প্রতিদিন কতটুকু আম, লিচু বা জাম খেতে পারবেন?
Published: 27th, May 2025 GMT
গ্রীষ্ম এলে ফলের বাজার এক চক্কর ঘুরে দেখতেও বেশ লাগে। পাকা আম, রসাল লিচু, টসটসে জাম...আহা! এই ফলগুলো যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর। তবে অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রতিদিন কয় টুকরা আম, লিচু বা জাম খেতে পারবেন, তা বয়স, রোগব্যাধি ও শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন মাঝারি আকারের ১ থেকে ২টি আম, ৮ থেকে ১০টি লিচু অথবা ছোট এক বাটি (১০০-১৫০ গ্রাম) জাম খেতে পারেন।
ডায়াবেটিসডায়াবেটিসের রোগীদের মিষ্টি ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। আম, লিচু ও জামে প্রাকৃতিক চিনি থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা খুব অল্প পরিমাণে এই ফলগুলো খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত। সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ডায়াবেটিসের রোগীরা ফল খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করে নিতে পারেন। ফল খাওয়ার পরপরই কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় অন্যান্য খাবার কমিয়ে দেওয়া উচিত।
আম: প্রতিদিন ১ থেকে ২ টুকরা (৪০-৫০ গ্রাম) পর্যন্ত খাওয়া নিরাপদ, তবে খাবার শেষে বা সকালের দিকে খাওয়াই ভালো।
লিচু: মাঝারি আকারের ৩ থেকে ৪টি লিচু; বিশেষ করে ইনসুলিন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে সীমিত রাখা উচিত।
জাম: জাম তুলনামূলক কম চিনিযুক্ত এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। দিনে এক মুঠো (৮-১০টি) জাম খাওয়া যেতে পারে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে দুই শিক্ষক ও বাগছাসের নেতাদের উপর ছাত্রদলের হামলা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগ নেতাকে আটকের ঘটনায় দুই শিক্ষক ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নেতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে শাখা ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিভাগে আটক রাখে। পরবর্তীতে তাকে মারধর শুরু করলে বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. একেএম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম এগিয়ে আসেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই শিক্ষককে গালিগালাজ ও হামলা করেন ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
রাজশাহী কলেজে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ১ বছর পর তদন্ত শুরু
কুষ্টিয়ায় প্রসূতির মৃত্যু, ক্লিনিকের মালিকের বাড়িতে হামলা
এ সময় বাগছাসের দুই নেতা ফেরদৌস শেখ ও ফয়সাল মুরাদ এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালিয়ে মারধর শুরু করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মারধরে আহত ফয়সাল মুরাদ ও ফেরদৌস শেখকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ভূয়া ভূয়া স্লোগান ও গালি দেন তারা। বর্তমানে আহতরা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে বাগছাসের জবি শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “বাগছাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুককে শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে হামলার শিকার হচ্ছিলেন। আমি সামনে গিয়ে তাদের বলি, 'ভাই, ফারুক জুলাই আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। ১৯ জুলাই আন্দোলনের সময় তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল। তাকে ছাত্রলীগ হিসেবে ট্যাগ দিয়ে এভাবে মারধর করা ঠিক নয়।' কিন্তু আমার অনুরোধ সত্ত্বেও তারা তাকে মারধর করে।”
তিনি বলেন, “আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যে ১২-১৩ জন ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত, আমি তাদের একজন। গত ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে গুলি খেয়েছিলাম। সেই আমাকেও ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে লাথি ও ঘুষি মারা হয়েছে। শামসুল আরেফিনের নেতৃত্বে তার কর্মীরা আমাকে কিলঘুষি মেরেছে। ছাত্রদলের যারা আমার এবং আমার জুলাইয়ের সহযোদ্ধাদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের বিচার করতে হবে। তারা প্রত্যেকে অছাত্র। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নামে অছাত্ররা সন্ত্রাস কায়েম করছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
তিনি আরো বলেন, “ট্যাগিং দিয়ে জুলাইয়ের আহত সহযোদ্ধাদের উপর হামলা চালাচ্ছে। জুলাইয়ের গুলিবিদ্ধ ফেরদৌস হাসানকে ঘিরে ধরে সবাই মিলে পিটিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। আমাদের স্যাররা যখন আমাদের রক্ষার্থে এসেছে, তখন তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, গালিগালাজ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে এগুলো পাওয়া যাবে।”
হামলার শিকার হওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ও জবি শাখার গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মূখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমাদের এক জুলাই যোদ্ধাকে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে জবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে প্রথমে হামলা চালায়।”
তিনি বলেন, “তাকে শিক্ষকদের সহায়তায় বাঁচাতে এলে আমাদের উপর হামলা করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কে এ এস রিফাত হাসান ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম স্যারসহ বাগছাস জবি শাখার আহ্বায়ক আহত হন। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমি এই হামলার বিচার চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আজ আমরা জানতে পারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করেছে। এরা বিভিন্ন সময় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছে ক্যাম্পাসে ঢুকবো এবং অরাজকতার সৃষ্টি করবে। এর আগে সাজিদ নামে একটি ছেলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল এবং ক্যাম্পাসে এসেছিল। তারই অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে এসে সংঘটিত হচ্ছে এবং বিভিন্ন ধরনের অরাজকতার পায়তারা চালাচ্ছে। আজ যারা এদের মাধ্যমে আহত হয়েছে আঘাতের শিকার হয়েছে, তারা এসে যখন এদের ধরতে যাই, তারাই উল্টো ছাত্রদলের বিরুদ্ধে মব সৃষ্টি করে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “ঘটনা শোনা মাত্রই আমরা পুরো প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। এ মুহুর্তে পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিষয়টি সুরাহা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র অধ্যাপকের সিদ্ধান্ত সবার মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী