জাতীয় কবির সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা
Published: 25th, May 2025 GMT
সাম্যের কবি দ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকীতে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন কবির পরিবারের সদস্যরা, নানা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গ।
এ দিন সকাল ছয়টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড.
বিএনপির পক্ষ থেকে সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ নেতাকর্মীরা।
শ্রদ্ধা জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্ম যুগ যুগ ধরে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে, অনুপ্রাণিত করেছে। জুলাই আন্দোলন এবং বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনে তার লেখনী আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। শত আঘাতের মধ্যেও তিনি আমাদের প্রেরণার উৎস।
রিজভী বলেন, ‘শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার জন্য নজরুল আমাদের তাগিদ দিয়েছেন। জাতীয় ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি পরতে পরতে তিনি আমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ করেন, অনুপ্রাণিত করেন। সে কারণে আজও তিনি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।’
সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা চলমান সংকটকে ঘনীভূত করার চেষ্টা করছেন। তারা নিজেদের দায়িত্ব বাদ দিয়ে অন্য কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করলে আমরা তার প্রতিবাদ করবই।’
রিজভী বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণ নিরপেক্ষ আচরণ আশা করে। কোনো দলকে প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব তাদের না। এমনটি হলে জনগণ মানবে না।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা সুযোগ পেলেই আঘাত করবে। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করা। নইলে স্বৈরাচারের দোসররা সুযোগ গ্রহণ করবে।’
জাতীয় কবির নাতনী খিলখিল কাজীসহ পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বোন মিষ্টি কাজী ও নজরুল ইনস্টিটিউটের সদস্যরা।
শ্রদ্ধা জানিয়ে খিলখিল কাজী বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম যা দিয়ে গেছেন বাঙালি জাতিকে, তা অনস্বীকার্য। তিনি শিখিয়ে গেছেন সবসময় সত্যের পক্ষে থাকবো, অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলবো। এসবগুলো যদি আমরা পালন করতে পারি, ধারণ করতে পারি তা হবে আমাদের স্বার্থকতা।
খিলখিল কাজী আরও বলেন, তিনিই তো আমাদেরকে দিয়েছেন গাহি সাম্যের গান, মানুষের চেয়ে বড় কিছু নেই। মানুষকে বড় করে দেখেছেন। সমাজের যত অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে তার লেখনী নিয়ে কাজ করেছেন। স্বদেশী আন্দোলনকারীরা তার কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙেছেন।
শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, তার জীবন ও সাহিত্যকর্ম অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার শিক্ষা দেয়। সর্বাবস্থায় সাম্য ও শান্তি বজায় রেখে নিজেদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য ধরে রাখার শিক্ষাও আমরা নজরুলের সাহিত্যকর্ম থেকেই পাই।
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর সমাধির পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কবি’র সমাধি প্রাঙ্গণে স্মরণসভায় অংশ নেন উপাচার্য।
স্মরণসভায় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম ‘চব্বিশের গণ অভ্যুত্থান: কাজী নজরুলের উত্তরাধিকার’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন। বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম (সিরাজ সালেকীন) অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন।
এ ছাড়াও কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউটসহ নানা সংগঠন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ নজর ল ইসল ম নজর ল ইসল ম উপ চ র য ন কর ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব