শেরপুর জেলার উন্নয়নে পাঁচ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে এক ঘণ্টা শহরের খোয়ারপাড় (শাপলা চত্বর) থেকে অষ্টমীতলা (পুলিশ লাইনস মোড়) পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন কয়েক হাজার মানুষ।

এই কর্মসূচির আয়োজন করে শেরপুর প্রেসক্লাব। দল-মতনির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। আয়োজকেরা জানান, ১৯৮৪ সালে শেরপুর জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত এখানে দৃশ্যমান বড় কোনো সরকারি উন্নয়ন হয়নি। নেই রেলপথ, মেডিকেল কলেজ, পূর্ণাঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা র‌্যাব-দুদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর।

মানববন্ধনে পাঁচটি মূল দাবি তুলে ধরা হয়। তা হলো, আধুনিক একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, সরকারি মেডিকেল কলেজ বা বিশেষায়িত হাসপাতাল, কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে কৃষিপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, শেরপুরকে রেলপথের সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং পর্যটন উন্নয়নে হোটেল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়েন।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শেরপুর সরকারি ম‌হিলা ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ আ জ ম রেজাউল ক‌রিম খান, ম‌হিলা গালর্স ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ এ বি এম মামুনুর র‌শিদ, জেলা চেম্বার অব কমা‌র্স অ্যান্ড ইন্ড‌াস্ট্রিজের ভারপ্রাপ্ত সভাপ‌তি আরিফ হো‌সেন, ট্রাক মা‌লিক স‌মি‌তির সভাপ‌তি আউয়াল চৌধুরী,আইনজী‌বী স‌মি‌তির সভাপ‌তি মুরাদুজ্জামান, বিএন‌পি নেতা ফজলুর রহমান, শেরপুর ডা‌য়াবে‌টিক স‌মি‌তির সভাপ‌তি রা‌জিয়া সামাদ, জেলা বিএন‌পির সা‌বেক সভাপ‌তি ও সা‌বেক সংসদ সদস‌্য মাহমুদুল হক প্রমুখ।

কর্মসূচিতে স্বাগত বক্তব‌্য দেন শেরপুর প্রেসক্লা‌বের সভাপ‌তি কাকন রেজা। উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লা‌বের কার্যকরী সভাপ‌তি আবদুর র‌ফিক। অনুষ্ঠান‌ সঞ্চালনা ক‌রেন প্রেসক্লা‌বের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও এবং কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি শহীদ পরিবারের সদস্যদের

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর এবং কোষাধ্যক্ষ ওয়াকার আহমেদের অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যরা। আজ সোমবার রাজধানীর শাহবাগে ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধনে শহীদ সায়েমের মা শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলের জীবন নিয়েছে যে স্বৈরাচার, ওই স্বৈরাচারের লোকজন এখানে কীভাবে থাকবে? তাহলে আমাদের ছেলেদের হত্যার বিচার আমরা কোথায় পাব, কীভাবে পাব? আমাদের দুঃখ তো ওই স্বৈরাচারের লোকজন বুঝবে না। শহীদ ফ্যামিলিই শহীদদের যন্ত্রণা বুঝবে। বাইরে থেকে আসা ওই লোক শহীদের যন্ত্রণাটা বুঝবে না। একটা মায়ের মনের ভেতরে যে দুঃখ, কষ্ট, হাহাকার, এটা শহীদ ফ্যামিলিই বুঝবে।’

শিউলি আক্তার আরও বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, ওনাকে (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) আমরা এখানে দেখতে চাই না। আমাদের শহীদ পরিবারের মধ্যে অনেকে যোগ্য আছেন, তাঁদের এখানে বসানো হোক। তাঁদের যদি বসানো না হয়, তাহলে জুলাই ফাউন্ডেশন কিসের, জুলাই ফাউন্ডেশন তো শহীদদের ও আহতদের জন্য। তাহলে কেন স্বৈরাচারের লোকজন এখানে বসবে। ওনার কোনো অধিকার নাই এখানে বসার। আমাদের ছেলেরা রক্ত দিচ্ছে দেশের জন্য, স্বৈরাচারের লোকজন বসার জন্য নয়।’

শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, এটা আমাদের সরকার। আমরা আমাদের সন্তানদের বিচার দেখে যেতে পারব; কিন্তু না হচ্ছে গ্রেপ্তার, না হচ্ছে বিচার। সব জায়গায় স্বজনপ্রীতি এবং টাকার সাথে সমঝোতা চলছে।’ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের শহীদ পরিবারদের দুর্বল ভাববেন না, আপনারা যদি দ্রুত বিচারের অগ্রগতি না করেন, তাহলে আমরা অচিরেই রাজপথে নামব এবং সচিবালয় ঘেরাও করব।’

উপদেষ্টাদের উদ্দেশ করে শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া আরও বলেন, ‘আপনারা বিলাসী জীবন বাদ দিন, আমাদের সন্তানদের হত্যার বিচারের দিকে নজর দিন। আজ জুলাই শহীদ পরিবার রাস্তায় মানববন্ধন করছে, আপনাদের লজ্জা থাকা উচিত।’

রাজধানীর উত্তরায় নিহত ছয় বছরের শিশু জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা (৮ মে) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনা থেকে যখন বের হচ্ছিলাম, তখন জুলাই ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ ওয়াকার আহমেদ শহীদ ইয়ামিনের বাবার সাথে খুব খারাপ আচরণ করেছেন। তিনি শহীদ ইয়ামিনের বাবাসহ শহীদদের পিতাদের “পাগল” এবং “ননসেন্স” এ ধরনের শব্দ উচ্চারণ করেছেন। ওনার এই আচরণ আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না, আমরা তার পদত্যাগ চাই।’

মানববন্ধনে শহীদ ফাহমিন জাফরের মা কাজী লুলুল মাখমিন বলেন, যাঁদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁরা পদ পেয়েছেন, আজ তাঁরাই তাঁদের অবমূল্যায়ন করছেন। ফাউন্ডেশনের সব গুরুত্বপূর্ণ পদে শহীদ পরিবার থেকেই নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

৮ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) পদ থেকে পদত্যাগ করার কথা জানান শহীদ মীর মাহমুদুর রহমান মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। একই সঙ্গে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আকবর কামালের নাম ঘোষণা করা হয়।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন শহীদ নাফিসের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভির বাবা আবুল হাসান, শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন, শহীদ ইমাম হাসান তায়িমের ভাই রবিউল আউয়াল ভূঁইয়া, শহীদ রমিজ উদ্দিন আহমেদের বাবা রকিবুল ইসলামসহ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেরপুরের উন্নয়ন দাবিতে ৭ কিলোমিটার মানববন্ধন 
  • রাজশাহীতে বিএসসি ও ডিপ্লোমা নার্সদের সংঘর্ষ তদন্তে কমিটি
  • ঢাবি ভিসি-প্রক্টর একটি আদর্শে বিশ্বাসী, তাই ছাত্রদলের কথা শুনতে চান না: রিজভী
  • চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন ঘিরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের সিট ভাড়া কমানোর দাবিতে মানববন্ধন
  • মল্লিকা এক্সপ্রেস আটকে ঢাকাগামী ৪ ট্রেন চালুর দাবি
  • মাদকের বিরুদ্ধে সুহৃদের মানববন্ধন ও সমাবেশ
  • মাদকের বিরুদ্ধে তারুণ্যের প্রত্যয়
  • জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সিইও এবং কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি শহীদ পরিবারের সদস্যদের