পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাঁর বিদেশে থাকা দুই ছেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ দিতে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গতকাল বুধবার ইসলামাবাদের একটি বিশেষ আদালত আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষের আবেদন খারিজ করে এ আদেশ দেন।

গত মাসে ইসলামাবাদের বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ কারাবন্দী ইমরান খানের পক্ষে করা দুটি আবেদন অনুমোদন করেন। এসব আবেদনে বিদেশে অবস্থানরত ছেলেদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। আদালত তখন এ সুবিধাগুলো দেওয়ার বিষয়ে আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়েছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিল। গতকাল এ আবেদনের বিষয়ে আদালতে শুনানি হয়। পরে আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।

গত সোমবার ইসলামাবাদ আদালতে করা এক আবেদনে আদিয়ালা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক দাবি করেন, গত ১০ জানুয়ারি ও ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতের দেওয়া আদেশগুলো ‘বন্দীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অবিচ্ছেদ্য সমান অধিকারের নীতির পরিপন্থী’। তাঁর যুক্তি হলো, ইমরানকে এ দুই বিশেষ সুবিধা দেওয়া সংবিধানের চেতনা এবং পাকিস্তানের কারা বিধিমালার পরিপন্থী হবে।

গতকাল আদালতের আদেশের কপি পেয়েছে ডন। এতে বলা হয়, জানুয়ারির ১০ ও ২৮ তারিখ এবং ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখে দেওয়া আদেশগুলো সব প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করেই দেওয়া হয়েছে। যথোপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় কারা তত্ত্বাবধায়কের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

আদালতের দেওয়া তিনটি আদেশ কঠোরভাবে মেনে চলতে কারা তত্ত্বাবধায়ককে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়েছে।

আদালতের আদেশের ঠিক এক দিন আগে ইমরান খানের দুই ছেলে ২৮ বছর বয়সী সুলেমান খান ও ২৬ বছর বয়সী কাসিম খান জনসমক্ষে উপস্থিত হন। তাঁরা তাঁদের বাবার কারাবন্দিত্বের বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সুলেমান ও কাসিম বাবার মুক্তির দাবি জানান। তাঁরা অভিযোগ করেন, তাঁদের সীমিত সময়ের জন্য বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ ছাড়া যে সময়ে কথা বলতে দেওয়া হয়, সেটি উপযোগী সময় নয়। একবার ফোনকল মিস করলেই আবার কথা বলার জন্য অনেক দিন অপেক্ষা করতে হয়। বাবার সঙ্গে দুই বা তিন মাস অন্তর একবার কথা বলার সুযোগ হয় বলে দাবি করেন তাঁরা।

আরও পড়ুনইমরান খানের ওপর গুলি চালানো নাভিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২৭ এপ্রিল ২০২৫

ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাবন্দী আছেন। বর্তমানে তিনি ১৯ কোটি পাউন্ড দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে আদিয়ালা কারাগারে সাজা ভোগ করছেন। এ ছাড়া ২০২৩ সালের ৯ মে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন।

আরও পড়ুনইমরান খানের ত্রাতা হয়ে উঠতে পারে বিচার বিভাগ যেভাবে ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনইমরান খানসহ দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবি ২৬ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন র

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন

কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় নিয়ে নারী চিকিৎসক ও তাঁর স্বামীকে মারধরের প্রতিবাদ ও জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন কুষ্টিয়ায় কর্মরত বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এতে উপস্থিত হয়ে সংহতি জানান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদের কয়েকজন শিক্ষকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

চিকিৎসকেরা জানান, দ্রুততম সময়ে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হোক। একই সঙ্গে জেলায় কর্মরত চিকিৎসকেরা যাতে নির্বিঘ্নে নিজেদের সেবা কার্যক্রম চালাতে পারেন, তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন।

আরও পড়ুনটেনেহিঁচড়ে রাস্তার ওপর মারধর : থানা থেকে বাড়ি ফিরলেন ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক ০৬ মে ২০২৫

বক্তারা জানান, ৫ মে সোমবার দুপুরে চিকিৎসক শারমিন সুলতানা (৩৭) শহরের কোর্টপাড়া র‍্যাব গলির লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ফোনকল পেয়ে রোগী দেখতে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর রিকশা থেকে নামামাত্রই ওত পেতে থাকা কয়েকজন নারী তাঁকে মারধর করেন। তাঁকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মেরে জখম করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর চিকিৎসক স্বামী মুহাম্মদ মাসুদ রানা ও গাড়িচালক ওই নারী চিকিৎসককে রক্ষা করতে গেলে তাঁদের মারধর করা হয়। এ ছাড়া ভুক্তভোগীদের সঙ্গে থাকা স্মার্টফোন, সোনার গয়না ও দেড় লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন তাঁরা। এ ঘটনার পরদিন ওই চিকিৎসকের স্বামী বাদী হয়ে তিন নারীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

চিকিৎসকদের ভাষ্য, চিকিৎসক দম্পতিকে মারধরের ঘটনায় তাঁরা আতঙ্কিত। মব সৃষ্টি করে মারধর কোনোভাবেই স্বাধীন দেশে কাম্য নয়। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত রাজপথে তাঁদের আন্দোলন চলবে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক নাসিমুল বারী বলেন, আসামিদের রিমান্ডে নিতে হবে। মব তৈরির পেছনে কোনো মাস্টারমাইন্ড আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে। এটি পরিকল্পিত একটি ঘটনা।

ওই মামলায় ইতিমধ্যে চার আসামিকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনকুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় তিন নারীর নামে মামলা০৬ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুষ্টিয়ায় টেনেহিঁচড়ে নারী চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন