‘চাঁদা’ না পেয়ে গরু নিয়ে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সেই নেতা বহিষ্কার
Published: 16th, May 2025 GMT
ঝালকাঠির রাজাপুরে ‘চাঁদার’ টাকা না পেয়ে এক গৃহবধূর গরু নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বেলাল খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার রাজাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রতন দেবনাথ ও সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা অবগত হই যে, আপনি মো.
এদিকে নার্গিস বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি ঝালকাঠি গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ঘটনা জানিয়ে দেওয়ায় সালিশ বৈঠকে উপস্থিত উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা নাজমুল হুদা ওরফে চমন আমাকে দুটি থাপ্পড় মারে। পরে একটি স্ট্যাম্পে ২৬ হাজার ৬০০ টাকা পাওনা আছে বলে আমাকে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করে আমার গরুটি ফেরত দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী এই টাকা নিয়েছে কিনা, তা আমি জানি না। সেই মিথ্যা অভিযোগ আমার ওপর চাপিয়ে নিজেদের অপরাধ চাপা দিয়ে আমার স্বাক্ষর নিয়ে উল্টো আমাকেই হুমকি দিচ্ছে এলাকা ছাড়া করার। এ বিষয়ে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছি।’
গৃহবধূ নার্গিসের স্বামী আবু বক্কর বলেন, ‘শাহজাহান ওমর এমপি থাকাকালীন কালাম চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আরেকটি গরু নিয়ে জবাই করে খেয়েছে। শাহজাহান ওমর এ ঘটনা শুনে ওই গরুর দাম দিয়েছিল। এরা দীর্ঘদিন ধরেই আমার ও আমার পরিবারের ওপর এভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে।’
রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে একটি সুষ্ঠু সমাধান হয়েছে, এটাই বড় বিষয়। তাছাড়া এরা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। আর নার্গিসের স্বামী ৫ আগস্টের পর থেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।’
রাজাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রতন দেবনাথ বলেন, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বেলাল হোসেন খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা দলের জন্য অসম্মান ও লজ্জাজনক।’
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে গৃহবধূ নার্গিস বেগমের গাভী নিয়ে যায় বেলাল খান। তিনি শুক্তাগড় ইউনিয়নের বামন খান গ্রামের আজিজ খানের ছেলে এবং একই ইউনিয়নের বাসিন্দা রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামের আজাদের অনুসারী। এরপর গৃহবধূ ১৫ মে ঘটনার বিচার পেতে ঝালকাঠি আদালত পাড়ায় ছুটে আসেন। এলাকায় নিরাপত্তা না থাকায় সাথে তিন বছর বয়সের শিশু ও গরুর বাচ্চাটি নিয়ে ঝালকাঠিতে আশ্রয় নেন। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে উঠে আসায় এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে ওইদিনই বেলাল ঝালকাঠিতে ছুটে এসে গৃহবধূকে গাভী ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজাপুর ফিরিয়ে নিয়ে যান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ লক ঠ ব এনপ র জ প র উপজ ল ঝ লক ঠ গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।
নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।