যন্ত্রপাতি সচল করে রোগীর দুর্ভোগ কমান
Published: 10th, May 2025 GMT
দেশের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো রোগীদের জন্য বড় ভরসাস্থল। উপজেলা পর্যায় থেকে আসা রোগীরা এসব হাসপাতালে ভিড় করেন বেশি। মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও আমরা তেমন চিত্র দেখি। কিন্তু এ হাসপাতালে এসে রোগীদের রোগনির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় বা সচল না থাকায় বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্রের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। এতে তাঁদের বাড়তি অর্থ খরচ হচ্ছে। বিষয়টি হতাশাজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং ও প্যাথলজি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে ও রোগনির্ণয় বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বাড়তি অর্থ খরচ করে হাসপাতালের সামনে গড়ে ওঠা বেসরকারি ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলো (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার খোলা থাকে। সেখানে দুই থেকে তিন গুণ বাড়তি টাকা খরচ করে প্রতিদিন কয়েক শ রোগীকে স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা ও রোগনির্ণয় করতে হচ্ছে।
হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই পরীক্ষাসহ সব ধরনের পরীক্ষা বন্ধ আছে। প্রায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন বছর আগে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি এমআরআই যন্ত্র স্থাপন করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে যন্ত্রটি চালু করা হলে গরম হয়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত যন্ত্রটি চালু করা যায়নি। হাসপাতালটিতে অত্যাধুনিক তিনটি ডিজিটাল এক্স-রে যন্ত্র আছে। তবে ফিল্ম নেই। তাই এক্স-রে পরীক্ষা বন্ধ। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সিটি স্ক্যানও বন্ধ।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এ কিউ এম আশরাফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা ও এক্স-রে সেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এসব সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
রক্তের পরীক্ষাও যদি বাইরে থেকে করিয়ে নিয়ে আসতে হয়, তা একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য লজ্জার। জেলা পর্যায়ের একটি হাসপাতালে রোগীদের রোগনির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এমন ভোগান্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। রাজধানীর অদূরে এ হাসপাতালে কার্যকর চিকিৎসাসেবা চালু থাকলে রাজধানীর হাসপাতালগুলোর ওপরেও চাপ কম পড়বে। তা ছাড়া হাসপাতালটিতে যদি রোগীর চিকিৎসা ও রোগনির্ণয়ের যথাযথ ব্যবস্থাপনা না থাকে, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও তঁাদের বাস্তবিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন। আমরা আশা করব, মানিকগঞ্জের হাসপাতালটির সংকটগুলো দ্রুত নিরসন করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন: বিবিসি বাংলাকে নাহিদ
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে পারেন এমন খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করেন নাহিদ ইসলাম।
আরো পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নাহিদসহ দুই উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জামায়াত আমিরের
নাহিদ বলেন, “দেশের চলমান পরিস্থিতি, স্যারেরতো পদত্যাগের একটা খবর আমরা আজকে সকাল থেকে শুনছি। তো ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছিলাম।”
প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন ইসলাম।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “স্যার বলছেন আমি যদি কাজ করতে না পারি... যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলা একটা গণ অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার.....। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে।”
“আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো,” বলেন নাহিদ ইসলাম।
প্রধান উপদেষ্টাকে পদত্যাগের মতো সিদ্ধান্ত না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন গঠিত দলটির নেতা নাহিদ ইসলাম।
নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, “আমাদের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যৎ সবকিছু মিলিয়ে উনি যাতে শক্ত থাকেন এবং সবগুলা দলকে নিয়ে যাতে ঐক্যের জায়গায় থাকেন। সবাই তার সাথে আশা করি কো-অপারেট করবেন।”
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন বলে জানান নাহিদ ইসলাম।
বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “হ্যাঁ যদি কাজ করতে না পারেন, থাকবেন, থেকে কী লাভ।”
এই আলোচনার পরে প্রধান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে জানিয়েছেন ‘পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন’ তিনি। উনি বলছেন উনি এ বিষয়ে ভাবতেছেন। ওনার কাছে মনে হয়েছে পরিস্থিতি এরকম যে তিনি কাজ করতে পারবেন না।”
পদত্যাগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার এখনকার মনোভাবের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এখন ওনি যদি রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ চায়..সেই আস্থার জায়গা, আশ্বাসের জায়গা না পাইলে উনি থাকবেন কেন?”
ঢাকা/এসবি