বকেয়া বেতন-বোনাসের দাবি, টঙ্গীতে মহাসড়ক অবরোধ
Published: 17th, May 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত হোসেন মার্কেট এলাকার বিএসআইএস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উভয় পাশে ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট যান চলাচল বন্ধ ছিল।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, কারখানাটির প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন শ্রমিক গত এপ্রিল ও চলতি মে মাসের মাসের বকেয়া বেতন, শ্রমের অতিরিক্ত মজুরি (ওভারটাইম) ও ঈদ-উল-আযহার বোনাসের টাকা পরিশোধের তারিখ নির্ধারণের দাবি জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। শনিবার সকালে কারখানাটির বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি দাবি জানিয়ে মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করে।
শ্রমিক জাহানারা বেগম জানান, গত এপ্রিল ও মে মাসের মাসের বকেয়া বেতন, ও ঈদ বোনাসের টাকা পরিশোধের দাবি জানিয়ে ছিলাম আমরা। কবে পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে সে বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। আমরা পালাক্রমে কারখানাটি পাহারা দিচ্ছি। মালিক কারখানার মালামাল ও মেশিনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরে শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) ইসমাইল হোসেন বলেন, কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে শ্রমিকরা মহাসড়ক থেকে সরে গিয়ে কারখানার সামনে অবস্থান করছে। কারখানার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক স্ত্রীকে খুনের পর মেয়েকে দলিল বুঝিয়ে দিয়ে আত্মহনন
ময়মনসিংহ নগরীতে প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাকিবুল করিম (৫০) নামে এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার আগে তিনি জমিজমার দলিলপত্র তার মেয়েকে বুঝিয়ে দেন বলে জানান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে নগরের গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। মরদেহ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রওশন আক্তার (৪২) গুলকীবাড়ি এলাকার ওই বাসায় মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। তার বাবার বাড়ি নেত্রোকোণা সদরের রাজুর বাজার এলাকায়। রাকিবুল করিম (৫০) ময়মনসিংহ নগরের সেনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল ফ্যাসিবাদ বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠন: প্রধান উপদেষ্টা
শৌচাগারে মিলল গৃহবধূর বস্তাবন্দি লাশ
পুলিশ জানায়, রাকিবুল ও রওশন দম্পতির দুই মেয়ে। তাদের বড় মেয়ে ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করে। রওশন গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসায় ছোট মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে মাস তিনেক আগে রাকিবুল ও রওশন আক্তারের ডির্ভোস হয়।
আজ মঙ্গলবার ভোরে রওশন আক্তার যে বাসায় ভাড়া থাকেন সে বাসায় প্রবেশ করেন রাবিবুল। তিনি রওশন আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। মাকে ছুরিকাঘাত করতে দেখে ছোট মেয়ে রোজা আক্তার ভয়ে অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল নিজে বাসার অপর একটি কক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রওশন আক্তারের ভাতিজা ইকবাল হোসেন শাওন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে দুইজনের ডিভোর্স হয়েছিল। সকালে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে রাকিবুল তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরে তিনি মেয়েকে বেঁধে রেখে অন্য একটি রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোণা থেকে এসে মরদেহ দেখতে পাই।”
বাড়িটির দায়িত্বে থাকা রকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, “১০-১২ বছর আগে বাসাটি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন রওশন আক্তার ও তার মেয়েরা। তার বড় মেয়ে ঢাকায় থাকত। তাদের চালচলন ভালোই ছিল। হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি।”
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে আসেন রাকিবুল করিম। তিনমাস আগে স্ত্রী কর্তৃক তিনি তালাকপ্রাপ্ত হন। আজ বাসায় ঢুকে প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করেন রাবিবুল। এরপর নিজের জমিজমার দলিলপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ