খুলনায় দুদকের গণশুনানিতে উঠে এসেছে অনিয়ম-দুর্নীতির বিভিন্ন চিত্র
Published: 25th, May 2025 GMT
অবসরোত্তর ছুটি (পিআরএল) শেষে আনুতোষিক পাওয়ার জন্য সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে এক লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বাসিন্দা বিনয় কৃষ্ণ বিশ্বাস। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরও কোনো কাজ হয়নি। ২৫ দিন আগে তিনি মারা গেছেন। রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) খুলনায় আয়োজিত গণশুনানিতে এমন অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী রত্না বিশ্বাস। মঞ্চে উঠে কথা বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অভিযোগকারী, সাক্ষী এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সব পক্ষের কথা শুনে দুদক কমিশনার বিষয়টি অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের উৎস–বহির্ভূত সম্পদেরও অনুসন্ধান হবে বলে গণশুনানিতে জানানো হয়।
খুলনা জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে দুদকের এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বো আগামীর শুদ্ধতা’ স্লোগান নিয়ে আয়োজিত গণশুনানিতে সরকারি–বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সেবামূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে হয়রানি, দুর্নীতি, অনিয়ম, ঘুষ নেওয়াসহ নানা অভিযোগের তোলেন সেবাগ্রহীতারা।
সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হয় দুদকের ওই গণশুনানি চলে বিকেল পর্যন্ত। বিভিন্ন দপ্তরের বিরুদ্ধে জমা পড়া ১৭২টি অভিযোগের মধ্যে দুদক আইনে উপস্থাপনযোগ্য ৫৯টি নিয়ে শুনানি হয়। অধিকাংশ অভিযোগ তাৎক্ষণিক সমাধান করা হয়। আর কয়েকটি অভিযোগ অনুসন্ধান করতে দুদককে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গণশুনানিতে হাফেজ মাওলানা জহুরুল ইসলাম খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সেবা নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালের একজন সুইপার তাঁর ছেলের ড্রেসিং করেন। এ বাবদ তিনি টাকা নিয়েছেন। প্রাইভেট ক্লিনিকের মতো প্রত্যেকবার টাকা দিতে হয়েছে।
এ ছাড়া খুমেক হাসপাতালে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য, অনুমোদনহীন অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পরিবহন, রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠানো, নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে বাধ্য করা, শয্যা পাইয়ে দিতে অনিয়ম, খাবারের নিম্নমানসহ একাধিক অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগীরা। হাসপাতালের এসব অভিযোগ শুনানির সময় উপস্থিত মানুষ হাসপাতালের সেবা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অভিযোগ শোনার পর দুদক কমিশনার বলেন, এখানে একজনও কিন্তু খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা নিয়ে খুশি না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আপনারা কথা দেন, আজ থেকে আপনারা অনিয়ম দূর করার চেষ্টা করবেন।
সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মো.
এ সময় দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী ডিসিএ কার্যালয়ের কর্মকর্তাকে উদ্দেশে বলেন, ‘জেলার সর্বোচ্চ বিচারক থাকার পরও অবসরের পর আমি নিজেও অনুভব করেছিলাম অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের কী পরিমাণ দুর্দশা। আপনারা এতটা অবজ্ঞা করিয়েন না। আমি পুরোপুরি ভুক্তভোগী। আজকের পাবলিক পারসেপশান তো শুনলেন। প্লিজ একটু সহমর্মী হোন।’
যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়, মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি), সড়ক ও জনপদ বিভাগ, জেলা পরিষদ, বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের (ডিসিএ) কার্যালয়, ওজোপাডিকো, বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড।
গণশুনানির প্রথম পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, ‘জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন হয়। যাঁদের টাকায় আমাদের বেতন হয়, আমরাই আবার তাঁদের প্রভু সেজে যাই। সরকারি কর্মচারীরা আল্লাহর দেওয়া যোগ্যতার সম্পূর্ণ ব্যবহার করে ইমানদারির সঙ্গে নাগরিকদের সেবা দিতে দায়বদ্ধ। যে সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করে, সে জ্ঞানত অন্যায় করতে পারে না।’
কমিশনার আরও বলেন, ‘আমরা নিজ নিজ অবস্থানে প্রত্যেকেই বিচারক। যদি আমরা আমাদের পরিবারে নিজের আয়ের চেয়ে বেশি উপহার বা তৈজসপত্র দিই, তবে সন্তানদের সামনে কীভাবে জবাবদিহি করব। আমরা নিজে সৎ থাকব এবং পরিবারবর্গকে সৎপথে রাখব। আমরা সবাই দুর্নীতি বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একই সঙ্গে মানসম্মত সেবা প্রদানের নিশ্চয়তাও দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ বলেন, ‘শুনতে খারাপ লাগলেও এটা বাস্তব যে একে অপরের হক মেরে খাওয়ার কুসংস্কৃতি বাংলাদেশের মতো পৃথিবীর আর কোথাও নেই। আমরা শোষিত হই আমাদের নিজেদের দ্বারা। দুর্নীতি এখন রাজনৈতিক নেতা–কর্মী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় মাস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, দুর্নীতি এখন ঘরে ঘরে, পাড়ায় পাড়ায় সমস্ত জায়গাব্যাপী। গত ১৬ বছর দুর্নীতির চাষাবাদ হয়েছে এই দেশে।’
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক, মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণশ ন ন ত কর মকর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তত্ত্বাবধায়ক সরকারযুক্ত সংবিধানই জনগণ চায়
ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যুক্ত হয়েছিল সংবিধানে, তা–ই জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে আপিল বিভাগে এ–সংক্রান্ত শুনানিতে বলেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল–পরবর্তী নির্বাচনগুলোর চিত্র দেখিয়ে জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন এবং ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে হয়েছে—দেশের জনগণ এমন বিতর্কিত কোনো নির্বাচন হোক, তা চায় না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের ওপর আজ রোববার ষষ্ঠ দিনের মতো শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বেঞ্চে বিএনপি মহাসচিবের আপিল–সংক্রান্ত শুনানি করেন জয়নুল আবেদীন।
সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। বেলা ১১টা থেকে মাঝে বিরতি দিয়ে ১টা পর্যন্ত শুনানি চলে। পরবর্তী শুনানির জন্য মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দিন রাখা হয়েছে। এদিন বিরতির পর শুনানি শুরুর আগে প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের অপর বিচারপতিদের সঙ্গে এজলাসে আসেন বাংলাদেশে সফররত নেপালের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত। বিচারপতিদের সঙ্গে এজলাসে বসে এই শুনানি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেই একটি আলোচিত বিষয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি সরকার সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারব্যবস্থা শাসনতন্ত্রে যুক্ত করেছিল। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার দুই বছর পর সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনে এই ব্যবস্থা বাতিল করে। তার আগে সর্বোচ্চ আদালতের এক রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
ওই রায়ের ক্ষেত্রে দেশের প্রচলিত আইন ও আপিল বিভাগের রুলসের ব্যত্যয় ঘটেছে দাবি করে শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘রায়ে সইয়ের আগেই তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার, সংসদ তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে সংবিধান সংশোধন (পঞ্চদশ সংশোধনী) করে। পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা ও স্বাক্ষরের (বিচারপতিদের রায়ে সই করা) আগে সরকার সংসদ তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের বলে তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করে, যা দেশবাসীর জানা। দেশের বিবেকবান মানুষ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগে এই সংবিধান সংশোধনকে সরকারের হীন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করেছিল। এটি জনগণের বিরুদ্ধে বড় ষড়যন্ত্র।’
বিএনপির একসময়ের আইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন শুনানিতে বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করেছেন। সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে বহাল রাখার লক্ষ্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি (বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক) দেশের প্রচলিত আইন ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রুলস যথাযথভাবে অনুসরণ না করে সর্বশেষ (পূর্ণাঙ্গ রায়) রায় দেন, যা প্রথমে দেওয়া রায়ের (শর্ট অর্ডার সংক্ষিপ্ত রায়) সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।’
শুনানিতে অবসরের পর রায়ে সই প্রসঙ্গ
অবসরের পর কোনো বিচারপতি রায়ে সই করলে তার আইনগত মূল্য কী হবে—এ প্রসঙ্গ ওঠে শুনানিতে। বিরতির পর শুনানিতে অংশ নিয়ে এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিবের অপর আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, রায় ঘোষণা ও রায়ে সই করা দুটি ভিন্ন বিষয়। রায় ঘোষণার সময় এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতির পদে আসীন ছিলেন। সংক্ষিপ্ত রায়ে যা ছিল, পূর্ণাঙ্গ রায়ে তা পরিবর্তন করা হয়েছে।
দেওয়ানি কার্যবিধি, আপিল বিভাগের রুলস ও সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘শর্ট অর্ডারের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ে যে পার্থক্য, তা পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করেছেন একজন বিচারপতি। এই বিচারপতিও বলেননি অবসরের পরে বিচারপতি খায়রুল হকের লেখা রায়টি অবৈধ হয়েছে। স্বাক্ষর পরে করেছেন বলে রায় অবৈধ বলা যাবে না। কারণ, অবসরের পর কোনো বিচারপতি রায়ে সই করতে পারবেন না কিংবা কত দিনের মধ্যে সই না করলে সেটি অবৈধ হবে, এমন বাধ্যবাধকতা আইনে নেই।’
রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘প্রকাশ্য আদালতে কোনো বিচারপতি যখন কোনো রায় দেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে দিলে ছোটখাটো দাড়ি, কমা, শব্দ বাদ পড়েছে—এগুলো ছাড়া যেকোনো পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই সেটি রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) ছাড়া হবে না, যার ওপর শুনানি চলছে।’
এ মামলায় সেন্টার ফর ল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি নামের একটি সংগঠন ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়। ওই প্রসঙ্গে সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক বলেন, ‘অবসরের পর রায়ে সই করলে তা বাতিল বা অকার্যকর হবে না। যেদিন প্রকাশ্য আদালতে রায় ঘোষণা করলেন, সেই তারিখ হচ্ছে মূল। এটি হচ্ছে রায়ের তারিখ। কবে সই করলেন, এটি প্রাসঙ্গিক নয়। আপিল বিভাগের রুলসে বলা আছে, এ ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির (সিপিসি) বিধান কার্যকর হবে না। আপিল বিভাগের জন্য সিপিসি প্রযোজ্য নয়।’
মামলার পূর্বাপর
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আপিল বিভাগের ২০১১ সালের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ও নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন পৃথক আবেদন (রিভিউ) করেন। সেন্টার ফর ল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি ইন্টারভেনার (পক্ষ) হিসেবে যুক্ত হয়।
রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর (আপিলের অনুমতি) করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বিএনপির মহাসচিবের করা রিভিউ আবেদন থেকে উদ্ভূত আপিলের সঙ্গে অপর রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য যুক্ত হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়। এ অনুসারে পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির করা আপিলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলের করা রিভিউসহ অপর রিভিউ আবেদন এবং বিএনপির মহাসচিবের আপিল শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে।
পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তির করা আপিলের ওপর ২১ অক্টোবর শুনানি শুরু হয়। এরপর ইন্টারভেনার হিসেবে যুক্ত সংগঠনের পক্ষে শুনানি করেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। এরপর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেলের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম বদরুদ্দোজা বাদল এবং এ এস এম শাহরিয়ার কবির শুনানি করেন। শাহরিয়ার কবিরের বক্তব্য উপস্থাপনের পর হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (রিভিউ আবেদনকারী) পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক শুনানি করেন। এরপর বিএনপির মহাসচিবের পক্ষে জয়নুল আবেদীন শুনানি শুরু করেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক বছর পর গত আগস্টে বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেপ্তার হন। তিনি এখন কারাগারে রয়েছেন।