ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গতকাল শুক্রবার আলবেনিয়ায় ইউরোপীয় নেতাদের এক সভায় বলেছেন, তাদের গাজাকে সমর্থন করা উচিত, ঠিক যেমন তারা ইউক্রেনকে সহায়তা করছেন।

সভায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, “মানবতার বেশিরভাগ অংশ আমাদের দেখছে। কখনো কখনো তারা আসলে বুঝতে পারে না যে, আমরা ইউক্রেন সম্পর্কে কী করছি, তবে আমাদের ব্যাখ্যা করতে হবে।” খবর আল জাজিরার।

ম্যাক্রোঁ আরো বলেন, “আমরা যখন গাজা সম্পর্কে নীরব থাকি, তখন তারা ইউক্রেন সম্পর্কে আমাদের মোটেও বোঝে না। তারা আমাদের বলে: ‘এটা অদ্ভুত। যখন আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ করা হয় তখন আপনি আমাদের বলেন যে, আমাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকে এবং যখন গণহত্যা হয় তখন আপনি চোখ বন্ধ করে রাখেন।”

আরো পড়ুন:

গাজা থেকে ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়ায় পাঠাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৯০০ ছাড়াল

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি কোনো তুলনা করছি না। আমি গল্পগুলো জানি। কিন্তু আমি সত্যিই আমাদের সম্মিলিতভাবে জাগিয়ে তুলতে চাই যে, এই বিষয়ে আমাদের সমন্বয় থাকা উচিত।”

ম্যাক্রোঁ আলবেনিয়ায় ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে সংবাদিকদের জানান, গাজার মানবিক সংকট অগ্রহণযোগ্য। তিনি শিগগির ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান।

ম্যাক্রোঁ বলেন, “গাজার মানবিক পরিস্থিতি অসহনীয়। মানবিক সংকটের দিক থেকে আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি, যা আমরা এর শুরু থেকে আগে কখনো দেখিনি।”

ম্যাক্রোঁ জানান, আলোচনায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি এবং গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউক র ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হলেও সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না

দেশের মানুষ জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দেশে পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংগীতসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

জাতীয় সংগীতকে কটাক্ষ এবং বগুড়ায় উদীচীর কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশে সত্যেন সেন চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। আবার সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়। সমাবেশ থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও জাতীয় সংগীত পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই জাতীয় সংগীত যখন গাইতে দেওয়া হয় না, তখন প্রশাসন কিছু বলে না, সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তখন মনে সন্দেহ জাগে এই সরকার কি স্বাধীনতার পক্ষের?

সূচনা বক্তব্যে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। এ দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রবাহিত। সুতরাং কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধূলিসাৎ করা সম্ভব নয়।

যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত, নানাভাবে বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা করছে এবং উদীচীসহ প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে বাধা তৈরি করছে, অবিলম্বে এই গোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান উদীচীর সাধারণ সম্পাদক।

জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা বলেন, জাতীয় সংগীত সম্পর্কে নানা রকম কটাক্ষ করা হচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পর একদল মৌলবাদী শক্তি মনে করছে, তারা যা ইচ্ছা তা–ই বলবে। কিন্তু সেটা এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।

আরও পড়ুনবগুড়ায় উদীচীর জাতীয় সংগীত পরিবেশন মঞ্চে হামলা১৪ মে ২০২৫

বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি বাধার সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। এই চিহ্নিত অপশক্তিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

উদীচীর কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কঙ্কণ নাগের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুব ইউনিয়নের সাবেক নেতা গোলাম রাব্বি খান। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের শিশু-কিশোরেরাও অংশ নেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ