জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে কাকরাই মোড়সহ পুরো এলাকা।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চলা এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানের পাশাপাশি উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক স্লোগানও দেন। এ সময় তাদের ‘বোতল মাহফুজ, বোতল মাহফুজ’, ‘বোতল, বোতল’, ‘বোতল বোতল মাহফুজ’, ‘মাহফুজের মার্কা, বোতল মার্কা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

এর আগে, বুধবার (১৪ মে) রাতে জাবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে কথা বলতে আসেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বক্তব্যে চলাকালে বিক্ষুব্ধ এক শিক্ষার্থী তার মাথায় বোতল নিক্ষেপ করেন।

আরো পড়ুন:

চেম্বারে ছাত্রীর সঙ্গে শিক্ষক: স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে রাবিতে বিক্

ঢাবিতে বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রদলের উপাচার্যবিরোধী আন্দোলন, ক্ষোভ

এ ঘটনার প্রতীকী ব্যঙ্গ হিসেবে বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা হাতে বোতল নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক স্লোগানে মিছিল করেন এবং একে অপরের মাথায় ছুঁড়ে মারেন। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। অথচ আমাদের আন্দোলনে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করেছে। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কিছু নেতা বোতল নিক্ষেপের ঘটনাকে বড় করে দেখাচ্ছেন। তারা আমাদের শিক্ষকদের ওপর হামলাকেও তুচ্ছ করে দিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।

বোতল কাণ্ডের পর উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের বলেন, “একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী, যাদের আমি আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী ও স্যাবোট্যুর মনে করি। তারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবং আন্দোলনকে স্যাবোটাইজ করার চেষ্টা করছে।”

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট ছাড়াই অনুমোদন করতে হবে; জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে; শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মহাসড়কে আ.লীগ কার্যালয়সহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন এ অভিযান পরিচালনা করেন। সওজের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার মধ্যে আওয়ামী লীগ কার্যালয়, ফলের ও মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ছিল।
ইউএনও ফারজানা রহমানের নেতৃত্বে অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুর মোর্শেদ, কাঁচপুর সার্কেলের সহকারী কমিশনার সেগুফতা মেহনাজ, ওসি মফিজুর রহমান, কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ অভিযানে অংশ নেন। 
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলেও তদারকির অভাবে সপ্তাহখানেক পর ফের দখলে চলে যায়। প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় এসব দোকানপাট টাকার বিনিময়ে গড়ে তোলা হয়। বিষয়টি তদারকি করে স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এর আগে গত ১২ ফেব্রুয়ারিতে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তিন মাসের মধ্যে ফের দখল হয়ে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় সওজের জায়গা দখল করে তিনটি কাঁচাবাজারসহ দুই হাজারের অধিক অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলেন প্রভাবশালীরা। স্থানীয় লোকজন বলছেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে একটি চক্র মহাসড়কের জমি ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তারা পালানোর পর আরেক পক্ষ একই পন্থায় টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার পরিবর্তন হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি।
সরেজমিন গেলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, কিছুদিন পর পর লোক দেখানো অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করেন। বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালীদের টাকা দিয়ে ফের দোকানপাট গড়েন তারা। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। যাদের টাকা দেওয়া হয়, তাদের নাম প্রকাশ করলে পরবর্তী সময়ে সেখানে তাদের ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না।
তারা বলছেন, জায়গার অগ্রিম বাবদ ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা আর দৈনিক ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া বাবদ আদায় করেন। ভাঙা-গড়ার খেলায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হন প্রভাবাশালীরা। এ বিষয়ে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহেদ মোর্শেদ বলেন, মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ফের দোকান বসালে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়, এমন অভিযোগ রয়েছে জানিয়ে ইউএনও ফারজানা রহমান বলেন, আগে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও তিন মাসের ব্যবধানে দখল হয়ে গেছে। প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ীভাবে দোকান বরাদ্দের চেষ্টা করা হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ