ছেলেদের সঙ্গে ফোনালাপ ও ব্যক্তিগত চিকিৎসককে দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুমতি পেলেন ইমরান
Published: 15th, May 2025 GMT
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাঁর বিদেশে থাকা দুই ছেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ দিতে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার ইসলামাবাদের একটি বিশেষ আদালত আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষের আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেন।
গত মাসে ইসলামাবাদের বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ কারাবন্দী ইমরান খানের পক্ষে করা দুটি আবেদন অনুমোদন করেন। এসব আবেদনে বিদেশে অবস্থানরত ছেলেদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আদালত তখন এ সুবিধাগুলো দেওয়ার বিষয়ে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন।
কারা কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিল। গতকাল এ আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। পরে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
গত সোমবার ইসলামাবাদ আদালতে করা এক আবেদনে আদিয়ালা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করেন, গত ১০ জানুয়ারি ও ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতের দেওয়া আদেশগুলো ‘বন্দীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অবিচ্ছেদ্য সমান অধিকারের নীতির পরিপন্থী’। তাঁর যুক্তি হলো, ইমরানকে এ দুই বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের চেতনা এবং পাকিস্তানের কারা বিধিমালার পরিপন্থী হবে।
গতকাল আদালতের আদেশের কপি পেয়েছে ডন। এতে বলা হয়, জানুয়ারির ১০ ও ২৮ তারিখ এবং ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে দেওয়া আদেশগুলো সব প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করেই দেওয়া হয়েছে। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় কারা তত্ত্বাবধায়কের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
আদালতের দেওয়া তিনটি আদেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে কারা তত্ত্বাবধায়ককে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।
আদালতের আদেশের ঠিক এক দিন আগে ইমরান খানের দুই ছেলে ২৮ বছর বয়সী সুলেমান খান ও ২৬ বছর বয়সী কাসিম খান জনসমক্ষে উপস্থিত হন। তাঁরা তাঁদের বাবার কারাবন্দিত্বের বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুলেমান ও কাসিম বাবার মুক্তির দাবি জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের সীমিত সময়ের জন্য বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে সময়ে কথা বলতে দেওয়া হয়, সেটি উপযোগী সময় নয়। একবার ফোনকল মিস করলেই আবার কথা বলার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়। বাবার সঙ্গে দুই বা তিন মাস অন্তর একবার কথা বলার সুযোগ হয় বলে দাবি করেন তাঁরা।
আরও পড়ুনইমরান খানের ওপর গুলি চালানো নাভিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২৭ এপ্রিল ২০২৫ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী আছেন। বর্তমানে তিনি ১৯ কোটি পাউন্ড দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে আদিয়ালা কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন।
আরও পড়ুনইমরান খানের ত্রাতা হয়ে উঠতে পারে বিচার বিভাগ যেভাবে ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনইমরান খানসহ দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবি ২৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।