ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠনকে নিষিদ্ধের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যে বিক্ষোভ
Published: 12th, July 2025 GMT
ফিলিস্তিনপন্থী সংগঠন প্যালেস্টাইন অ্যাকশনকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় যুক্তরাজ্যে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা অনলাইন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ আইনের অধীনে প্যালেস্টাইন অ্যাকশন গ্রুপকে নিষিদ্ধ করে। এর প্রতিবাদে গত সপ্তাহে পার্লামেন্ট স্কোয়ারে মহাত্মা গান্ধীর মূর্তির কাছে বিক্ষোভ হয়। সেখানে জড়ো হওয়া ২৯ জন ব্যক্তিকে মেট্রোপলিটন পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। এদের মধ্যে ৮৩ বছর বয়সী সাবেক ধর্মযাজক রেভ সু পারফিটও ছিলেন।
প্রচারণা গোষ্ঠী ডিফেন্ড আওয়ার জুরিস শনিবার যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি শহরে ‘নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার জন্য’ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার কিছু পরে বিক্ষোভকারীদের দুটি ছোট দল পার্লামেন্ট স্কোয়ারে বিক্ষোভ করে। লন্ডন পুলিশ ‘৪০ জনেরও বেশি’ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিফেন্ড আওয়ার জুরিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, “মেট্রোপলিটন পুলিশ আজ আবারো সক্রিয় ছিল, গণহত্যার বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিন পদক্ষেপকে সমর্থন করার জন্য পার্লামেন্ট স্কোয়ারে ৪০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর য ক তর জ য
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাবেন, নিয়ম কী বলছে
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। নোবেল কমিটির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে এ মনোনয়ন দিয়েছেন তিনি। সেই চিঠি অনলাইনেও প্রকাশ করেছেন।
চিঠিতে নেতানিয়াহু লিখেছেন, ‘ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় ও ব্যতিক্রমধর্মী অঙ্গীকার প্রদর্শন করেছেন।’
নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মাননা বলে বিবেচিত হয়। মানবজাতিকে সম্প্রীতির পথে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়।
১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ছয়টি বিভাগে এ পুরস্কার দেওয়া হয়, যার একটি শান্তি।
ট্রাম্প গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন। গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তান সংঘাতে জড়িয়ে ছিল। চার দিনব্যাপী লড়াইয়ের পর দুই দেশ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর মধ্যস্থতায় দেশ দুটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
নোবেল পুরস্কার বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সম্মাননা বলে বিবেচিত হয়। মানবজাতিকে সম্প্রীতির পথে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে শান্তিতে নোবেল দেওয়া হয়।গত মাসে পাকিস্তান বলেছিল, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত নিরসনে সহায়তার জন্য তারা ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার জন্য সুপারিশ করবে।
আগেও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। সেবার তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কও হয়েছিল। এবারও নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে মনোনয়ন দেওয়ার ঘটনায় বিভিন্ন মহলে বিতর্ক হচ্ছে।
এ নিয়ে কোনো ধরনের রাখঢাক না করে সুইডেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কার্ল বিল্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘নেতানিয়াহু প্রকৃতপক্ষে ট্রাম্পকে তোষামোদ করছেন।’
ট্রাম্পকে তোষামোদ করে নেতানিয়াহু যে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করছেন, সে বিষয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই। ট্রাম্পকে এমন তোষামোদ করতে চাওয়া মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়।
বাস্তবে যে কেউ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন। এ পুরস্কারের ইতিহাসে দেখা যায়, এটি বিশ্বের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকেই দেওয়া হয়।জোরগেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস, নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যানট্রাম্প যদি সত্যি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়ে যান, তবে তিনি হবেন এ সম্মান পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম প্রেসিডেন্ট। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট, উড্রো উইলসন, জিমি কার্টার ও বারাক ওবামা শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এর মধ্যে একমাত্র জিমি কার্টার নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ছিলেন না।
এ প্রেসিডেন্টদের সবার ক্ষেত্রেই নোবেল পুরস্কার পাওয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়েছিল। ওবামা তো ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
কারা নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য, সে বিষয়ে সুইডিশ নোবেল ফাউন্ডেশনের সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। কোন নিয়মে বিজয়ী বেছে নেওয়া হয়, তা–ও স্পষ্ট করে বলা আছে। সেসব বিবেচনায় ট্রাম্প আসলেই কি শান্তিতে নোবেল পাওয়ার যোগ্য—উঠেছে এমন প্রশ্ন।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে থাকা পরিচিতিতে শান্তি পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান জোরগেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস বলেছেন,‘বাস্তবে যে কেউ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন। এ পুরস্কারের ইতিহাসে স্পষ্টভাবে দেখা যায়, এটি বিশ্বের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকেই দেওয়া হয়।’
নোবেল শান্তি পুরস্কারে অনেক সময়ই একটি রাজনৈতিক বার্তা থাকে। নোবেল কমিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পুরস্কারপ্রাপ্ত কয়েকজন ছিলেন ‘অত্যন্ত বিতর্কিত রাজনৈতিক ব্যক্তি’। তবে এ পুরস্কার আন্তর্জাতিক কিংবা জাতিগত সংঘাতের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।সেই বিচারে ট্রাম্প তো শান্তিতে নোবেল পেতেই পারেন। কিন্তু আসলেই কি তা-ই?
প্রতিবছর অক্টোবর মাসে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে মনোনয়নপ্রক্রিয়া এর আগেই, অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে বন্ধ হয়ে যায়।
এর মানে, নেতানিয়াহু পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পকে যে মনোনয়ন দিয়েছেন, সেটা অন্তত এ বছরের জন্য আর বিবেচনায় নেওয়া সম্ভব নয়।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়ে লেখা চিঠির একটি কপি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে তুলে দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ৭ জুলাই, ওয়াশিংটনে