শরীয়তপুরের নড়িয়ায় গত বৃহস্পতিবার রাতে মোটরসাইকেল জব্দ করা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। এতে এক কনস্টেবল আহত হন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (নড়িয়া সার্কেলের এএসপি) কার্যালয়ের একটি কক্ষ, জানালা, থানার গেট ও একটি সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ছাত্রদল ও বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হওয়ায় মো.

বিল্লালকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নজরুল ইসলাম হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এসপি গণমাধ্যমকে জানান, হামলা চালিয়ে নড়িয়া থানার গেটের সামনে নড়িয়া সার্কেল এএসপির বাসভবনের নিচতলার জানালার গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। এ ভবনের নিচতলায় পুলিশ সদস্যরা থাকেন। এ সময় তারা ভবনের দিক লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। তাদের ইট-পাটকেলের আঘাতে ভবনের কক্ষসহ পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কারা হামলা চালিয়েছে এবং কী উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়েছে– এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসপি বলেন, কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় নড়িয়া থানা পুলিশ তিনটি মোটরসাইকেল জব্দ করে। যাদের মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছিল, তারাই এ হামলা চালিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী এ ঘটনায় আমরা কয়েকজনকে আটক করেছি। আর হামলাকারীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কিনা, সেটা জানতে পারিনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

তিনি আরও বলেন, ‘আইনের চোখে কেউই ছাড় পাবে না। হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয়, নড়িয়া উপজেলা বিএনপি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল থামিয়ে যাচাই করছিলেন। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তারা কয়েকটি মোটরসাইকেল জব্দ করেন। এ সময় আশপাশে থাকা বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং সার্কেল এএসপির কক্ষ ভাঙচুর করে।

জানতে চাইলে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, পুলিশের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলেমিশে ছিল। আর যারা এ ঘটনায় জড়িত, তাদের দলীয় কোনো পদ নেই। তবে হামলায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা বেশি ছিল। মূলত বিএনপিকে বিতর্কিত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ মুহূর্তে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমার সঙ্গে রয়েছেন। যদি কোনো বিএনপি নেতাকর্মী এ ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। কারণ বিএনপিকে বিতর্কিত করার অধিকার কারও নেই। আর কোনো অপরাধীর জায়গা বিএনপিতে হবে না।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ বলেন, ‘হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে পুলিশ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ পর্যন্ত ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল শ র ওপর ন ত কর ম র ব এনপ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে এএসপি শামিমের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ৭

নরসিংদীতে সড়কে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শামিম আনোয়ারের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। 

গতকাল শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে শহর পুলিশ ফাঁড়ির এটিএসআই সোহেল পারভেজ বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঘটনার পর রাতেই পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে শামিম আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি পুলিশ দল নিয়মিত টহল দিচ্ছিল। পৌর শহরের আরশিনগর এলাকায় দুজন ব্যক্তি যানবাহন থেকে টাকা তুলছিল। পুলিশ বিষয়টি জানতে চাইলে এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কথা বললে দুই চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর হঠাৎ করে ৩০-৩৫ জনের একটি দল অতর্কিতে এএসপি শামিম আনোয়ারের ওপর হামলা চালায়। তারা তাকে কিল-ঘুষি মারে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। এসময় হামলাকারীরা গ্রেপ্তারকৃত দুই চাঁদাবাজকে ছিনিয়ে নেয়। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে পরে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

অতিরিক্ত সহকারী পুলিশ সুপার শামিম আনোয়ার বলেন, “আরশিনগর এলাকায় দুজন ব্যক্তিকে যানবাহন থেকে টাকা তুলতে দেখে আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করি- কীসের টাকা তুলছেন? যানবাহন থেকে চাঁদা তোলায় তো হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা আছে। তখনই হঠাৎ ৩০-৩৫ জনের মতো লোক এসে আমার ওপর হামলা চালায়। তারা আমাকে ঘিরে ধরে কিল-ঘুষি মারতে থাকে এবং এক পর্যায়ে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এরপর আমার সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যরা আমাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নরসিংদীর সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করেছিলেন এএসপি শামিম আনোয়ার। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বিভিন্ন স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন এবং নিজের ওপর হামলার আশঙ্কার কথাও জানান।

ঢাকা/হৃদয়/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নরসিংদীতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭
  • নরসিংদীতে এএসপি শামিমের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ৭