ফেনীর ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে কাজ করতে গিয়ে ‘পুশ ইন’ হওয়া ৩৯ বাংলাদেশিকে নিজ নিজ জেলায় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে উপজেলা প্রশাসন। তাঁদের অধিকাংশই কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার বাসিন্দা।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, সীমান্তবর্তী ভারত থেকে পুশ ইনের পর আটক হওয়া ২৭ জন গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল। ফুলগাজী পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের একটি কক্ষে পাঁচ দিন অবস্থান শেষে গতকাল সোমবার বিকেলে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ফুলগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বলেন, আটক ২৭ জনের মধ্যে ২৫ জন কুড়িগ্রাম ও ২ জন গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা। প্রত্যেকের পরিচয় শনাক্ত শেষে নিজ নিজ উপজেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অন্যদিকে ছাগলনাইয়া উপজেলা সীমান্তে পুশ ইন হওয়া ১২ বাংলাদেশি নাগরিককে গত রোববার বিকেলে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবল চাকমা বলেন, পুশ ইনের পর থেকে তাঁদের পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। কুড়িগ্রামে দায়িত্বরত সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশ ওই ১২ জনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। পরে স্বজনের উপস্থিতিতে আটক ব্যক্তিদের কুড়িগ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিরা পুলিশকে জানান, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজের সন্ধানে তাঁরা কোনো ধরনের কাগজপত্র ছাড়া স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে ভারতে চলে যান। ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের খরগোদায় ইটভাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেখানে ইটভাটার মালিকের কাছে বেতন চাইলে বাংলাদেশে পাঠানোর হুমকি দেওয়া হতো এসব শ্রমিককে।

উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশ সূত্র জানায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ২২ মে ভোররাতে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা সদর ইউনিয়নের পূর্ব সীমান্তের খাজুরিয়া এলাকা দিয়ে ১২ জন, পশ্চিম সীমান্তের নোয়াপুর এলাকা দিয়ে ৮ জন ও গাবতলা এলাকা দিয়ে ৭ জনকে পুশ ইন করে। এ সময় বিজিবির ৪ ফেনী ব্যাটালিয়ন ও ১০ কুমিল্লা ব্যাটালিয়নের আওতাধীন টহল দলের সদস্যরা ২৭ জনকে আটক করেন। পরবর্তী সময়ে আটক ব্যক্তিদের ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। একই দিন বিএসএফ বাংলাদেশের ছাগলনাইয়া উপজেলার মটুয়া সীমান্তে ১২ জনকে পুশ ইন করে। পরে বিজিবি তাঁদের আটক করে ছাগলনাইয়া থানায় হস্তান্তর করে। তাঁদের মধ্যে ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী অন্তত ১০টি শিশু ভারতে জন্মগ্রহণ করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত প শ ইন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট

অবিরাম বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসছে ঢলের পানি। সেইসঙ্গে পানি বাড়ছে পাবনার পদ্মা নদীতে। এতে ভাঙন দেখা দিয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে। ভাঙনের মুখে হুমকির মুখে পড়েছে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট। 

ইতিমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বেশকিছু এলাকা। তীব্র ভাঙনের ফলে বসতবাড়ি হারানোর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটের পূর্ব পাশের ফেরি পল্টনের নিচ থেকেই পাড় ভেঙে নদীতে পড়ছে। ফেরিঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত এই ভাঙন চলছে। ফেরির মেইন প্লাটুনের মাত্র কয়েক হাত দূর থেকে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর তীর ঘেঁষে কয়েক গজ দূরেই বসতি নদীর পাড়ের বাসিন্দাদের। অব্যাহত ভাঙন দেখে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হারানোর আতঙ্ক ভর করেছে তাদের মাঝে।

নদীপাড়ের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম ও আবুল কাশেম শেখ বলেন, ‘‘নদীর পশ্চিম পাশে বড় বড় ব্লক দিয়ে নদীর তীর রক্ষা করা হয়েছে। অথচ পূর্বপাশে কোনো ধরনের ব্লক নেই। কয়েক বছর ধরেই ভাঙছে। এবারের ভাঙনটা তীব্র মনে হচ্ছে। আর কয়েকদিন গেলে হয়ত আমাদের ঘর-বাড়ি নদীতে চলে যাবে। তারপরও কেউ দেখার নেই। আমরা মাথা গোজার ঠাঁইটুকুও হারাতে যাচ্ছি। আমরা কিছুই চাই না, শুধু নদীর তীর রক্ষা চাই।”

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে নদী শাসন না করা এবং নদী রক্ষায় অন্যান্য ব্যবস্থা না নেওয়ার ফলেই এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও ঘাটের দুই পাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে একাধিক অবৈধ ও যত্রতত্র বালু উত্তোলন করা হয়। অপরিকল্পিতভাবে এই বালু উত্তোলনের কারণেও এই ভাঙন হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

নাজিরগঞ্জ ফেরি ঘাটের এই অবস্থার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নাজিরগঞ্জ ঘাটের পোর্ট অফিসার তোফাজ্জল হোসেন।

তিনি বলেন, “'চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালে আমাদের ঘাটের জমি বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো ইউএনও বা ডিসি সাহেব আমাদের সেটা দেননি। এজন্য আমরা ঘাটের কোনো উন্নয়ন করতে পারছি না। এভাবে আর কিছুদিন গেলে তো আমার ঘাটই নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে। বাধ্য হয়ে আমি আমাদের কোটি টাকার পল্টন সরিয়ে নিতে বাধ্য হব।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, “নদী ভাঙনের বিষয়ে আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’’

স্থানীয়দের কিছু আপত্তির কারণে তাদেরকে (বিআইডব্লিউটিএ) জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি বলে জানান ইউএনও।

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুরান ঢাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড: নিরাপত্তাহীনতায় লাল চাঁদের পরিবার, বাড়িতে মাতম
  • ১৯ বছরে স্মৃতিস্তম্ভ না হওয়ায় ক্ষোভ এলাকাবাসীর
  • হিমাগার মালিকদের সিন্ডিকেট অসহায় আলু চাষি-ব্যবসায়ীরা
  • ভয়, আতঙ্ক আর ক্ষোভ নিয়ে সোহাগের দাফন বরগুনায়
  • অদম্য লিতুন জিরার বাড়িতে ইউএনও
  • ইউএনও আসার খবরে কনে বদল, পালালেন বর
  • স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে মাটি ফেটে বের হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত ধোঁয়া, কৌতূহলের পাশাপাশি শঙ্কা
  • এনসিপি নেতার বিরুদ্ধে ‘স্ত্রী’র যত অভিযোগ
  • ‘টাকা নাই জীবন নাই’ নামের আইডি থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হতো
  • পদ্মার ভাঙনে হুমকির মুখে পাবনার নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাট