আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রবন্ধ প্রকাশে চতুর্থ রাবি
Published: 15th, January 2025 GMT
২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক জার্নালে মৌলিক ও গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশে আরো এক ধাপ এগিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)।
২০২৩ সালে ৫৮৯টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ছিল পঞ্চম। এ বছর ৬৯০টির বেশি প্রবন্ধ প্রকাশ করে দেশে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
২০২২ সালে ৫৭০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে রাবির অবস্থান ছিল ষষ্ঠ। তবে ২০২১ সালে ৭০৭টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল এ বিদ্যাপীঠ। ১ হাজার ৫০০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে এবারও শীর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘স্কোপাস ডাটাবেইজ’ এর বিভিন্ন উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের গবেষণা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকারী ম্যাগাজিন ‘সায়েন্টিফিক বাংলাদেশ’। সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত তথ্য থেকে এমনটা জানা গেছে।
এ বছর (২০২৪) বাংলাদেশ থেকে গবেষণা নিবন্ধসহ ১৫ হাজার ৪১৩টি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে। যা গত বছরে ছিল ১৩ হাজার ৩২৭টি, ২০২২ সালে ১২ হাজার ৮৪৩টি, ২০২১ সালে ১১ হাজার ৪৭৭টি গবেষণা প্রবন্ধ। ২০২০ সালে ৮ হাজার ১৪০টি, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৩৬৩টি ও ২০১৮ সালে ছিল ৫ হাজার ২৩৪টি গবেষণা প্রবন্ধ।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ হাজার ১৩০টির বেশি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশিত হয়েছে। ৮৮০টির বেশি বৈজ্ঞানিক ডকুমেন্টস প্রকাশ করে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
বৈজ্ঞানিক প্রকাশনার র্যাঙ্কিংয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি পঞ্চম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ষষ্ঠ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) সপ্তম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অষ্টম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) নবম ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) দশম অবস্থানে আছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশি গবেষকদের প্রকাশনার প্রধান বিষয়গুলো ছিল প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এটা তো আমাদের জন্য ভালো খবর। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমরা আরো বেশি পটেনশিয়াল। আমরা যদি আরেকটু চেষ্টা করি, আরো ভালো করতে পারব।”
তিনি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ হয় না। এছাড়া যারা দক্ষ ছিল, তারাও অবসরে চলে গেছেন। ফলে আমরা কিছুটা পিছিয়ে গেছি। আমরা এ জায়গাগুলোতে জোর দিব। আশা করছি আমরা আরো এগোতে পারবো।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের হত্যাযজ্ঞের ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয় না: অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিচার ‘সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত কোনোটিই হয়নি’ বলে মনে করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সংস্থাটি।
এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, সে জন্য যাঁরা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়ায় তদন্ত ও বিচারকাজ হতে হবে। কিন্তু এই বিচার ও সাজা কোনোটিই সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত হয়নি। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি পাওয়া দরকার। অথচ মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও বাড়িয়ে তোলে। এটি সবচেয়ে নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি। কোনো ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় এর (মৃত্যুদণ্ডের) স্থান নেই।’
২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হন উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আহত ও নিহতদের পরিবারের ন্যায়বিচারের জন্য অত্যন্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচারপ্রক্রিয়া প্রয়োজন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড বজায় রেখে করা হবে। সেখানে এই মামলার বিচার সেই আদালতে পরিচালিত হয়েছে, যে আদালতের (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল) স্বাধীনতার ঘাটতি ও অন্যায্য বিচার কার্যক্রমের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা করে আসছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘(আসামিদের) অনুপস্থিতিতে এই বিচারের কার্যক্রম নজিরবিহীন দ্রুতগতিতে করা হয়েছে এবং এ রায় এই মাত্রার ও গুরুত্বের মামলার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। আদালত নিযুক্ত আইনজীবী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করলেও তিনি (বিবাদীকে) রক্ষার্থে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য খুব কম সময় পেয়েছেন। ন্যায়সংগত না হওয়া বিচারের এ ধরনের সূচকগুলো আরও গুরুতর হয়ে ওঠে, যখন বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব প্রমাণকে বিরোধপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়েছে, সেগুলো যাচাই (ক্রস এক্সামিনেশন) করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।’
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ১০ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ‘সুষ্ঠু বিচার’ নয় উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, ‘২০২৪ সালের জুলাইয়ের ভুক্তভোগীদের আরও ভালো বিচার প্রাপ্য। বাংলাদেশের এমন একটি ন্যায়বিচার প্রক্রিয়া প্রয়োজন, যা সম্পূর্ণভাবে নিরপেক্ষ, সব ধরনের পক্ষপাতের সন্দেহের বাইরে থাকবে এবং যা মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে আরও বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটাবে না। কেবল তখনই সত্য, ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ যথাযথ এবং অর্থপূর্ণভাবে করা সম্ভব হবে।’
বিবৃতির শেষে বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোনো ক্ষেত্রেই মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না। এই নীতির ক্ষেত্রে কোনো ব্যতিক্রম নেই। অপরাধের ধরন বা পরিস্থিতি, ব্যক্তির দোষ বা নির্দোষ হওয়া অথবা রাষ্ট্র যে পদ্ধতিতে ফাঁসি কার্যকর করে, কোনো ক্ষেত্রেই তারা মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন করে না।
আরও পড়ুনযেসব কারণে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায়৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনআন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের খবর কতটা গুরুত্ব পেল৭ ঘণ্টা আগে