পটিয়ায় গাছ থেকে পড়ে সংগীত শিক্ষকের মৃত্যু
Published: 16th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের পটিয়ায় আমগাছ থেকে পড়ে প্রণব ভট্টাচার্য (৫৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের ‘আর্য্য সঙ্গীত সমিতি’, পটিয়ার নিবেদন শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগীত ও তবলার শিক্ষক ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রণব ভট্টাচার্য পটিয়া উপজেলার ধলঘাট ইউনিয়নের গৈড়লা গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর ভাই প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে বাড়ির উঠানে আম পাড়তে গাছে ওঠেন প্রণব ভট্টাচার্য। এ সময় গাছের ডাল ভেঙে তিনি নিচে পড়ে গিয়ে আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকদের ধারণা, গাছ থেকে পড়ার পর হার্ট অ্যাটাকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
প্রণব ভট্টাচার্য চট্টগ্রাম বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের তালিকাভুক্ত সংগীতশিল্পী জানিয়ে প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, এক সপ্তাহ আগে তাঁদের আরেক ভাই কল্যাণ কুমার ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয়েছে। ভাইয়ের মৃত্যুর পর ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালনের উদ্দেশ্যে নগরের বাসা থেকে গ্রামে অবস্থান করছিলেন প্রণব ভট্টাচার্য। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জায়েদ মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মারিয়া মান্দার লেখা: লড়ি মাঝমাঠে, লড়ি জীবনের মাঠেও
ধোবাউড়ার মন্দিরগোনা গ্রামে জন্ম আমার। আমি গারো সম্প্রদায়ের মেয়ে। গারোরা এমনিতেই অনগ্রসর। তবে গারো হিসেবে আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে বাধা আসেনি। কেউ বলেনি যে ফুটবল খেলো না। আমার সম্প্রদায় নিরুৎসাহিত করেনি কখনো। তবে মেয়ে হিসেবে আমরা যে গ্রামাঞ্চলে খেলাধুলা করেছি, তাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
বলা হতো, গ্রামের মেয়েরা কেন ফুটবল খেলবে! তা-ও আবার হাফপ্যান্ট পরে! এটাই ছিল সবচেয়ে বড় বাধা। রক্ষণশীল সমাজ থেকে নিষেধ করা হতো ফুটবল খেলতে। বাধাটা পেয়েছি আদতে এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে।
অনেকে আমার মাকে বলতেন, ‘মেয়েকে খেলতে দিয়েছেন, এটা ভালো না।’ অভিভাবকেরা মেয়েদের নিষেধ করতেন ফুটবল খেলতে। বলা হতো, মেয়েরা ফুটবল খেলতে পারবে না।
বাধা পেরিয়েতারপরও কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কোচ মফিজ উদ্দিন স্যার থেমে থাকেননি। সঙ্গে ছিলেন মিনতি রানী শীল ম্যাডাম। সপ্তাহে এক দিন-দুই দিন অভিভাবকদের সভা ডাকতেন; বোঝাতেন, কেন মেয়েদের খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত। তাঁদের নেতৃত্বে আমরা ছোটবেলা থেকেই ফুটবল-পাগল হয়ে উঠেছিলাম, বাধা দিলেও অনেকে লুকিয়ে খেলত। তবে খেলার জগতে আসতে পরিবার থেকে বাধার মুখে পড়তে হয়নি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বাবা বীরেন্দ্র মারাক মারা যান। তাঁর কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই। ঘরে তাঁর কোনো ছবি নেই, চেহারাটাও মনে করতে পারি না। তাই বাবার স্নেহ কাকে বলে, তা ঠিক জানি না। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের চার ভাইবোনকে একাই বড় করেছেন মা—এনতা মান্দা।
গারোরা ধান কাটা, ধন বোনার কাজই বেশি করেন। আমার মা-ও সেটাই করতেন। আমাদের লালন–পালনের জন্য প্রতিদিন যে পরিশ্রম তিনি করেছেন, সেটা সত্যিই অসাধারণ। ধান কাটার কাজ মানে দৈনিক মজুরি, আমাদের নিজের জমি ছিল না, অন্যের জমিতে কাজ করতেন মা। দিনে পেতেন মাত্র ২০০ টাকা। এই টাকায় সংসার চলত না। ঋণ করতে হতো। ছোটবেলা থেকে মা ঘামে, চোখের জলে এগিয়ে নিয়েছেন আমাদের। তাঁর সেই পরিশ্রম আর ত্যাগের মধ্যেই আমার শৈশব কেটেছে।
ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামে নিজ বাড়ির উঠানে কিশোরী মারিয়া মান্দার অনুশীলন