ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান আলোচনায় বাধা এসেছে। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের প্রস্তাবের কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনার বিষয়ে জানাশোনা আছে—এমন দুটি ফিলিস্তিনি সূত্র আজ শনিবার এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে গত রোববার থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় পরোক্ষভাবে আলোচনা চালিয়ে আসছে হামাস ও ইসরায়েল। সম্প্রতি দুই পক্ষই জানায়, উপত্যকাটিতে ৬০ দিনে যুদ্ধবিরতিতে ঐকমত্য হলে গাজায় বন্দী থাকা জীবিত ১০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এরই মধ্যে আলোচনায় বাধার বিষয়টি সামনে এল।

ফিলিস্তিনি একটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের শর্ত রয়েছে। তবে গত শুক্রবার ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যে মানচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে, তা আসলে সেনা প্রত্যাহারের নয়; বরং এটি ইসরায়েলি সেনাদের গাজায় নতুন করে মোতায়েন এবং তাঁদের অবস্থান নতুন করে সাজিয়ে নেওয়ার একটি মানচিত্র।

হামাস ইসরায়েলের এই মানচিত্র মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। সূত্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস এই মানচিত্রগুলো মেনে না নেওয়ার কারণ হলো, সেগুলো মূলত গাজার প্রায় অর্ধেক এলাকা পুনর্দখলের বৈধতা দেয়। একই সঙ্গে গাজা থেকে বের হওয়া বা প্রবেশ করা এবং স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দেওয়া ছাড়াই উপত্যকাটিতে বিচ্ছিন্ন একটি অঞ্চলে পরিণত করবে।

এমন পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারীরা দুই পক্ষকেই আলোচনা স্থগিত রাখতে বলেছে। সূত্র জানিয়েছে, দোহায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সফরের আগপর্যন্ত আলোচনা স্থগিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এদিকে দ্বিতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজায় আরও বেশি পরিমাণে ত্রাণ সরবরাহের বিষয়ে আলোচনায় ‘কিছু অগ্রগতি’ এসেছে।

দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানে জাতিসংঘে আলোচনা

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১২ জন নিহত হন। দেশটি থেকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় আড়াই শ জনকে। সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলের চলমান হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার জন।

এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের তৎপরতা আবার শুরু করতে চায় জাতিসংঘ। জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে এএফপি জানতে পেরেছে, ওই সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ ও ২৯ জুলাই।

আরও পড়ুন‘ওরা তো শুধুই বাচ্চা ছিল’: ইসরায়েলি হামলায় নিহত ছেলের শোকে কাতর মা৪ ঘণ্টা আগে

এই সম্মেলনের আহ্বান করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। আর যৌথভাবে সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছে ফ্রান্স ও সৌদি আরব। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য সফরের সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ লন্ডন ও প্যারিসকে যৌথভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপই মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে ক্ষেত্রে একমাত্র আশার আলো।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

সাড়া ফেলেছে আফগান ট্যাক্সি চালকদের তৈরি করা এয়ার কুলার

আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার শহরে তাপমাত্রা নিয়মিতভাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত গরমে দীর্ঘসময় চালানোর কারণে গাড়ির ভেতরে থাকা এয়ার কন্ডিশনিং ইউনিটগুলো প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণ পেতে আফগান ট্যাক্সি চালকরা নিজেরাই তৈরি করেছেন এয়ার কুলিং সিস্টেম। গাড়ি শীতলীকরণের এই ব্যবস্থা সাড়া ফেলেছে পুরো আফগানিস্তানে।

আব্দুল বারী নামে একজন চালক এএফপি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, “এটি (বিল্ট-ইন) এসির চেয়ে ভালো কাজ করে। এসি কেবল সামনের অংশকে ঠান্ডা করে। এই কুলারটি গাড়িজুড়ে বাতাস ছড়িয়ে দেয়।”

এএফপির একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আব্দুল বারী স্টিকি টেপ ব্যবহার করে কুলারের এক্সহস্ট ভেন্টটি ট্যাক্সির জানালায় সংযুক্ত করছেন। এসময় একজন সহকারী ট্যাক্সির উপরে উঠে ইউনিটের বডি ঠিক করছেন।

এই সেটআপের একমাত্র সমস্যা হল দিনে দুবার ইউনিটে ম্যানুয়ালি পানি রিফিল করার প্রয়োজন।

তিনি বলেন, “এরপরেও এটি আমার জন্য ভালো কাজ করে।”

বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম আফগানিস্তান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। আগামী সপ্তাহগুলোতে দেশের বেশিরভাগ অংশে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে সরকার সতর্ক করেছে।

কান্দাহারের আরেক ট্যাক্সি ড্রাইভার গুল মোহাম্মদ জানান, তিনি কয়েক বছর আগে আবহাওয়া ‘অত্যন্ত গরম’ হতে শুরু করায় এই কাস্টমাইজড কুলারগুলোর দিকে ঝুঁকেছিলেন। এই গাড়িগুলোর এসি সিস্টেমগুলি কাজ করেনি এবং মেরামতগুলি খুব ব্যয়বহুল ছিল। 

তিনি বলেন, “তাই আমি একজন টেকনিশিয়ানের কাছে গিয়েছিলাম, (এবং) একটি কাস্টম কুলার তৈরি করিয়েছিলাম। এতে তিন হাজার আফগানি (৪৩ মার্কিন ডলার) খরচ হয়েছিল।”

যাত্রীরা অবশ্য এই সৃজনশীল সমাধানের প্রশংসা করেছেন।

১৯ বছর বয়সী নুরুল্লাহ বলেন, “যখন কোনো কুলার থাকে না, তখন পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে পড়ে।”


 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাড়া ফেলেছে আফগান ট্যাক্সি চালকদের তৈরি করা এয়ার কুলার
  • বলুনতো বাড়িটি কিসের তৈরি?
  • ধানের তুষ দিয়ে বানানো বাড়ি