কক্সবাজারের মহেশখালীর প্ররিবেশ সংকটাপন্ন সোনাদিয়া দ্বীপে অভিযান চালিয়ে প্যারাবন ধ্বংস করে নির্মিত তিনটি চিংড়িঘেরের অস্থায়ী স্থাপনা ( ঘর-গুদাম) গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তবে কাটা হয়নি ঘেরের বাঁধ। দখলদারদের কাউকে আটকও করা হয়নি।

আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেদায়েত উল্যাহ প্যারাবন ধ্বংসের চিত্র দেখতে সোনাদিয়ায় যান। তাঁর সঙ্গে অভিযানে অংশ নেন পুলিশ, বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পরিদর্শনকালে প্যারাবনের গাছপালা ধ্বংস করে চিংড়িঘের নির্মাণ এবং আগুনে পুড়ে যাওয়া গাছপালা দেখতে পান দলের সদস্যরা। এ সময় তিনটি চিংড়িঘেরের অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর শেষ পৃষ্টায় ‘ প্যারাবন পুড়িয়ে নতুন চিংড়িঘের’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংকটাপন্ন সোনাদিয়া দ্বীপে নতুন করে অন্তত এক হাজার একরের প্যারাবনের কেওড়া ও বাইনগাছ ধ্বংস করে তৈরি হয়েছে সাতটি চিংড়িঘের। এবার প্রকাশ্যে পেট্রল ঢেলে গাছপালা পুড়িয়ে এসব ঘের করা হয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩ হাজার একরের বেশি প্যারাবন ধ্বংস করে সেখানে নির্মিত হয়েছিল ৩৭টি চিংড়িঘের। এসব ঘের উচ্ছেদ করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও গত ছয় মাসে তা কার্যকর হয়নি। এখন চিংড়িঘেরের সংখ্যা ৪৪।

সোনাদিয়া থেকে ফিরে আজ বিকেলে ইউএনও মো.

হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, সরেজমিন পরিদর্শনের সময় প্যারাবনের গাছ কেটে চিংড়িঘের নির্মাণের সত্যতা পাওয়া গেছে। এমনকি গতকাল বিকেলেও আগুন দিয়ে গাছপালা পোড়ানো হয়েছে। আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার চিহ্ন দেখা গেছে।

দখলদারদের কেউ ধরা না পড়ার কারণ জানতে চাইলে ইউএনও মো. হেদায়েত উল্যাহ বলেন, আজকের অভিযানে তিনটি চিংড়িঘেরের অস্থায়ীভাবে তৈরি বেশ কিছু স্থাপনা ( ঘর-গুদাম) গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযানে নামার পর ঘেরের দখলদার ও শ্রমিকেরা পালিয়ে পাশের প্যারাবনে আত্মগোপন করেন। এ কারণে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এ সময় গাছ কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। তা ছাড়া দুটি চিংড়িঘেরে পানি চলাচলের স্লুইসগেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগুন দিয়ে প্যারাবন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বন বিভাগকে বলা হয়েছে।

অভিযানে অংশ নেওয়া মহেশখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুমিত বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, সোনাদিয়া দ্বীপে কী পরিমাণ ধ্বংস যজ্ঞ চালানো হয়েছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। প্যারাবন দখল করে চারদিকে বেড়িবাঁধ দিয়ে চিংড়িঘের নির্মাণের পর ভেতরের গাছপালা রাতের আঁধারে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।

চিংড়িঘেরের জন্য পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্যারাবনের গাছপালা। পুড়ে গেছে ঘাসও। আজ দুপুরে কক্সবাজারের প্রতিবেশ সংকটাপন্ন দ্বীপ সোনাদিয়ায়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প য র বন র ধ ব স কর দখলদ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সহকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী শিক্ষকের দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে বিদ্যালয়ের বারান্দায় মারধর করা হয়।

অভিযোগকারী শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এস এম মজনুর রহমান। তিনি আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মণিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের উপজেলা প্রতিনিধি ও মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি।

মারধরের ঘটনায় মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল রাতে মণিরামপুর থানা, জেলা প্রশাসক এবং মণিরামপুরের ইউএনওর কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রবিউল ইসলাম।

থানায় লিখিত অভিযোগে রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, সহকারী শিক্ষক মজনুর রহমান বিদ্যালয়ের কোনো নিয়মনীতি মানেন না। গতকাল সকালে তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বাড়িতে চলে যান। এরপর ইউএনও বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এলে খবর পেয়ে তিনি আবার বিদ্যালয়ে ফেরেন। তখন বিষয়টি ইউএনওকে মৌখিকভাবে জানান রবিউল ইসলাম। ইউএনও বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর বেলা একটার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের সামনে সব শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সামনে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন মজনুর। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে লাঠি এনে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।

এসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে মজনুর রহমান বলেন, ‘রবিউল ইসলাম ইউএনওর কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করেছেন। আমি বিষয়টি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে রবিউল মাথায় আঘাত লেগেছে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার দাবি করেন, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করা নিয়ে শিক্ষক রবিউল ও মজনুরের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও নিশাত তামান্না ও মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী। তাঁরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রীপুরে গতিরোধক স্থাপনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, আশ্বাস পেয়ে প্রত্যাহার
  • মহাসড়কে আ.লীগ কার্যালয়সহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
  • সওজের জায়গা দখলে যেন নেই কোনো বাধা
  • প্রিয় বাংলাদেশি ভাই-বোনেরা, আমাদের সঙ্গে নাকবাকে স্মরণ করুন
  • নড়াইলে ৪ লেন সড়কে হকার্স মার্কেট উচ্ছেদ 
  • ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ