দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে দুবার সোনা জিতেছেন। সাক্ষী হয়েছেন অনেক স্মরণীয় মুহূর্তের। খেলার মাঠ ছাপিয়ে এবার জীবনের মাঠেও স্মরণীয় এক দিন কাটালেন মাবিয়া আক্তার।

আজ বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন দেশের তারকা ভারোত্তোলক। তাঁর বর সাখাওয়াত হোসেনও (প্রান্ত) একজন ভারোত্তোলক। খেলতে এসেই তাঁদের পরিচয় ও ভালোবাসা। তা সফল পরিণতি পেয়েছে পারিবারিকভাবে।

মাবিয়া–সাখাওয়াতের সম্পর্ক দৃঢ় হয়েছে দুজনই বাংলাদেশ আনসারের ভারোত্তোলক হওয়ায়। মাবিয়া দেশসেরা তো বটেই, ছাপ ফেলেছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। ২০১৬ সালে গুয়াহাটি এসএ গেমসে সোনা জিতে তাঁর কান্নার দৃশ্যটা ভাইরাল হয়েছে। এরপর নেপালের পোখারাতে ২০১৯ সালেও জেতেন সোনা। সেবার এসএ গেমসে রুপা জেতেন সাখাওয়াত।

মাবিয়া-সাখাওয়াতকে নিয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে একই খেলায় দম্পতির সংখ্যা আরেকটি বাড়ল। ব্যাডমিন্টনে আবুল হাশেম-কামরুন নাহার ডানা জুটির শুরু সেই আশির দশকে।

এনায়েত উল্লাহ খান-এলিনা সুলতানা জুটি বাঁধেন গত দশকে। শুটিংয়ে সাইফুল আলম চৌধুরী রিঙ্কি-সাবরিনা সুলতানা, শাকিল আহমেদ-নাজিফা নাতাশা জুটি বেঁধেছেন। ঘর বেঁধেছেন এসএ গেমসে সোনাজয়ী দুই সাঁতারু শাজাহান আলী রনি ও মাহফুজা খাতুন শীলা।

আর্চারিতে রোমান সানা-দিয়া সিদ্দিকীসহ ক্রীড়াঙ্গনে আছে আরও কয়েকটি জুটি। রোমান-দিয়া সম্প্রতি উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অর্থনীতিতে আবার ধীরগতি, পিএমআই সূচক প্রকাশ

দেশের অর্থনীতি অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। সে জন্য অর্থনীতির গতি এক মাসে বাড়লে পরের মাসেই আবার কমে যাচ্ছে। বিষয়টি পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বা পিএমআইয়ের মাধ্যমে প্রতি মাসে উঠে আসছে।

সর্বশেষ গত নভেম্বর মাসে পিএমআই মান ৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট কমে ৫৪ পয়েন্ট হয়েছে। অক্টোবরে পিএমআই মান ছিল ৬১ দশমিক ৮ পয়েন্ট। তার মানে, নভেম্বরে অর্থনীতি সম্প্রসারণের গতি আগের মাসের চেয়ে ধীর হয়েছে।

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স (এমসিসিআই) ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ যৌথভাবে পিএমআই প্রণয়ন করছে। আজ রোববার অক্টোবর মাসের পিএমআই প্রকাশ করা হয়।

অর্থনীতির প্রধান খাত কৃষি, নির্মাণ, উৎপাদন ও সেবা খাতের ৪০০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের মতামতের ভিত্তিতে পিএমআই প্রকাশ করা হয়। সূচক তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল ক্রয়, পণ্যের ক্রয়াদেশ, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। মূলত পিএমআই শূন্য থেকে ১০০ নম্বরের মধ্যে পরিমাপ করা হয়। সূচকের মান ৫০-এর বেশি হলে অর্থনীতির সম্প্রসারণ এবং ৫০-এর নিচে হলে সংকোচন বোঝায়।

জানা যায়, পিএমআইয়ের সার্বিক মান গত জানুয়ারিতে ছিল ৬৫ দশমিক ৭ পয়েন্ট। পরের তিন মাসে পিএমআই মান ধারাবাহিকভাবে কমেছে। তারপরের চার মাস উত্থান-পতনের মধ্যে ছিল। সেপ্টেম্বরে পিএমআইয়ের মান কিছুটা বেড়ে হয় ৫৯ দশমিক ১ পয়েন্ট। তারপর অক্টোবরে ২ দশমিক ৭ পয়েন্ট বেড়ে পিএমআই মান দাঁড়ায় ৬১ দশমিক ৮ পয়েন্ট। যদিও নভেম্বরে বড় পতন হয়। এই পতনের পেছনের কারণ হচ্ছে—কৃষি ব্যবসা, নির্মাণ, পণ্য উৎপাদন ও সেবা খাতের সম্প্রসারণের গতি কমে যাওয়া।

উৎপাদন খাত ১৫ মাস ধরে সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে। গত মাসে সম্প্রসারণের গতি কমেছে। অক্টোবরে উৎপাদন খাতের সূচকের মান ছিল ৬৬ দশমিক ১ পয়েন্ট। গত মাসে তা কমে ৫৮ দশমিক ৩ পয়েন্ট হয়েছে। এই খাতে নতুন ক্রয়াদেশ, রপ্তানি ক্রয়াদেশ, কারখানার কাঁচামাল ক্রয়, উৎপাদন, কর্মসংস্থান ও পণ্য সরবরাহ সূচকগুলো সম্প্রসারণে রয়েছে। তবে জমে থাকা ক্রয়াদেশ দ্রুত কমে আসছে।

নির্মাণ খাত টানা তিন মাস ধরে সম্প্রসারণ রয়েছে। তবে গত মাসে গতি কমেছে। নির্মাণ কার্যক্রম, কর্মসংস্থান ও কাঁচামাল কেনাকাটার সূচকে সম্প্রসারণ হলেও নতুন ব্যবসা সূচক সংকোচনে চলে গেছে। অক্টোবরে নির্মাণ খাতের সূচকের মান ছিল ৫৬ দশমিক ৫ পয়েন্ট। গত মাসে সেটি কমে ৫১ দশমিক ২ পয়েন্ট হয়েছে।

সেবা খাত টানা ১৪ মাস ধরে সম্প্রসারণ ধারায় আছে। যদিও গতি কম। এই খাতে কর্মসংস্থান ও কাঁচামাল কেনাকাটার সূচক সম্প্রসারণ ধারায় রয়েছে। তবে নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও জমে থাকা ক্রয়াদেশ—সব সূচকই সংকোচন ধারায় চলে গেছে। অক্টোবরে সেবা খাতের সূচকের মান ছিল ৬১ পয়েন্ট। গত মাসে সেটি কমে হয়েছে ৫১ দশমিক ৬ পয়েন্ট।

কৃষি ব্যবসা খাত সম্প্রসারণ ধারায় থাকলেও গতি কমেছে। অক্টোবরে কৃষি খাতের সূচকের মান ছিল ৫৯ দশমিক ৬ পয়েন্ট। গত মাসে সেটি কমে ৫৭ দশমিক ৪ পয়েন্ট হয়। এই খাতে নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান, কাঁচামাল কেনাকাটায় ধীর গতির সম্প্রসারণ হলেও ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক দ্রুত হারে বাড়ছে।

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘নভেম্বরে পিএমআই দেখায় যে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি দুর্বল হয়ে এসেছে; যা কিনা বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া ও রপ্তানি প্রতিযোগিতা হ্রাসের কারণে রপ্তানি খাতে চাপ, অভ্যন্তরীণ চাহিদার পতন এবং জাতীয় নির্বাচনের ব্যবসাগুলোর বিনিয়োগ স্থগিত রাখার প্রবণতার ফল। বার্ষিক রপ্তানি কমে গেলেও মাসওয়ারি বৃদ্ধি এবং ফসল কাটার ধারাবাহিকতা সামগ্রিক সম্প্রসারণ বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ