সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি
Published: 12th, July 2025 GMT
বিপুলসংখ্যক নারী রাজনীতিতে এলেও তাঁরা জাতীয় সংসদে মনোনীত হয়ে আসেন। ফলে তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকেন। এখন সময় এসেছে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীকে প্রতিষ্ঠিত করার। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠায় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন এক-তৃতীয়াংশ করতে হবে এবং সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পল্টন মোড় পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে জাতীয় সংসদে মোট আসন ৩৫০টি। এর মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান আলোচনায় নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ১০০ করার বিষয়ে বেশির ভাগ দল নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। কিন্তু এসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের বিরোধিতা করছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, কাউকে পেছনে রেখে গণতন্ত্রকে অগ্রসর করা যায় না। তাই নারী সমাজের দাবি, সংসদে নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন এক-তৃতীয়াংশ বাড়াতে হবে। সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচন করতে হবে।
ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, পশ্চাৎপদ অংশকে এগিয়ে নিতে সুযোগ প্রয়োজন। নারীকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নারী আন্দোলনের দাবিকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানুষের কণ্ঠস্বরকে বুঝতে হবে। বর্তমানে ভয়ভীতি দেখিয়ে নারীদের অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া নারী সমাজকে কোনো ভয়ভীতি দেখিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।
সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বিপুলসংখ্যক নারী রাজনীতিতে এলেও তাঁরা সংসদে মনোনীত হয়ে আসেন। তাঁরা তাঁদের রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নারীকে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
আরও পড়ুনসংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে ১০০ করার পক্ষে বিএনপি০৩ জুন ২০২৫মালেকা বানু আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে ভাবতে হবে, তারা কীভাবে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের করবে এবং সমতা প্রতিষ্ঠা করবে। এ বিষয়ে কেবল রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিশ্রুতি দিলেই হবে না, তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আন্দোলন সম্পাদক ও বেলাবো জেলা শাখার সভাপতি রাবেয়া খাতুন শান্তি, সংগঠনের প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি রীনা আহমেদ, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও টঙ্গী শাখার সভাপতি আনোয়ারা বেগম এবং নারী শ্রমিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ও মহিলা পরিষদের সদস্য সাহিদা পারভীন শিখা। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।
সমাবেশ ও শোভাযাত্রায় গণসাক্ষরতা অভিযান, কর্মজীবী নারী এবং নারী শ্রমিক কেন্দ্রের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র র জন ত ক স রক ষ ত
এছাড়াও পড়ুন:
সখীপুরে স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
টাঙ্গাইলের সখীপুরে জিহাদ (১০) নামের এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তুচ্ছ ঘটনায় মায়ের বকুনি খেয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে জিহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জিহাদ ওই এলাকার প্রবাসী আনিস মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।
জিহাদের চাচাত ভাই জনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে একই বয়সের চাচাত ভাইয়ের সঙ্গে জিহাদের ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে জিহাদের মা তাকে বকাঝকা করেন। এরপর সে দৌড়ে নিজের ঘরে যায়। রাত ৮টার দিকে ওই ঘরে ঢুকে জিহাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জিহাদের মা বিলাপ করছেন। স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আরিফুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, “ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি বর্তমান সময়ে যারা বাবা-মা আছেন, তাদের জন্য শিক্ষণীয়। শিশুর প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, এ বিষয়ে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশকে তা জানানো হয়েছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেছেন, মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/কাওছার/রফিক