মহাপরিকল্পনা ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গাছ কেটে ভবন নির্মাণের আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন একদল শিক্ষার্থী। আজ রোববার বিকেলে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের পেছনে গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের জন্য বরাদ্দ করা স্থান ও সবুজে ঘেরা ‘সুইজারল্যান্ড’ এলাকায় প্ল্যাকার্ড হাতে তাঁরা মানববন্ধন করেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের পেছনে ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনের জঙ্গলের গাছ কেটে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের আয়োজন সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আজ সকালে প্রথম আলো অনলাইনে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার গাছে কেটে ভবনের আয়োজন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বিকেলে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে ‘শিয়াল, সিভেট, গুইসাপ, প্রশাসনকে দেবে অভিশাপ’, ‘দেড় শ গাছের কান্না, জাবি প্রশাসন শুনবে না’, ‘অবিলম্বে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন টেন্ডার আহ্বান কর’, ‘লেকচার থিয়েটার থাকবে ফাঁকা, সব বিভাগের আলাদা ভবন লাগবে কাকা’সহ বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের একাংশের সভাপতি অমর্ত্য রায় বলেন, ‘স্বৈরাচারী হাসিনার উন্নয়ন দর্শনের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রশাসনে। মাস্টারপ্ল্যানের টেন্ডার নিয়ে টালবাহানা, যত্রতত্র গাছ কাটার আয়োজন ও লেকগুলোকে মাঠ হতে দেওয়াসহ নানা কাজে প্রশাসনের চটুলতা দেখা যাচ্ছে। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রশাসন যত্রতত্র শপিং লিস্ট উন্নয়ন না করে মাস্টারপ্ল্যানের ভিত্তিতে কাজ করুক, লেকগুলো খননের কাজ শুরু করুক।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনের জঙ্গলে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে ওই স্থানে সুতা টাঙিয়ে লাল পতাকা ঝুলিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানটিতে ভবন নির্মাণ করা হলে অন্তত ৬০টি গাছ কাটা পড়বে। এর আগে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের পাশের জলাশয় ভরাট করে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবনের উদ্যোগ নেয় আগের প্রশাসন। শিক্ষার্থী ও পরিবেশবিদদের বাধার মুখে ওই স্থান থেকে সরে আসে বর্তমান প্রশাসন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ র জ হ ঙ গ রনগর ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ নোয়াখালীর মাহমুদুল হাসান ওরফে রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসানকে (১৬) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে আহত শাহরিয়ারের মা ফরিদা ইয়াসমিন ২১ জনকে আসামি করে সুধারাম থানায় মামলাটি করেছেন। মামলার তিন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে শাহরিয়ার হাসানকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার প্রতিবাদে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে পৃথকভাবে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।

সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তাহের মামলার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা ‘কিশোর গ্যাংয়ের’ সদস্য। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। একই সঙ্গে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে গতকাল বিকেল সোয়া চারটার দিকে জেলা শহর মাইজদীর বার্লিংটন মোড় এলাকায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় শাহরিয়ার হাসান গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। শাহরিয়ার শহরের হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

হামলাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি

শাহরিয়ার হাসানের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘নোয়াখালীর সর্বস্তরের ছাত্র–জনতা’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। এ সময় তাঁরা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্লোগানও দেন।

সমাবেশে হরিনারায়ণপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আরিফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন। মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিরাপদে স্কুলে আসতে পারবে না, স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে পারবে না; স্বাধীন দেশে এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে।’ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কিশোর গ্যাং লালনকারীদের আমরা সাবধান করে দিতে চাই। এ ধরনের তৎপরতা বন্ধ না হলে আপনাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াব।’

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করে ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’। কর্মসূচিতে পটুয়াখালীতে এক শহীদের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা ও নোয়াখালীতে শহীদের ভাইয়ের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দাবি করা হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের জেলা সংগঠক শহিদ আলম, জয়নুল আবেদীন, জান্নাতুল ফেরদাউস, ইমাজ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • জাহাঙ্গীরনগরে পিটুনিতে নিহত সেই ছাত্রলীগ নেতাকেও ‘সাময়িক বহিষ্কার’ করেছে প্রশাসন
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • সিলেটে টিলা কাটার অভিযোগে বিএনপি নেতা, ইউপি সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • জুলাই হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে জাবি ছাত্রদলের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’
  • ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
  • কয়েকটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর আবার চালুর উদ্যোগ
  • আবার চালু হচ্ছে পরিত্যক্ত ৭ বিমানবন্দর
  • জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের ভাইকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, প্রতিবাদ কর্মসূচি