নালিতাবাড়ী সীমান্তে ৬ বসতঘর ভেঙে ধান-চাল খেয়ে গেল বন্য হাতির দল
Published: 27th, May 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ছয়টি বসতঘর ভেঙে ঘরে থাকা সদ্য তোলা বোরো ধান ও চাল খেয়ে গেছে ৩৫ থেকে ৪০টি বন্য হাতির দল। আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার বুরুঙ্গা-কালাপানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় শেরপুর ও নালিতাবাড়ীর বন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এ সময় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার ও বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে হাতির দলটি বন বিভাগের বাতকুচি বিট কার্যালয়ে হানা দেয়। তখন ঘরের আসবাব তছনছ করে বুরুঙ্গা-কালাপানি জঙ্গলে চলে যায় দলটি। আজ ভোরে হাতির দল বুরুঙ্গা-কালাপানি গ্রামে হানা দেয়। এ সময় গ্রামের শাহীন মিয়া, সুফিয়া বেগম, সাফিকুল ইসলাম, হাসনা ভানু, মাজেদা খাতুন ও শহর ভানুর বসতঘরের টিন ভেঙে ঘরে থাকা ১৬০ মণ ধান ও ৩০ মণ চাল খেয়ে ফেলে। হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে ছয় পরিবারের লোকজন দ্রুত সরে পড়েন। সূর্য ওঠার আগেই হাতির দলটি আবার বরুঙ্গা-কালাপানি সীমান্তবর্তী জঙ্গলে চলে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানান, তখন সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। টিনে হাতির আঘাতের শব্দে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। পরে ৩৫ থেকে ৪০টি হাতির উপস্থিতি দেখে তাঁরা ভয়ে বাড়ির পেছন দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে যান। এ সময় হাতির দল ছয় পরিবারের ঘরের বেড়ার বিভিন্ন অংশ ভেঙে ঘরে থাকা ধান–চাল সাবাড় করে দেয়।
বুরুঙ্গা-কালাপানি গ্রামের গৃহিণী মাজেদা খাতুন বলেন, ‘ঘুমের ঘোরে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে বাড়ির উঠানে ৩০ থেকে ৪০টি হাতির পাল দেখতে পাই। ভয়ে ছেলেমেয়ে লইয়া বাড়ির পিছন দিয়া সইরা গেছি। পরে ঘরের টিন ভাইঙা বস্তায় থাকা ২০ মণ ধান ও ড্রামে থাকা ৬ মণ চাল খাইয়া শেষ কইরা দিছে। অহন সংসার কেমনে চলব এই লইয়া দুশ্চিন্তায় আছি।’
খবর পেয়ে আজ সকালে শেরপুর বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শাহিন কবির ও মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলীসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন।
রেঞ্জ কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত বন ব ভ গ হ ত র দল পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
ভাবিকে হত্যার সাজা খেটে বাড়ি ফিরেছিলেন, এবার ভাতিজিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার
বরগুনার তালতলী উপজেলায় ছয় বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে তার চাচাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ইদুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম নাহিল আক্তার। সে ওই গ্রামের বাসিন্দা দুলাল খানের মেয়ে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম হাবিব খান (২৭)। তিনি দুলালের ছোট ভাই ও নাহিলের চাচা।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে দোকানে বিস্কুট আনতে যাচ্ছিল নাহিল। এ সময় শিশুটিকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন তার চাচা হাবিব খান। এতে শিশুটির মাথা ও হাত গুরুতর জখম হয়। এ অবস্থায় স্বজনেরা তাকে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বরিশালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় নাহিলের মৃত্যু হয়। পুলিশ রাতেই মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ওই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা হাবিবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। এর আগে ২০১৫ সালে বড় ভাই দুলাল খানের প্রথম স্ত্রী তানিয়া বেগমকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হাবিবের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় শিশু আইনে তাঁর কারাদণ্ড হয়। গত বছরের প্রথম দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান হাবিব। এবার তাঁর বিরুদ্ধে দুলালের দ্বিতীয় স্ত্রী ফাহিমা আক্তারের মেয়ে নাহিলকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
এ সম্পর্কে দুলাল খান বলেন, ‘হাবিব আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। ২০১৫ সালে আমার প্রথম স্ত্রীকে হত্যা করে। তখন ওর বয়স ছিল ১৭ বছর। হাজত খেটে সে বাড়ি ফিরে এসেছে। এর দেড় বছরের মাথায় আমার মেয়েকেও পিটিয়ে হত্যা করল। আমি হাবিবের ফাঁসি চাই।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, শিশুটিকে হত্যার ঘটনায় হাবিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। শিশুটির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা দুলাল খান বাদী হয়ে হাবিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।