২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক জার্নালে মৌলিক ও গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে আরো এক ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)।

২০২৩ সালে ৫৮৯টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ছিল পঞ্চম। এ বছর ৬৯০টির বেশি প্রবন্ধ প্রকাশ করে দেশে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

২০২২ সালে ৫৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে রাবির অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। তবে ২০২১ সালে ৭০৭টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এ বিদ্যাপীঠ। ১ হাজার ৫০০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে এবারও শীর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘স্কোপাস ডাটাবেইজ’ এর বিভিন্ন উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের গবেষণা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী ম্যাগাজিন ‘সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ’। সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত তথ্য থেকে এমনটা জানা গেছে।

এ বছর (২০২৪) বাংলাদেশ থেকে গবেষণা নিবন্ধসহ ১৫ হাজার ৪১৩টি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে। যা গত বছরে ছিল ১৩ হাজার ৩২৭টি, ২০২২ সালে ১২ হাজার ৮৪৩টি, ২০২১ সালে ১১ হাজার ৪৭৭টি গবেষণা প্রবন্ধ। ২০২০ সালে ৮ হাজার ১৪০টি, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৩৬৩টি ও ২০১৮ সালে ছিল ৫ হাজার ২৩৪টি গবেষণা প্রবন্ধ।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ১৩০টির বেশি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে। ৮৮০টির বেশি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশ করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

বৈজ্ঞানিক প্রকাশনার র‍্যাঙ্কিংয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি পঞ্চম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ষষ্ঠ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সপ্তম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অষ্টম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) নবম ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) দশম অবস্থানে আছে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশি গবেষকদের প্রকাশনার প্রধান বিষয়গুলো ছিল প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এটা তো আমাদের জন্য ভালো খবর। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা আরো বেশি পটেনশিয়াল। আমরা যদি আরেকটু চেষ্টা করি, আরো ভালো করতে পারব।”

তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ হয় না। এছাড়া যারা দক্ষ ছিল, তারাও অবসরে চলে গেছেন। ফলে আমরা কিছুটা পিছিয়ে গেছি। আমরা এ জায়গাগুলোতে জোর দিব। আশা করছি আমরা আরো এগোতে পারবো।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যবসা-বাণিজ্যে কমলেও ভোক্তাঋণে বড় প্রবৃদ্ধি কেন

দেশের ব্যাংক খাতে পুরোনো ঋণ কমবেশি পরিশোধ হচ্ছে, কিন্তু নতুন ঋণ বিতরণ কমে গেছে। বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য, নির্মাণ ও পরিবহনসহ প্রায় সব উৎপাদনমুখী খাতে ব্যাংকঋণের স্থিতি কমেছে। এতে বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বহু কারখানা বন্ধ হয়েছে। ফলে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর শেষে সব মিলিয়ে চলতি বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

তবে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলোর অবস্থা খারাপ হলেও ভোক্তা ঋণ বাড়ছে দ্রুতগতিতে। গত জুনে ভোক্তা ঋণে ২৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মানুষ সংসার চালাতে ব্যক্তিগত ঋণের ওপর নির্ভর করছেন, পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডে ব্যয়ও বাড়ছে। গাড়ি ও বাড়ি কেনার ঋণেও কিছুটা প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

এ নিয়ে ব্যাংকাররা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কেউ বলছেন ভোক্তাঋণে খেলাপির হার তুলনামূলক কম, তাই ব্যাংকগুলো এই খাতে নজর বাড়িয়েছে। ফলে ব্যক্তিগত ঋণ ও ক্রেডিট কার্ডে ঋণ বাড়ছে নিয়মিত। আবার কেউ মনে করেন, ঋণ বাড়ার পাশাপাশি আদায় না হওয়ায় স্থিতি বেড়েছে। আগের নিয়মে দুই বছর খেলাপি না হলে ঋণ অবলোপন করা যেত না, এখন তা করা যাচ্ছে। এতে হিসাবের স্থিতি বাড়লেও প্রবৃদ্ধি সামনের ডিসেম্বরে কমে আসতে পারে।

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকার ব্যক্তিগত ঋণ, ৬০ লাখ টাকার গাড়িঋণ এবং ২ কোটি টাকার আবাসন ঋণ নিতে পারেন। এগুলো মিলেই ব্যাংক খাতে ভোক্তা ঋণের হিসাব করা হয়। এসব ঋণের সুদহার এখন ১১ থেকে ১৪ শতাংশ। তবে ক্রেডিট কার্ডে সুদের হার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে।

ভোক্তাঋণ পরিস্থিতি

গত জুন শেষে দেশে মোট ভোক্তাঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৭২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, যা মোট ব্যাংকঋণের প্রায় ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ সময় মোট ব্যাংকঋণ ছিল ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। গত মার্চ পর্যন্ত ভোক্তাঋণের প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশের নিচে থাকলেও জুনে তা বেড়ে ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

**বেসরকারি খাতে ঋণে ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। **বিনিয়োগে স্থবিরতা, তবে গাড়ি-বাড়ি-ব্যক্তিগত ঋণে প্রবৃদ্ধি। **মোট ভোক্তা ঋণ দাঁড়িয়েছে ১.৭৩ লাখ কোটি টাকায়। **ক্রেডিট কার্ডে ২৫%, ব্যক্তিগত ঋণে ১১-১৪% সুদ।

২০২৪ সালের জুনে ভোক্তাঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা মোট ব্যাংকঋণের ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তখন মোট ব্যাংকঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ব্যাংকিং খাতে ভোক্তাঋণের এমন প্রবৃদ্ধি আগে দেখা যায়নি। ব্যাংকাররা বলছেন, মূলত গত বছরের একই সময়ে কম প্রবৃদ্ধি থাকায় এবার প্রবৃদ্ধিটা হঠাৎ বেশি দেখাচ্ছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত ঋণ, ফ্ল্যাট ও গাড়ির চাহিদাও বাড়ছে। যদিও ব্যবসায়িক ঋণ খাতে মন্দা অব্যাহত।

এ ছাড়া ব্যাংকগুলো এখন অন্য ব্যাংকের ঋণ অধিগ্রহণে কম সুদ দিচ্ছে। কারণ, এতে নথিপত্র যাচাই প্রক্রিয়া সহজ হয়। ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয় দ্রুত।

টাকা যাচ্ছে কোথায়

ব্যাংকারদের মতে, চলতি বছরে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে। ফলে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক উভয় ধরনের গাড়ি আমদানি বাড়ছে। ক্রেডিট কার্ড এবং ব্যক্তিগত ঋণেও প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। মোটরসাইকেল বিক্রিও আগের তুলনায় বেড়েছে, যার একটি বড় অংশ এসেছে ব্যাংকের ভোক্তাঋণ থেকে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে বাণিজ্যিক পণ্যবাহী গাড়ি সবচেয়ে বেশি আমদানি হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে, যা সংখ্যায় ২৮ হাজার ৮৯৭টি। পরের দুই অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১২ হাজার ৯৩৯ ও ১২ হাজার ৮১০টি। তবে সর্বশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আবার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১৯৭টিতে। এই অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয় ১১ শতাংশ।

গাড়ি আমদানি বাড়ার সঙ্গে নিবন্ধনও বাড়ছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ৮২৭টি গাড়ি নিবন্ধন হয়েছিল, এরপর তা কমে যায়। তবে গত দুই বছর ধরে আবার ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০২৪ সালে মাসে গড়ে নিবন্ধন হয় ৯৫৪টি। চলতি বছর তা বেড়ে মাসে ১ হাজার ২০০টিতে দাঁড়িয়েছে।

কোন ব্যাংক কী করছে

ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক ভোক্তাঋণ বিতরণে গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে সিটি ব্যাংক চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার ভোক্তাঋণ বিতরণ করেছে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি মাসে গড়ে ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে, যা ২০২৩ ও ২০২৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। এই প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে বিকাশের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চালু করা অতিক্ষুদ্র ঋণ। পাশাপাশি আবাসন ও গাড়িঋণও দ্বিগুণ বেড়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের ভোক্তাঋণের প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৫ শতাংশ। ব্যাংকটির ভোক্তাঋণের স্থিতি এখন ১২ হাজার কোটি টাকা। এর ডিএমডি মো. মাহীয়ুল ইসলাম বলেন, ‘এখন ব্যক্তিগত ঋণে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। সামনে আমরা আবাসন ঋণে জোর দেব। এই ঋণ অন্যান্য ঋণের তুলনায় নিরাপদ।’

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক ব্যক্তিগত ও আবাসন ঋণের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডে জোর দিচ্ছে। প্রতি মাসে তাদের নেটওয়ার্কে প্রায় ৫ হাজার নতুন ক্রেডিট কার্ড গ্রাহক যুক্ত হচ্ছে। ফলে ব্যাংকটির ভোক্তাঋণ বিতরণ বেড়ে মাসে প্রায় ৪০০ কোটি টাকায় উঠেছে। ব্যাংকটির ডিএমডি আবেদুর রহমান সিকদার বলেন, ‘আমরা আবাসন ও ব্যক্তিগত ঋণে বেশি নজর দিচ্ছি। পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডে নানা সুবিধা যুক্ত করায় গ্রাহক বাড়ছে।’

ঢাকা ব্যাংকের রিটেইল ঋণেও প্রবৃদ্ধি এসেছে। ব্যাংকটির রিটেইল বিজনেস প্রধান এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘চলতি বছরে গাড়ি ও ক্রেডিট কার্ডের ঋণ দ্বিগুণ হয়েছে। গৃহঋণ আগের মতো রয়েছে, ব্যক্তিগত ঋণ বেড়েছে ৫ শতাংশ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাত কলেজের সমস্যা নিয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির হুমকি শিক্ষকদের
  • আহ্‌ছানিয়া মিশন মেডিকেল কলেজে নিয়োগ
  • ব্যবসা-বাণিজ্যে কমলেও ভোক্তাঋণে বড় প্রবৃদ্ধি কেন
  • চট্টগ্রামে নভেম্বরে ডেঙ্গু সংক্রমণের রেকর্ড, ভোগাবে এ মাসেও
  • বাংলাদেশ একটি ‘দুষ্টচক্রের ত্রিভুজে’ আটকে ছিল: হোসেন জিল্লুর রহমান
  • শেখ হাসিনার বিচার: ন্যায়বিচার বনাম ন্যায়সংগত বিচারপ্রক্রিয়ার প্রশ্ন
  • ১২ বলে ফিফটি আর ৩২ বলে সেঞ্চুরি করলেন অভিষেক, ছক্কার নতুন রেকর্ড
  • সরকারকে টেকসই সমাধান বের করতে হবে
  • বাইডেনকে দুষলেও সন্দেহভাজন আফগান নাগরিকের আশ্রয়–আবেদনে অনুমোদন দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন
  • ফ্রিল্যান্সিং করে ২২ বছরের তানিয়ার মাসে আয় লাখ টাকা