তিন বছর পর পর্দায় ফিরলেন নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। ফেরাটা হলো জটিল, আবেগঘন আর রহস্যে মোড়া এক গল্প দিয়ে। গত বুধবার রাতে মুক্তি পাওয়া চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘গুলমোহর’ যেন একটি পরিবারের আয়নায় সমাজের আড়ালে থাকা অনেক গোপন ও গভীর সত্যকে তুলে ধরেছে। আট পর্বের এই সিরিজ মুক্তির পর থেকেই দর্শকের কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু একটি পরিবারের দ্বন্দ্ব নয়, সিরিজটিতে উঠে এসেছে অতীতের পাপ, তার প্রায়শ্চিত্ত এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।

বাড়ির নামেই গল্প
‘গুলমোহর’ শুধু একটি নাম নয়, এটি একটি বাড়ি, একটি পরিবারের ইতিহাস, সম্পর্কের বন্ধন, আবার বিচ্ছেদও। বাহ্যিকভাবে জমিজমার ভাগাভাগি, অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন, ভাই–বোনের সম্পর্কের টানাপোড়েন—সবই দেখা যায় সিরিজে। কিন্তু শাওকীর নির্মাণ দর্শককে এর অনেক গভীরে নিয়ে যায়। সেখানে আছে দীর্ঘদিন ধরে চেপে রাখা পাপ, আছে পূর্বপুরুষের ভুলের ভার বর্তমান প্রজন্মের ঘাড়ে চেপে বসা যন্ত্রণা। সিরিজের গল্প শুরু হয় একটি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। পিতার মৃত্যুতে একত্র হয় পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তাৎক্ষণিক শোকের ভেতর থেকেই যেন ফাটল ধরতে শুরু করে সম্পর্কের দেয়ালে। উত্তরাধিকারের লড়াই, পুরোনো অভিমান, গোপন অপহরণ, এমনকি রাজনৈতিক প্রভাব—সব মিলিয়ে তৈরি হয় এক গভীর সংকট। নির্মাতা শাওকী বলেন, ‘এটা ঠিক, গল্প রহস্যধর্মী ঢঙে বলা হলেও এটা আসলে এক মানসিক যাত্রা। আমি রহস্যের ভেতর দিয়ে গল্প বলাটা উপভোগ করি, এটা আমার শক্তির জায়গা।’

গুলমোহরের দাবিদারেরা
সিরিজটিতে অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। তিনি যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তাকে নির্মাতা ব্যাখ্যা করেছেন গল্পের প্রয়োজনেই বিতাড়িত এক মানুষ হিসেবে, যে কিনা সমাজচ্যুত হয়েও নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্যে ফেরে গল্পে। তার পারফরম্যান্স একদিকে ভারী, অন্যদিকে সংবেদনশীল। শাওকীর ভাষ্যে, ‘আমি সমাজচ্যুত মানুষের চোখ দিয়ে গল্প বলতে পছন্দ করি। শাশ্বতের চরিত্রে আমি সেই ভালো লাগার কাজটাই করেছি।’

নির্মাতা সৈয়দ আহমেদ শাওকী। চরকির সৌজন্যে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিরুদ্ধে ‘ইসরায়েলের পক্ষে প্রচার চালানো’র অভিযোগ শতাধিক কর্মী‌র

ব্রিটিশ সম্প্রচার সংস্থা বিবিসির ১০৭ জন কর্মীসহ আরও ৩০০ জন গণমাধ্যমকর্মী ও শিল্পী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ‘প্যালেস্টাইনবিরোধী বর্ণবাদ’ এবং ‘ইসরায়েলের পক্ষে প্রচার চালানো’র অভিযোগ এনেছেন।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

ডেডলাইন ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি খোলা চিঠিতে তারা বিবিসির শীর্ষ নেতৃত্বকে অভিযুক্ত করে বলেন, ইসরায়েল সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশে প্রতিষ্ঠানটি ‘সেন্সরশিপ’ আরোপ করছে এবং ইসরায়েলি সরকার ও সেনাবাহিনীর হয়ে ‘জনসংযোগ’ চালাচ্ছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি বিবিসি ‘গাজা: মেডিকস আন্ডার ফায়ার’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা ‘একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ। এই ক্ষেত্রে বিবিসির অধিকাংশ কাভারেজেই প্যালেস্টিনবিরোধী বর্ণবাদের ছাপ স্পষ্ট।’

বিবিসির কর্মীরা অভিযোগ করেন, ফিলিস্তিনে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাজ্য সরকারের ভূমিকাসহ, দেশটির অস্ত্র বিক্রি ও তার আইনি প্রভাব সম্পর্কে বিবিসি গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিশ্লেষণ তুলে ধরেনি।

চিঠিতে বলা হয়, ‘২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে দর্শকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদন নিজস্ব সম্পাদকীয় মানদণ্ড পূরণ করছে না। গাজা ও পশ্চিমতীরে যা ঘটছে, আর বিশ্বস্ত বিভিন্ন উৎসে যা প্রকাশ পাচ্ছে — সেই বাস্তবতার সঙ্গে বিবিসির কভারেজের মধ্যে বিস্তর ফারাক লক্ষ্য করা গেছে।’

অভিযোগকারী কর্মীরা বলেন, ‘বিবিসির সম্পাদকীয় সিদ্ধান্তগুলো ক্রমেই বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মনে হচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস করতে হচ্ছে যে এসব সিদ্ধান্ত শ্রোতাদের চাহিদা পূরণে নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য নেওয়া হচ্ছে।’

প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষরকারী বিবিসির সব কর্মীই নাম প্রকাশ না করে চিঠিটি জমা দেন। তবে চিঠিতে সমর্থন জানানো গণমাধ্যম ও বিনোদন অঙ্গনের ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেতা খালিদ আবদাল্লাহ ও মিরিয়াম মারগোলিয়েস।

সম্পর্কিত নিবন্ধ