তামিমকে ফারুকের ‘ধন্যবাদ’, এরপর কি বিসিবিতে
Published: 11th, January 2025 GMT
এমন বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুব বেশি ক্রিকেটারের নেই। নির্দিষ্ট করে বললে তামিমের তুলনা হতে পারে কেবল সাকিব আল হাসানের সঙ্গেই। সেই তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাল রাত থেকেই অতীত এক নাম। বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশে নিভে গেল এক জ্বলজ্বলে তারকা।
তামিমের এই বিদায়ী সময়ে সংগত কারণেই আসে একটা প্রশ্ন—বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন কোনো ভূমিকায় কি দেখা যাবে প্রায় দেড় যুগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা তামিমকে? ক্রিকেট ধারাভাষ্যে তাঁর অপার সম্ভাবনা। সঙ্গে এ–ও জানা গেছে, তামিমের সবচেয়ে বড় ইচ্ছা দেশের ক্রিকেট প্রশাসনে সম্পৃক্ত হওয়া। তবে এ ব্যাপারে তামিমের মুখ থেকে এখনো কিছু শোনা যায়নি।
তামিমের বয়স প্রায় ৩৬ হয়ে গেছে। ক্যারিয়ারের দিগন্তে এসে যা হয়, মাঠের খেলা চালিয়ে যেতে তাঁর লড়াই ছিল ফিটনেস আর ফর্মের সঙ্গে। বাংলাদেশের ক্রিকেট একসময় যে তামিমকে নিয়ে সাহসী ভাবনা ভাবতে পারত, সে সময় গত হয়ে গিয়েছিল অনেক আগেই।
তবে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এই পড়তি সময়েও বাংলাদেশের ক্রিকেট অপেক্ষায় ছিল তামিমের। ব্যাটসম্যান বা ওপেনার তামিমের অস্তিত্বটা এখানেই আরেকবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেড় বছরের বেশি সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে থাকার পরও এটা বলার উপায় নেই যে এই দীর্ঘ সময়ে আর কোনো ওপেনার তামিমের জায়গা নিতে পেরেছেন। খেললে ওপেনিংয়ে এখনো তিনিই হতেন এক নম্বর পছন্দ।
কিন্তু সে সম্ভাবনা আর নেই। কাল রাতে তামিম ফেসবুক পোস্টে জানিয়ে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আর নয়। তাঁর অধ্যায় শেষ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসর সামনে রেখে বাংলাদশে দল বা বিসিবিকে আর দোদুল্যমানতায় রাখতে চাননি তিনি। বলে দিয়েছেন ‘বিদায়’।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ ক্রিকেট দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলছেন তামিম ইকবাল.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই জাতীয় সনদে ২৪ দলের সই
নানা অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সই হয়েছে নতুন রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে তৈরি এই সনদে শুক্রবার সই করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট। পাশাপাশি সনদে সই করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা।
তবে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা তরুণদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) অনুষ্ঠানে যায়নি, সনদে সইও করেনি। এ ছাড়া চারটি বাম দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ জুলাই সনদে সই করেনি। আর গণফোরাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও সই করেনি সনদে। অবশ্য দলগুলো চাইলে পরেও সনদে সই করতে পারবে।
এদিকে বেলা একটার দিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় দিয়ে একদল লোক অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের সরিয়ে দেয়। এরপর সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে পুলিশ ও ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ মধ্যে সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সরকার–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ অনুষ্ঠান করা যাবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নেন। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজও অনুষ্ঠান করার পক্ষে দৃঢ় থাকেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুপুরে সংঘর্ষের পর বিকেলে বৃষ্টি, কয়েকটি দলের অনুপস্থিতির মধ্যে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় শুরু হয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান। জুলাই জাতীয় সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরকে ‘নতুন বাংলাদেশের সূচনা’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যে ঐক্যে জুলাই সনদে সই হলো, এই ঐক্যের সুরই দেশকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবে। জুলাই জাতীয় সনদের মতো রাজনীতি ও নির্বাচনের বিষয়েও রাজনৈতিক নেতাদের বসে একটি সনদ তৈরি করার পরামর্শ দেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বিকেল সোয়া চারটার দিকে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় মঞ্চে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মঞ্চে আসেন প্রধান উপদেষ্টা ও ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। এরপর বিএনসিসি, স্কাউট সদস্যদের কুচকাওয়াজের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়।
বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ। তাঁর বক্তব্যের পর বিকেল পাঁচটার দিকে দলগুলোর প্রতিনিধি ও ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা সনদের অঙ্গীকারনামা অংশে সই করেন। মঞ্চে থাকা প্রতিটি দলের দুজন করে প্রতিনিধি সই করেন।
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এই অনুষ্ঠান হয়