পর প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিয়মিত ব্রিফিং করা হতো। সেই ব্রিফিংয়ে অংশ নিতেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। তাঁদের সঙ্গে থাকতেন পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং মধ্য প্রদেশের বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী বিজয় শাহ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ন ল স ফ য় ব জয় শ হ ব চ রপত মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
এলপিজি গ্যাস ছেড়ে বিক্ষোভ, অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন শত শত শ্রমিক
গ্যাস বটলিং প্ল্যান্টের এলপিজি গ্যাস ছেড়ে শ্রমিক বিক্ষোভ! কাঁধে সিলিন্ডার তুলে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক সিলিন্ডার গ্যাস। গ্যাসের ধোঁয়ায় ঢেকেছে গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট। ঢেকেছে আশপাশের এলাকা। প্রয়োজন শুধু একটু আগুনের ফুলকি! ভয়ংকর!
ভয়ংকর বললেও কম বলা হবে এই ঘটনাকে। শ্রমিকদের উচ্ছৃঙ্খল বিক্ষোভে এভাবেই প্রাণহানির সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল শত শত মানুষের। ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার অদূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বজবজের আইওসি বটলিং প্ল্যান্টের।
প্ল্যান্টের গাড়ির খালাসি ও চালকরা গত শনিবার থেকে দুই চালককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও লোডিং-আনলোডিংয়ে বকেয়া টাকা পরিশোধ-সহ বেশ কিছু দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন ও ধর্মঘট করছিলেন। চালকদের ধর্মঘটের জেরে প্ল্যান্ট থেকে গাড়ি না বেরোনোয় অসুবিধায় পড়ছিলেন গ্রাহকরা। মঙ্গলবার (১ জুলাই) সন্ধ্যায় প্ল্যান্টের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত ইউনিয়নের এক প্রতিনিধি দল ওই চালক এবং খালাসিদের সঙ্গে আলোচনা করে ধর্মঘট তুলে নিতে বলে। কিন্তু তাতে চালক ও খালাসিরা রাজি না হওয়ায় দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়।
আরো পড়ুন:
হাসিতে মিলিয়ে গেল বাঘের আতঙ্ক
তামিলনাড়ুতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৬
অভিযোগ ওই হাতাহাতি চলাকালীন একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, কাঁধে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের সিলিন্ডার নিয়ে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা এলপিজি ছেড়ে দিচ্ছেন। যার জেরে মুহূর্তেই গ্যাসের ধোঁয়ায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যায় গোটা প্ল্যান্ট ও সংলগ্ন এলাকা। আর এমন পরিস্থিতিতে সামান্য আগুনের সংস্পর্শে ঘটতে পারত বড়সড় দুর্ঘটনা। মুহূর্তে ঘটতে পারত বড়সড় গ্যাস বোমা বিস্ফোরণ। শ্রমিকদের উচ্ছৃঙ্খল বিক্ষোভে মুহূর্তে প্রাণ হারাতে পারত শতাধিক শ্রমিক।
এদিন পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে বজবজ থানার বিশাল বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মহেশতলা থানা থেকেও পরে পুলিশ বাহিনী আসে। নামানো হয় র্যাফও। এলাকা এখনও থমথমে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ