ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাংবাদিক গ্রেপ্তার
Published: 4th, May 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বাউল গানের কলি লিখে পোস্ট দেয়ার অভিযোগে সাংবাদিক আব্দুল ওয়াহেদ ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তার পোস্ট করা কথাগুলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনুভুতিতে আঘাত লাগার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওয়াহেদ ফকিরকে শনিবার (৩ মে) রাত পৌনে ১০টার দিকে শহরের সাতমাথা থেকে আটক করা হয়। পরে পলাশ কুমার মহন্ত নামে এক ব্যক্তি বগুড়া সদর থানায় মামলা করলে আজ বরিবার (৪ মে) সন্ধ্যার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আব্দুল ওয়াহেদ ফকির বগুড়ার স্থানীয় মুক্ত জমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত।
সম্প্রতি আব্দুল ওয়াহেদ ফকির একটি প্রতীকী ছবি এঁকে বাউল গানের কিছু কলি লিখে তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে পোস্ট করেন। এ নিয়ে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
আরো পড়ুন:
স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন জরুরি
তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতি অনেকে সন্দেহের চোখে দেখছেন: কামাল আহমেদ
সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না, আমি এটা চাই না: তথ্য উপদেষ্টা
সাংবাদিক আব্দুল ওয়াহেদ ফকির বলেন, ‘‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মতো কিছু লিখিনি। আমি ব্যক্তিগত রোষানলের শিকার হয়েছি। একটি মহল বেশ কিছু দিন ধরে আমার পিছু লেগেছে। তাদের ষঢ়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।’’
বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.
ওয়াহেদ ফকির যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, সেটি তো একটি বাউল গানের কলি। কোনো প্রতিষ্ঠিত গানের কলি ফেসবুকে লিখে পোস্ট দিলে সেটি কি ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার মতো ঘটনা ঘটে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘যদি ও রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তবে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’
ঢাকা/এনাম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণের অভিযোগ, দুইদিনেও উদ্ধার হয়নি পল্লী চিকিৎসক
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে তরিকুল ইসলাম (৩৫) নামে এক পল্লী চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের হাতি চামটার ব্রিজ এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, মাথায় হেলমেট এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তার সামনেই কয়েকজন ব্যক্তি তরিকুল ইসলামকে টেনে-হিঁচড়ে একটি অটোভ্যানে তুলছেন। এ সময় আশপাশের কয়েকজন তাকিয়ে দেখেন। তরিকুল তাদের সাহায্য চাইলেও সবাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তদের একজনকে বলতে শোনা যায়, 'এ এখানে প্রশাসনের লোক আছে।'
অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলাম ভাতগ্রাম ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর কুটিপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। ভাতগ্রাম বাজারে পল্লি চিকিৎসক হিসেবে তার চেম্বার ও ওষুধের দোকান রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করতেন।
এদিকে অপহরণের দুইদিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে না পারায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বজনরা। তবে অপহরণকারীরা এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ বার ফোন দিয়ে অপহৃত তরিকুলের ছোটভাই হিরুর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে পল্লী চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া সাদুল্লাপুর থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তরিকুল ইসলামের ঔষধের দোকানে সুমন নামে এক ব্যক্তি ৬ মাস কাজ করেছেন। পরে তাকে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হলে বিভিন্ন অজুহাতে তিনি টাকা দাবি করে আসছিলেন দোকান মালিক তরিকুলের কাছে। এ নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে শালিসি বৈঠকও হয়। গত শুক্রবার বিকেলে তরিকুল বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে ভাতগ্রাম বাজারে তার দোকানে যাচ্ছিলেন। পথে সুমনসহ স্থানীয় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে মারধর করেন এবং জোরপূর্বক তাকে অটোরিকশা ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়।
পল্লি চিকিৎসকের ছোটভাই হিরু মিয়া বলেন, অভিযোগ দেওয়ার দুইদিন হয়ে গেল, এখনো আমার ভাইকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ সেখানে সাদুল্লাপুর থানার একজন এএসআই উপস্থিত ছিলেন। অপহরণকারীরা সবার পরিচিত। দিনে দুপুরে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কারণে ভাইকে নিয়ে খুব দুঃশ্চিন্তায় আছি আমরা। তার দুই মেয়ে শুধু কাঁদছে।
তিনি আরও বলেন, সবশেষ রোববার দুপুরে অপহৃত তরিকুলের কাছে থাকা মোবাইল ফোন থেকে দুর্বৃত্তরা ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেছেন। প্রশাসনের কাছে তার বড়ভাইকে দ্রুত উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
রোববার রাত ৯টায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার সমকালকে বলেন, ‘অপহরণের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তির উপস্থিতির কথা শুনেছি। কিন্তু স্পষ্ট নয়। অপহরণের শিকার তরিকুল ইসলামকে উদ্ধারে পুলিশের অভিযান চলামান রয়েছে।’