যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য একে অপরের পণ্যের ওপর শুল্ক ব্যাপকভাবে প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুই দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির কর্মকর্তাদের সপ্তাহান্তে ম্যারাথন বাণিজ্য আলোচনার পর এই ঘোষণা আসলো। যৌথ বিবৃতি অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর সাময়িকভাবে তার শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে ৩০ এ কমিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন আমেরিকান আমদানির উপর তার শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করবে।

বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক কিছুটা বেশি শুল্ক আরোপ বজায় রাখার লক্ষ্য হলো, শক্তিশালী ওপিওয়েড ড্রাগ ফেন্টানাইলের অবৈধ ব্যবসা রোধে বেইজিংয়ের উপর আরো চাপ সৃষ্টি করা।

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় মার্কিন–ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস

পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে তুরস্ক যাচ্ছেন জেলেনস্কি

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, সমস্যা মোকাবিলায় চীনের আগ্রহ দেখে তারা ইতিবাচকভাবে অবাক হয়েছেন।

যৌথ বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে, ৯০ দিনের জন্য এই শুল্ক বিরতি বুধবার (১৪ মে) থেকে শুরু হবে।  

এতে আরো বলা হয়েছে, উভয় দেশ ‘অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করবে’।

পরবর্তী আলোচনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা কোনো সম্মত তৃতীয় পক্ষের দেশে অনুষ্ঠিত হতে পারে।

এর আগে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বড় অগ্রগতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

রবিবার (১১ মে) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডে চীনের সঙ্গে ভালো বৈঠক হয়েছে। অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে; অনেক ক্ষেত্রেই ঐকমত্য হয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক পদ্ধতিতে পুরো বিষয়টি নতুন করে সাজানো হয়েছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের কল্যাণে আমরা দেখতে চাই, মার্কিন ব্যবসার-বাণিজ্যের জন্য চীন দুয়ার খুলে দিচ্ছে। বড় অগ্রগতি হয়েছে।’

গত কয়েক দিন ধরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং চীন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট হি লাইফেং।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বকেয়া পাওনার দাবিতে শ্রম ভবনের সামনে টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকেরা

বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে আবারও রাস্তায় নেমেছেন গাজীপুরের টিএনজেড গ্রুপের আট কারখানার শ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকার শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা জানান, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান করবেন তাঁরা।

টিএনজেড গ্রুপের ৮টি কারখানায় কর্মরত ৫ হাজার ২১৯ জন শ্রমিক ও কর্মচারীর মোট বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস ও ভাতা মিলিয়ে প্রায় ৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকেরা জানান, ঈদুল ফিতরের আগে তাঁরা সাত দিন ধরে শ্রম ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন। ওই সময় শ্রম মন্ত্রণালয়ের মধ্যস্থতায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, অ্যাপারেল প্লাস ইকো, বেসিক ক্লদিং লিমিটেড, বেসিক নিটওয়্যার লিমিটেড ও অ্যাপারেল আর্ট লিমিটেডের শ্রমিকদের ঈদ উদযাপনের জন্য বকেয়া বেতন পরিশোধে মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়। আশ্বাস দেওয়া হয় তিন কোটি টাকা পরিশোধের। শেষ পর্যন্ত ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। যাঁরা ওই সময় বকেয়া বাবদ এই অর্থ পেয়েছেন, তাঁরা জনপ্রতি ৯ হাজার ১০০ টাকা পান। আবার অনেক শ্রমিক কোনো অর্থ পাননি। আজকের কর্মসূচিতে অ্যাপারেল প্লাস ইকো, টিএনজেড অ্যাপারেলস, অ্যাপারেল আর্টসহ মোট আটটি কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক অংশ নেন। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আন্দোলনকারী শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। পুলিশের নিরাপত্তায় মিছিলটি বিজয়নগর থেকে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে টিএনজেড অ্যাপারেলসের শ্রমিকনেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বহুবার আলোচনায় বসেছি। আর আলোচনায় বসতে চাই না। আমরা চাই, মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সরকার বকেয়া বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা নিক। সেটি না হলে আগামীকাল থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

সমাবেশে গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, তিন মাস ধরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নেননি। এখন আর শ্রমিকের দোষারোপ না করে রাষ্ট্রকে দায় নিতে হবে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা আক্তারের সভাপতিত্বে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ৭ মে সব শ্রমিক ও কর্মচারীর বকেয়া বেতন–ভাতা পরিশোধ করা হবে। তবে শ্রমিকদের অভিযোগ, ৭ মে তাঁরা কারখানার সামনে উপস্থিত হলেও কেউ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। পরে বকেয়া বেতন–ভাতার দাবিতে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। পরে পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালায়। এতে ২০ জনের বেশি শ্রমিক আহত হন। তাই শ্রম ভবনের সামনে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ