জুলাই গণহত্যা, পিলখানা ও শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ডের দৃশ্যমান বিচার এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনের পথযাত্রায় রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করতে হবে। এর আগে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত আলোচনা সভার বক্তারা।

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তর: মৌলিক সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটির সংস্কার সমন্বয় কমিটি। যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীনের সঞ্চালনায় যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন এনসিপির মৌলিক সংস্কারের লিখিত রূপরেখা পাঠ করেন।

সভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন নয়। নির্বাচন হলেও আগের অবস্থায় ফিরে যাব। মৌলিক জায়গাগুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছাতেই হবে। যারা খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল, যারা খুনের নির্দেশদাতা তাদের বিচার করতে হবে আগে। তারপর সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন করতে হবে। 

এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, বিচার ও সংস্কার করে নির্বাচনী প্যাকেজের মধ্য দিয়েই ১ হাজার ৪০০ শহীদের রক্তের হিস্যা আদায় করা সম্ভব। 

মৌলিক সংস্কারে সব রাজনৈতিক দলকে এক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সংবিধানে যদি গণতন্ত্র সুরক্ষিত থাকে, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ থাকে, জবাবদিহির কথা উল্লেখ থাকে তাহলে কোনো শাসকগোষ্ঠীর মনে স্বৈরতন্ত্র এবং ফ্যাসিবাদ উঁকি দিলেও সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হবে।

দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, সংস্কারের যে সুযোগ এসেছে, তা কাজে না লাগাতে না পারলে বাংলাদেশ আবার স্বৈরাচারের কবলে পড়বে। 

রাজনীতিতে সেনাবাহিনী নতুন বয়ান জন্ম দিচ্ছে বলে দাবি করেন নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, তারা বলেছেন, ‘ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত।’ সেনাবাহিনীর এ কথা বলার এখতিয়ার নেই। সেনাবাহিনী সেনানিবাসে থাকুক। এনসিপির আহ্বান সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে আলাদা করতে হবে। সশস্ত্র বাহিনীকে সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তাদের আহ্বান জানাব, আপনারা জনগণের সৈনিক, জনগণের পক্ষে আপনাদের থাকতে হবে। জনগণের পক্ষে যদি লড়তে হয়, নতুন বিশ্বে যে কলাকৌশলগুলো এসেছে, সেগুলো রপ্ত করতে প্রশিক্ষিত হন। 

বিএনপির উদ্দেশে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, যে সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন চাচ্ছেন, তখনই করুন। কিন্তু সংস্কারটা আগেই হতে হবে। যারা মৌলিক সংস্কার চায়, তারাই সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ড.

শরীফ ভূঁইয়া, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (বিআইজিডি) জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো ড. মির্জা এম হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, সুলতান মো. জাকারিয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প এনস প র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে সম্ভাব্য সবকিছুই করা হবে

জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার সম্ভাব্য সবকিছুই করবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

তিনি বলেন, “নিরাপদ খাদ্য শরীরের সুস্থতার পূর্বশর্ত। একে নিশ্চিত করতে হলে খাদ্য শৃঙ্খলের সাথে জড়িত সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।”

সোমবার (২৬ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদের নবম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন,“দেশে খাদ্যের ঘাটতি না থাকলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আমাদের সক্ষমতার ঘাটতি রয়েছে।শুধু আইন-বিধি প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান হবে না; ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সচেতনতার শুরুটা হতে হবে নিজ ঘর থেকে।”

সভায় জানানো হয়, জাপান সরকারের অর্থায়নে দশ বছর মেয়াদি ২ হাজার ৪০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকার ‘ফুড সেফটি টেস্টিং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’-এর আওতায় রাজধানীতে একটি ফুড সেফটি রেফারেন্স ল্যাবরেটরি, চট্টগ্রাম ও খুলনায় দুটি খাদ্য পরীক্ষাগার এবং প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সক্ষমতা উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে।

এর ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের খাদ্য পরীক্ষার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে সভায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বিভাগেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে অবকাঠামো সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সভায় জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি-বিধান ও নির্দেশনাগুলো দ্রুত চূড়ান্ত করতে অংশীজনের মতামত সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জনবল বৃদ্ধি এবং কার্যক্রমকে দেশব্যাপী সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দিকেও গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, খাদ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা কেবল একটি স্বাস্থ্যগত বিষয় নয়, এটি জনগণের মৌলিক অধিকার। এজন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, “নিরাপদ খাদ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের জনবল বৃদ্ধিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজিবি’র অভিযানে ৮০ হাজার টাকার চোরাচালানী পণ্য ও মাদক জব্দ
  • তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতিসভা
  • ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’র যাত্রা শুরু
  • সংস্কার কার্যক্রমে বাধা দিলে কঠোর হস্তে প্রতিরোধ করা হবে: হাসনাত
  • জনগণের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে সম্ভাব্য সবকিছুই করা হবে
  • সচিবালয়ে বিক্ষোভের বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আবদুল্লাহ
  • অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা, না দেশের ব্যর্থতা
  • ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান
  • জাতীয় কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা