দৃশ্যমান বিচার ও মৌলিক সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়
Published: 27th, May 2025 GMT
জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথযাত্রায় রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করতে হবে। এর আগে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত আলোচনা সভার বক্তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তর: মৌলিক সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটির সংস্কার সমন্বয় কমিটি। যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীনের সঞ্চালনায় যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন এনসিপির মৌলিক সংস্কারের লিখিত রূপরেখা পাঠ করেন।
সভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়। নির্বাচন হলেও আগের অবস্থায় ফিরে যাব। মৌলিক জায়গাগুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছাতেই হবে। যারা খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা খুনের নির্দেশদাতা তাদের বিচার করতে হবে আগে। তারপর সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করতে হবে।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বিচার ও সংস্কার করে নির্বাচনী প্যাকেজের মধ্য দিয়েই ১ হাজার ৪০০ শহীদের রক্তের হিস্যা আদায় করা সম্ভব।
মৌলিক সংস্কারে সব রাজনৈতিক দলকে এক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংবিধানে যদি গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ থাকে, জবাবদিহির কথা উল্লেখ থাকে তাহলে কোনো শাসকগোষ্ঠীর মনে স্বৈরতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদ উঁকি দিলেও সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবে।
দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, সংস্কারের যে সুযোগ এসেছে, তা কাজে না লাগাতে না পারলে বাংলাদেশ আবার স্বৈরাচারের কবলে পড়বে।
রাজনীতিতে সেনাবাহিনী নতুন বয়ান জন্ম দিচ্ছে বলে দাবি করেন নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, তারা বলেছেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত।’ সেনাবাহিনীর এ কথা বলার এখতিয়ার নেই। সেনাবাহিনী সেনানিবাসে থাকুক। এনসিপির আহ্বান সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে আলাদা করতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তাদের আহ্বান জানাব, আপনারা জনগণের সৈনিক, জনগণের পক্ষে আপনাদের থাকতে হবে। জনগণের পক্ষে যদি লড়তে হয়, নতুন বিশ্বে যে কলাকৌশলগুলো এসেছে, সেগুলো রপ্ত করতে প্রশিক্ষিত হন।
বিএনপির উদ্দেশে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, যে সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছেন, তখনই করুন। কিন্তু সংস্কারটা আগেই হতে হবে। যারা মৌলিক সংস্কার চায়, তারাই সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প এনস প র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সব হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ফেডারেশনের মশালমিছিল
পুরান ঢাকায় ভাঙারি পণ্য ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যা এবং খুলনায় বহিষ্কৃত যুবদল নেতা মাহবুব রহমান হত্যাসহ সাম্প্রতিক সব হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মশালমিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ। সঞ্চালনায় ছিলেন সহসাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস জামান।
সভাপতির বক্তব্যে সৈকত আরিফ বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল একটি গণতান্ত্রিক, নিরাপদ রাষ্ট্র গড়ে উঠবে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার যদি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে জনগণ নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।
বিএনপির সমালোচনা করে সৈকত আরিফ বলেন, ‘সরকার পতনের পর থেকেই হাটবাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন। এসব সংঘর্ষ খুন-হত্যায় রূপ নিচ্ছে। দলটি শুধু বহিষ্কার করেই দায় এড়াতে চাচ্ছে। বিএনপিকে বলছি, কেবল বহিষ্কার নয়, বিচার নিশ্চিত করতেও আপনাদের উদ্যোগ নিতে হবে।’
ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, আজকের অরাজকতার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাষ্ট্রীয় বিচারহীনতার। গণ-অভ্যুত্থানের পর শত শত মাজার ও মন্দির ভাঙা হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, যার কোনো বিচার হয়নি। তাই আজ মিটফোর্ডের মতো এলাকায় প্রকাশ্যে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।
বক্তারা অবিলম্বে সাম্প্রতিক সব হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত, দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধে রাষ্ট্রকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের সাংস্কৃতিক সম্পাদক জিন্নাত আরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার আহ্বায়ক আরমানুল হক, ঢাকা নগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমান, ছাত্র ফেডারেশনের শাখার সংগঠক সীমা আক্তার, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক হাসান আল মেহেদী, দপ্তর সম্পাদক অনুপম রায় রূপকসহ সংগঠনের অন্য নেতারা।