গেলো কয়েক বছর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে যা ঘটেছে তা নিয়ে বিরক্ত সিনিয়র শিল্পীরা। অনেকেই কথা বলেছেন প্রকাশ্যেই। এই যেমন- অভিনেতা অমিত হাসান প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘শিল্পী সমিতি আছে কিন্তু শিল্পী নেই।’ তার সঙ্গে একমত হয়েছেন আরেক জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী। তিনি বললেন আরও কঠিনভাবে। তার কথায়, ‘আমাদেরকে একরকম মেরে ফেলা হয়েছে।’

ওমর সানী সমকালকে বলেন, ‘এমন শিল্পী সমিতি কখনো দেখিনি। এমন দুরবস্থা হবে সেটাও কখনো মনে করিনি। জায়েদ খানের মত মানুষ এই সমিতিতে এসে যা ইচ্ছে তাই করেছে। নিপুণ জোড় করে দায়িত্ব পালন করেছে। তারা শিল্পীদের মধ্যে কোটি টাকার খেলা খেলেছে। সঙ্গে তো নানা ধরণের নোংরামি ছিলোই। এগুলো নিয়ে সমালোচনা আমাদের মত শিল্পীরা নিতে পারিনি। আমাদের মত শিল্পীদের লজ্জায় মুখ লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। বলতে পারেন, শিল্পী আমাদের একরকম মেরে ফেলা হয়েছে।’

এখন শিল্পী সমিতিতে নিজের সদস্যপদটাও রাখতে চান না ওমর সানী। কারণ, নির্বাচনের সময় এলেই তাকে পড়তে হয় বিভিন্ন প্রশ্নে মুখে। তিনি বলেন, ‘আমি এখন খুবই বিরক্ত। শিল্পী হিসেবে পরিচয় দিতে আর ভালো লাগে না। এখন আমি চাই, শিল্পী সমিতি থেকে যেনো আমার সদস্য পদ বাতিল করে দেওয়া হয়। তাহলেই আমি বেশি খুশি হবো। কারণ, নির্বাচনের সময় আমাকে ও মৌসুমীকে নিয়ে সবাই নানান ধরণের প্রশ্ন করে। যেগুলো আমি নিতে পারি না। তার থেকে দূরে থেকে কাজ করাই ভালো।’

একসময় নায়করাজ রাজ্জাক, খলিল, আলমগীর, মান্না, রুবেল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মিজু আহমেদসহ অনেক গুণী শিল্পী এই সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। তারা প্রতিনিয়ত সমিতিতে যেতেন এবং সিনেমার নিয়ে আলোচনা করতেন। পরবর্তীতে শাকিব খান সভাপতি থাকা অবস্থায় সমিতি ছিল তারকাবহুল। সিনিয়র-জুনিয়র শিল্পীদের মেলবন্ধন ছিল চমৎকার। কিন্তু এখন আলমগীর, সোহেল রানা, উজ্জল, রুবেল, শাবনূর, শাকিব খান, মৌসুমী, অপু বিশ্বাস, বুবলী, আরিফিন শুভ, সিয়াম, শরিফুল রাজ, পরীমণিদের মত তারকাদের সমিতিতে দেখা যায় না।

ওমর সানী বলেন, ‘এই সমিতিতে আমি কোনো না কোনো পোস্টে আমি ৫-৬ বার দায়িত্ব পালন করেছি। সুন্দর করে সমিতিকে গড়ার চেষ্টা করেছি। আমরা সবসময় সিনিয়র শিল্পীদের কাজের কথা মাথায় রেখেছি। রাজনীতি তো থাক দূরের কথা, আমাদের মাথা সিনেমা ছাড়া অন্য কিছুই ছিলো না। সিনিয়র শিল্পীরা এখন অবহেলিত। তাদের নিয়ে চিন্তুাই করা হয় না। তাদের ভেবে গল্প লেখা হচ্ছে না। আমি, রুবেল, রোজিনা, আমিন খান, বাপ্পারাজ কোনো সিনেমায় নেই। আমাদের জুনিয়রদের হাতেও কাজ নেই। এফডফিসিতে যখন শুটিং চলবে তখন শিল্পীরা আসবেন শিল্পী সমিতিতে। কিন্তু আসল জিনিসটাই নেই।’

ওমর সানীর কথায়, “আমাদের কিংবদন্তী কবরী আপা, রাজ্জাক আঙ্কেল, হুমায়ূন ফরিদী ও ফারুক হাসেবসহ যারা প্রকৃত শিল্পী তাদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ মারা গেছেন। এখন আমাদের পালা। আমার মরে গেলে সব শেষ। তখন শিল্পী সমিতি শুরু হবে ‘ডি গ্রেড’ শিল্পী থেকে। আগে যেটা ছিল ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরির শিল্পী থেকে।”

এতো কিছুর মধ্যে অভিনয় করে যেতে চান ওমর সানী। তবে জায়গা ও নিজের ইমেজের কথা ভেবে চিন্তাভাবনা করে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি।

তার ভাষ্য, ‘আমাদের অনেকেই মাঝেমধ্যে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি অভিনয় ছেড়ে দিয়েছে? তখন খুব বিরক্ত লাগে। আশ্চর্য লাগে। কারণ, আমি অভিনয় ছাড়বো কেনো! অভিনয় তো আমার রক্তে। অভিনয় থেকে দূরে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এর মধ্যে দুটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ, এখন আমি ভালো গল্পে, ভালো চরিত্রে কাজ করতে চাই। ভালো কাজের জন্য আমি এখনো মুখিয়ে থাকি। এখনো নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওমর স ন এফড স ওমর স ন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।

গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।

রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
  • কাঁচাপাট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেএ চেয়ারম্যানের
  • বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
  • রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
  • ক্ষুব্ধ-বিরক্ত আঁখি বললেন, ভণ্ডামি থেকে মুক্তি চাই
  • ‘বয়স বাড়ছে, বুঝে ফেলি কে মিথ্যা বলে’—ফেসবুকে আঁখি আলমগীর