পেছাতে পারে গ্র্যামি, লোপেজের অনুষ্ঠান বাতিল
Published: 13th, January 2025 GMT
আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি লস অ্যাঞ্জেলেসে হওয়ার কথা ৬৭তম গ্র্যামি পুরস্কার। তবে চলচ্চিত্রবিষয়ক মার্কিন গণমাধ্যম দ্য হলিউড রিপোর্টার জানিয়েছে, দাবানলের কারণে এ অনুষ্ঠান পেছাতে পারে। সংগীতের সবচেয়ে বড় এ পুরস্কার আসরে এ সময়ের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পীদের উপস্থিত থাকার কথা। গ্র্যামি পেছানো নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবে বেশ কয়েকটি সূত্র দ্য হলিউড রিপোর্টারকে জানিয়েছে, পূর্বনির্ধারিত সময়ে গ্র্যামি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
আরও অনুদান
দাবানলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য অনুদান ঘোষণা করেছে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড ও আমেরিকান ফেডারেশন অব টেলিভিশন অ্যান্ড রেডিও আর্টিস্ট। এক বিবৃতিতে ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ১২ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। একই পরিমাণ অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্যারিস হিলটনও।
বাড়ি ছাড়তে হয়েছে ডুয়াকেও
প্যাসিফিক প্যালিসেইডসে বহু তারকার বাড়িই পুড়ে ছারখার হয়ে গেছে। ডুয়া লিপাকেও নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভয়াবহ দাবানলের ভিডিও ভাগ করে নিয়েছেন এই গায়িকা। ডুয়ার পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ধূসর ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে লস অ্যাঞ্জেলেসের আকাশ। গায়িকা লিখেছেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতি সত্যিই বিধ্বংসী ও ভয়ংকর। এই দাবানলের জন্য যাঁদের নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে হলো, তাঁদের কথা ভাবছি।’
এমন বিপর্যয়ে মানুষকে সাহায্য করার কথাও বলেছেন ডুয়া। লিখেছেন, ‘যাঁরা অর্থ প্রদান করতে চান বা গৃহহারাদের আশ্রয় দিতে চান, তাঁদের জন্য কয়েকটি লিংক আমি ভাগ করে নিচ্ছি।’ অনুরাগীদের নিজের খবরও দিয়েছেন ডুয়া।
আরও পড়ুনপুড়েছে মেল গিবসনের বাড়িও১১ জানুয়ারি ২০২৫ব্রিটিশ এই পপ তারকা লিখেছেন, ‘আমি নিরাপদে আছি। নিজের ব্যবস্থা করে নিয়েছি। এই কঠিন সময়ে যাঁরা লড়াই করছেন, তাঁদের জন্য ভালোবাসা। সবাই নিরাপদে থাকুন। পরস্পরের খেয়াল রাখুন।’ ২০২০ সালে বেভারলি হিলসে বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছিলেন ডুয়া।
অনুষ্ঠান বাতিল
গত মাসেই মুক্তি পেয়েছে জেনিফার লোপেজের ‘আনস্টপেবল;। ছবিটির প্রচারণায় চলতি সপ্তাহ ও আগামী সপ্তাহে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে লোপেজের হাজির হওয়ার কথা ছিল। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সব ধরনের অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন তিনি। পিপল ডটকম জানিয়েছে, ছবির প্রচারের চেয়ে এখন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকতে চান লোপেজ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ভোট শুরু, আলোচনায় জীবনযাত্রার ব্যয় ও স্বাস্থ্যসেবা ইস্যু
অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন এক কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এর বামপন্থী অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি পুনরায় জয়ের চেষ্টা করছে। আর তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন পিটার ডাটনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন।
নির্বাচনে বড় ইস্যু: এবারের নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে জীবনযাত্রার ব্যয়। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন ব্যয় নিয়েও ভোটারদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে। নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল আসতে কয়েক দিন, এমনকি সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। তবে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই দেশটির ইলেকটোরাল কমিশন অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক ফল ঘোষণা শুরু করবে। মূলত এই প্রাথমিক ফল থেকেই ধারণা পাওয়া যাবে যে কে দেশটির পরবর্তী সরকার গঠন করবেন।
নির্বাচনে শুধু অস্ট্রেলিয়াতেই ভোটগ্রহণ হচ্ছে না, বরং বিদেশে থাকা দেশটির ভোটাররা যেন ভোট দিতে পারেন, সেজন্য ৮৩টি দেশে ১১১টি কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দেশটির পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে। এর মধ্যে বার্লিন, হংকং, লন্ডন ও নিউইয়র্কে বিপুল সংখ্যক অস্ট্রেলিয়ানের বসবাস রয়েছে।
দেশটির ভোটারদের জন্য ভোট দেয়ার কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ১৮ বছর বয়সী সবার জন্য ভোট দেয়া বাধ্যতামূলক। কেউ ভোট দিতে ব্যর্থ হলে তাকে ১৩ ডলার জরিমানা গুনতে হবে। প্রতিনিধি পরিষদের ১৫০টি আসনের সবকটিতেই এবং সিনেটের ৭৬টির মধ্যে ৪০টি আসনে আজ নির্বাচন হচ্ছে।
দেশটিতে প্রধান রাজনৈতিক দল দুটি: অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি এবং রক্ষণশীল লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন। কোনও দলের সরকার গঠনের জন্য প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ৭৬টি আসন পেতে হবে। সেটি সম্ভব না হলে দলগুলো বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী বা ছোট দলগুলোর সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারে।
দেশটিতে কয়েক দশক ধরেই রাজ্য ও ফেডারেল সরকার নির্বাচনে ছোট দলগুলো ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট ক্রমাগত বাড়ছে। ২০২২ সালের নির্বাচনে প্রতি তিনজন ভোটারের একজন দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের বাইরে অন্যদের ভোট দিয়েছিলেন। লেবার, দ্যা লিবারেল, দ্যা ন্যাশনালস এবং দ্যা গ্রিন মোটামুটি আলোচনায় থাকে। যদিও আসলে ১২টি দল সিনেটে আর আটটি দল প্রতিনিধি পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে।
সিনেটর পলিন হানসন ১৯৯৭ সালে ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত ওয়ান ন্যাশন পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। হানসন প্রায়ই নানা বিতর্কের কেন্দ্রে থাকেন। তিনি সিনেটে বুরকা পড়ে ব্যাপক আলোচনায় এসেছিলেন। তার দলের নীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা। দ্য ন্যাশনালসের সাবেক সদস্য বব কাট্টের প্রায় ৫০ বছর ধরে এমপি এবং তিনি তার বক্তৃতার স্টাইলের জন্য পরিচিত। ২০১৭ সালে সমলিঙ্গের বিয়ের বিষয়ে গণভোটের সময়ে তিনি এর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন।
বিলিওনিয়ার ক্লাইভ পালমারের দলের নাম ছিলো ইউনাইটেড অস্ট্রেলিয়া পার্টি। গত নির্বাচনে প্রায় ৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেও মাত্র একটি আসন পেয়েছিলেন সিনেটে। এবার পালমার ট্রাম্পেট অফ প্যাটরিওটস পার্টিকে সমর্থন দিচ্ছেন। এছাড়া সেন্ট্রাল এলায়েন্স দলের একমাত্র এমপি হলেন রেবেকা শারকি। ইতোমধ্যেই তিনি কোয়ালিশন নেতা পিটার ডাটনের সাথে যোগসূত্র রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য সেবা ইস্যু
বিবিসির টিফানি টার্নবুল দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া থেকে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা পদ্ধতির সূচনা হয়েছে প্রায় চার দশক আগে। সেখানে মেডিকেয়ার নামে একটি জনবীমা প্রকল্প চালু আছে। এর আওতায় উন্নত মানের স্বাস্থ্য সেবা নাগরিকদের জন্য মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু বিষয়টি প্রায়ই জাতীয় ইস্যুতে পরিণত হয়। কারণ প্রয়োজনের সময় অনেককেই এই সেবা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বলতে গেলে সর্বজনীন এই স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতি অনেকটাই খুঁড়িয়ে হাঁটছে। সরকার যে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে তা যথেষ্ট হচ্ছে না। জেনারেল প্রাকটিশনারসহ স্বাস্থ্যকর্মীর সংকট দেখা যাচ্ছে। সেবাপ্রার্থীদের জন্য অপেক্ষার সময় ক্রমশ দীর্ঘতর হচ্ছে। রোগীদের খরচও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। দেশটিতে অনেকেই বিবিসিকে বলেছেন, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
অভিবাসন আলোচনায় কেন
অস্ট্রেলিয়ার জনগোষ্ঠীর তৃতীয় বৃহত্তম অংশেরই জন্ম দেশটির বাইরে। দীর্ঘদিন ধরেই দেশটির পরিচিত 'মাইগ্রেশন ন্যাশন' হিসেবে, যেখানে অভিবাসীরা নতুন করে জীবন শুরু করতে পারেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসীদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। এর মূল কারণ হলো বাসস্থান খরচ বাড়ছে। পিটার ডাটন বলেছেন তিনি অভিবাসীরা যেন সহজেই ভোট দিতে পারেন সেজন্য ফাস্ট ট্রাক সিটিজেনশিপ চালু করবেন। গত বছর প্রধানমন্ত্রী আলবানিজের সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সীমিত করার উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি পাশ হয়নি।
অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন এক কোটি ৮০ লাখ ভোটার। এ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এর বামপন্থী অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টি পুনরায় জয়ের চেষ্টা করছে। আর তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন পিটার ডাটনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ লিবারেল-ন্যাশনাল কোয়ালিশন।