২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের নেতাদের বিতর্কিত করতে মিডিয়াকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। তিনি বলেন, ‘নাহিদ ইসলাম থেকে শুরু করে যাঁরাই আমাদের অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বিতর্কিত করার জন্য মিডিয়াকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালীতে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল, দলের নিবন্ধনপ্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ ও সমন্বয় কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় হান্নান মাসউদ এ কথা বলেন।

সভায় হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) বিগত ১৬ বছরে এমপি-মন্ত্রীদের বাসায় তল্লাশি করতে দেখিনি। অথচ এই সরকারের যে উপদেষ্টারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখছেন, তাঁদের বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই দেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। আপনাদের জানার কথা, নাহিদ ইসলামের পিএস কোথায় কার জন্য সুপারিশ করেছেন, সেটা মিডিয়াতে ফলাও করে প্রচার হয়, কিন্তু কারা সুপারিশ করছে, সেটা নিয়ে কোনো কথা হয় না।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত সেক্টর হচ্ছে এনবিআর। সেই এনবিআরকে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কর আরোপ করবে একটি সংস্থা আর আদায় করবে আরেকটি। কিন্তু আবার এ নিয়ে একটি পক্ষের গায়ে জ্বালাপোড়া শুরু হয়েছে। চুরি, টাকা পাচারের অধিকার তারা আবার আগের মতোই রাখতে চায়।’

হান্নান মাসউদ বলেন, বাংলাদেশের মন্ত্রী-এমপি অপরাধ করলে জেলে যেতে হয়, এ রকম আইন আছে। কিন্তু সচিব–আমলারা কোনো অপরাধ করলে, অন্যায় করলে, দুর্নীতি করলে তাঁদের চাকরি যায় না, তাঁদের শুরু বদলি করা হয়। সরকার এখন তাঁদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নিচ্ছে। দুর্নীতি করলে, অন্যায় করলে তাঁদের চাকরিচ্যুত করা যাবে। এ আইনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাঁরা বলছেন, এটি কালো আইন। তাঁরা আসলে দুর্নীতি করার অধিকার চাইছেন। দুর্নীতি করার স্বাধীনতা চাইছেন।

হান্নান মাসউদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্ত টিকিয়ে রাখার জন্য গণতন্ত্রের মুখোশ পরা রাজনৈতিক দলগুলো অবস্থান নিচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, আমরা আজকে নতুনভাবে লড়াই করার জন্য একত্র হয়েছি। আমরা নতুন স্বপ্নের জন্য একত্র হয়েছি। মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের বিতর্কিত করতে পারবেন। কারণ, আপনাদের শক্তি আছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আছে এই দেশের সাধারণ জনগণ।’

শহরের নাপিতের পোল এলাকার একটি রেস্তোরাঁর মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব হোমায়রা নূর, নোয়াখালী অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক মুনতাসীর মাহমুদ, সংগঠক মিনহাজুল আবেদীন, সংগঠক নফিউল ইসলাম প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হ ন ন ন ম সউদ আম দ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চীনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশি আম রপ্তানি শুরু আজ

বাংলাদেশ থেকে চীনে প্রথমবারের মতো আম রপ্তানি শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। চীনে প্রথম চালানে প্রায় ৫০ টন আম পাঠানো হচ্ছে। এই উপলক্ষে সকাল ১০টায় রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কৃষক, উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক, দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন।
 
বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিআইপি গেটেও এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এবং ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ জানান, গুণগত মান বজায় রেখে এবার রপ্তানিতে রেকর্ড গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তার মতে, আম ছাড়াও কাঁঠাল ও লিচু রপ্তানির দিকেও নজর দিচ্ছে সরকার। 

তিনি বলেন, দেশভিত্তিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে রপ্তানি বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। বিমান ভাড়া কমাতে কার্গো বিমানের বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

চীনে আম রপ্তানির পথ উন্মুক্ত হয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক সফরে। তার আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চীন ইতিবাচক মনোভাব দেখায়। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৮ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কেন্দুয়া ঘাসুড়া এলাকার একটি আমবাগান পরিদর্শন করেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা দিতে ২০২২ সালের জুলাই থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, আম রপ্তানিতে এবার কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ায় ফল ইতিবাচক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ