ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ, জালিয়াতির নথি দুদকে
Published: 21st, May 2025 GMT
বিভিন্ন জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার দায়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের বিতর্কিত এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে অপসারণ করা হয়েছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার এতে অনাপত্তি দিয়েছে। আগামী এক মাস পর তথা ২০ জুন এ অপসারণাদেশ কার্যকর হবে। এর আগে গত ৬ এপ্রিল তাকে বাধ্যতামূলকভাবে তিন মাসের ছুটিতে পাঠিয়েছিল ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।
জানা গেছে, মুনিরুল মওলাকে অপসারণের পাশাপাশি পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তার অনিয়ম–জালিয়াতির নথি পাঠানো হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। এখন বিধি অনুযায়ী সংস্থাটি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, ইসলামী ব্যাংকের সাম্প্রতিক অডিটে বিভিন্ন জালিয়াতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। সে আলোকে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাতে অনাপত্তি দিয়েছে।
ইসলামী ব্যাংকের একজন পরিচালক সমকালকে বলেন, অপসারণের মানে তিনি দায়মুক্তি পাবে তেমন না। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে দুদকসহ সরকারের অন্য সংস্থা। এ জন্য যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা নিয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মনিরুল মওলাকে ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক দখল করে এস আলম গ্রুপ। বিভিন্ন উপায়ে শুধু এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়ার তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলে নেওয়ার পর ব্যাংকটিতে প্রভাবশালী হয়ে উঠেন মনিরুল মওলা। দ্রুততার সঙ্গে তাকে পদোন্নতি দিয়ে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি নিয়োগ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পর্ষদের বেশিরভাগ সদস্য ও অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা বহাল তবিয়তে ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের প্রকৃত খেলাপি ঋণ ঠেকেছে ৬৫ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ৪২ দশমিক ২২ শতাংশ। এতে করে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। প্রভিশন সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকটি এখন ২০ বছর সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অবশ্য ইসলামী ব্যাংক ডিসেম্বর ভিত্তিক যে তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিয়েছিল সেখানে খেলাপি ঋণ দেখানো হয় ৩২ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা এক লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা ঋণের যা ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইসল ম ব য ক ব ল দ শ ল ম ট ড ন র ল মওল ব যবস থ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সমকামীকে দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত রিভিউ দাবি
বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশে একজন সমকামীকে বাংলাদেশের জাতিসংঘের পরবর্তী আবাসিক সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ অবিবেচনাপ্রসূত উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত রিভিউ করার দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
শুক্রবার (৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জাতিসংঘের পরবর্তী আবাসিক সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কূটনীতিক রিচার্ড এস হাওয়ার্ড একজন সমকামী। এমন খবর বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক। একজন সমকামীকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্তের আগে এখানকার সামাজিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট অবশ্যই বিবেচনায় নেওয়া উচিত।”
আরো পড়ুন:
ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: রেজাউল করীম
সংবিধান সংশোধনসহ সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন: মামুনুল হক
মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, “একজন সমকামীকে দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া জাতিসংঘের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। এমন সিদ্ধান্তে দেশে নতুন কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। চব্বিশের জুলাই পরবর্তী স্থিতিশীল একটি দেশকে অস্থিতিশীল করার মতো কোনো সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে আসুক তা আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। সুতরাং আমরা মনে করি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বিষয়টি বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত রিভিউ করবেন।”
“ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে সংস্থাটি যদি এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস ও ধর্মীয় মূল্যবোধবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রমোট করার অপচেষ্টা চালাতে চায়, তবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এদেশের সচেতন মানুষকে সাথে নিয়ে সোচ্চার হবে,” বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ