বন্দরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী হামলায় বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মিজানুর রহমান (৪৪) রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিরা স্থানীয় মেম্বারকে কুপিয়ে নগদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

আহত মেম্বার মিজানুর রহমান বন্দর উপজেলার ভদ্রসন এলাকার মৃত আবুল কাশেম মিয়ার ছেলে। স্থানীয় এলাকাবাসী আহত মেম্বারকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে। এর আগে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সকাল ১০টায় বন্দর উপজেলার ভদ্রসনস্থ এলাহী মিয়ার বাড়ি সামনে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।

এ ব্যাপারে আহত মেম্বারের স্ত্রী রানু বেগম বাদী হয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার দুপুরে হামলাকারি বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের  ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন ও তার ৩ সন্ত্রাসী ছেলে আমির ফয়সাল অপু, টিপু ও বিপুলের নাম উল্লেখ্য করে ও আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি ।

আহত মেম্বারের স্ত্রী রানু বেগম গণমাধ্যমকে জানান, বন্দর উপজেলা ভদ্রসন এলাকার মৃত আবুল কাশেম মিয়ার ছেলে স্থানীয় মেম্বার মিজানুর রহমানের সাথে কুশিয়ারা এলাকার মৃত হাফিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে বন্দর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন মিয়ার সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল।

এর জের ধরে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভদ্রসনস্থ  স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শাহাবুদ্দিন মিয়ার নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী ৩ ছেলে আমির হোসেন অপু, টিপু ও বিপুলসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্য মিজানুর মেম্বারের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

ওই সময় হামলাকারিরা মিজানুর মেম্বারকে বেদম ভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আহতের স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আহত ম ম ব র

এছাড়াও পড়ুন:

তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।

গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।

ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।

ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান

সম্পর্কিত নিবন্ধ