ঈদুল আজহায় স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিতে সরকারি ছুটি পুনর্বিন্যাসের দাবি
Published: 27th, May 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহায় যাত্রীদের স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা নিশ্চিত করতে ঘোষিত সরকারি ছুটি পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ জন্য তারা আগামী ১১ ও ১২ জুনের সরকারি ছুটি পুনর্বিন্যাস করে ৩ ও ৪ জুন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এবারের ঈদুল আজহায় সরকার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করলেও তা যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব করবে না। কারণ, ৭ জুন ঈদ উদ্যাপিত হলে ঈদের আগে মানুষ ছুটি পাবেন মাত্র দুই দিন। ঈদ ৬ জুন উদ্যাপিত হলে মানুষ ঈদের আগে ছুটি পাবেন মাত্র এক দিন। এই স্বল্প সময়ে প্রায় দেড় কোটি মানুষ রাজধানী ছাড়বেন। কাজেই এবারের ঈদযাত্রায় চরম দুর্ভোগের আশঙ্কা আছে।
আরও পড়ুনঈদযাত্রায় নিহত ৩৫২, দুর্ঘটনা ও হতাহত গত বছরের তুলনায় কম: যাত্রী কল্যাণ সমিতি০৯ এপ্রিল ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ঈদের ছুটির পুনর্বিন্যাস চাই। জনগণের স্বস্তির জন্য এটা জরুরি।’
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গত ঈদুল ফিতরে লোকজন স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পেরেছিলেন। এর কারণ ছিল ঈদের আগে পর্যাপ্ত ছুটি থাকা। কিন্তু আসন্ন ঈদুল আজহার পর লম্বা ছুটি থাকলেও আগে ছুটি সর্বোচ্চ দুই দিন। তাই তাঁরা বলতে চান, ঈদের পর ১১ ও ১২ জুনের সরকারি ছুটি পুনর্বিন্যাস করে ৩ ও ৪ জুন এগিয়ে আনা হোক।
ইতিমধ্যে সরকারের দায়িত্বশীল মহলে ছুটি পুনর্বিন্যাসের দাবি জানানো হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
মানুষের এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা। সড়কে চলাচলকারী পশুবাহী ট্রাক থামিয়ে যানজট সৃষ্টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। সড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো।
আরও পড়ুনঈদযাত্রায় পরিবহনে ৮৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় হচ্ছে: যাত্রী কল্যাণ সমিতি২৬ মার্চ ২০২৫সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক অপর্ণা রায় দাশ, যাত্রী কল্যাণ সমিতির অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকা আফরোজ।
আরও পড়ুনসড়ক দুর্ঘটনায় গত বছর নিহত ৮ হাজার ৫৪৩ জন: যাত্রী কল্যাণ সমিতি০৪ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’