গাজীপুরের শ্রীপুরে বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় আন্দোলনে নেমেছেন এম কে ফুটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকেরা। আজ শনিবার সকাল আটটা থেকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া এলাকায় ওই কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন সহস্রাধিক শ্রমিক। সেখানে শিল্প পুলিশ ও শ্রীপুর থানা-পুলিশ উপস্থিত রয়েছে।

কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, ১০ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে শনিবার কারখানা চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিকেরা সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারেন, ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এপ্রিল ও চলতি মে মাসের বেতন না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন শ্রমিকেরা। তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা কারখানার ভেতরে ঢোকেন। তবে প্রশাসনিক পর্যায়ের কাউকে সেখানে পাননি। পরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান।

এম কে ফুটওয়্যার লিমিটেড কারখানার শ্রমিক মনির হোসেন বলেন, এক হাজারের বেশি শ্রমিক গত মাসসহ এই মাসের বেতন না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। সামনে ঈদ আসছে। এ পরিস্থিতিতে বেতন না পেলে শ্রমিকদের সংসার চলবে কী করে? কারখানা কর্তৃপক্ষ অর্থনৈতিক সংকটের অজুহাতে ১০ দিন ছুটি দিয়েছে। কিন্তু আবারও ছুটি শ্রমিকেরা মেনে নেবে না।

আরেক শ্রমিক মো.

আল আমিন বলেন, মালিকপক্ষ বলছে, তাদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের টাকা নেই। তাই লাইন কেটে দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। কিন্তু টাকা ছাড়া শ্রমিকেরা চলবে কীভাবে?

কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. সুমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোমবার পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে কারখানা চালু হবে। আমরা মালিকপক্ষ নই, আমরাও সাধারণ কর্মী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছেন।’

শিল্প পুলিশের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আবদুল লতিফ বলেন, ‘শ্রমিকেরা এপ্রিল মাসের বেতন পাননি। বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলেও জানতে পেরেছি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা সেখানে আছেন।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘যারা বলে বেড়াচ্ছিল নির্বাচন হবে না, তাদের মুখে চুনকালি পড়ল’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত নির্বাচনি তফসিল এবং আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে স্বাগত জানিয়েছে জুলাই অভ্যুত্থান ও সংস্কারকে ধারণকারী তিন দলীয় ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। 

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া এক বার্তায় এই তথ্য জানান।

যৌথ বিবৃতিতে জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম এবং আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, এতদিন যেসব সুযোগ সন্ধানী এবং সংস্কারবিরোধী চক্র নির্বাচন হবে না বলে গল্প ছড়িয়েছে, নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের মুখে চুনকালি পড়ল।

সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেতারা বলেন, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে সরকার জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।” 

একই সাথে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে নেতারা বলেন, সকল দলের প্রতি সমান আচরণ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি।

বেশ কয়েক জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জোট নেতারা বলেন, “এই পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ১৪ শত শহীদ ও হাজারো আহত মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।” 

গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, প্রধান উপদেষ্টা যেখানে ঘোষণা দিয়েছেন, এবারের নির্বাচন হবে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন; সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোভাব এখনো ততটা জনবান্ধব নয়।

অতিদ্রুত পেশাদার ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দেন তিন নেতা।

উদ্বেগের সঙ্গে নেতারা বিবৃতিতে বলেন, সকল শর্ত পূরণ করার পর এমনকি হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। এ ধরনের আচরণ জনমনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি করবে। 

সকল নেতিবাচক আচরণ ও প্রশ্নবোধক কর্মকাণ্ড পরিহার করে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জোটটির নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ