‘চীনের প্রাচীর’ টপকাতে পারবেন তো ইয়ামাল–রাফিনিয়ারা
Published: 6th, May 2025 GMT
সান সিরোর জিউসেপ্পে মিয়াৎসা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আছড়ে পড়া নীল ঢেউয়ের শব্দে হয়তো মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠবে বার্সেলোনা। আবার বার্সেলোনার আক্রমণগুলো যখন আছড়ে পড়বে বহু বছর ধরে চীনের প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ইন্টার মিলান রক্ষণের নীল দেয়ালে, মুহূর্তেই হয়তো স্তিমিত হবে ৮০ হাজার দর্শকের হৃদ্কম্প। জিউসেপ্পে মিয়াৎসার গ্যালারিতে নেমে আসবে আশ্চর্য নীরবতা।
গত ৩০ এপ্রিল বার্সার মাঠে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচটি ৩-৩ গোলে ড্র হওয়ার পর থেকেই টগবগ করে ফুটছিল মিলানের ফুটবল স্বর্গ সান সিরো। ধীরে ধীরে স্টেডিয়ামটি প্রস্তুত হচ্ছিল আরেকটি আগুনে লড়াইয়ের জন্য। অবশেষে অপেক্ষা ফুরোচ্ছে আজ, ফাইনালে ওঠার জন্য দ্বিতীয় লেগের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা।
বার্সার মাঠে প্রথম লেগের ম্যাচটি যেন ছিল দাবা খেলার মতো। যেখানে শুরুতে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া বার্সা লেখে ঘুরে দাঁড়ানোর দুর্দান্ত এক গল্প। সেই ম্যাচে বার্সা কোচ হান্সি ফ্লিক যেন হয়ে উঠেছিলেন কিংবদন্তি দাবাড়ু মিখাইল তাল। বার্সার প্রথম দুই গোল হজম করাকে কেউ চাইলে তালের ‘স্যাক্রিফাইস’ কৌশলের সঙ্গেও মেলাতে পারেন। যেখানে প্রতিপক্ষকে শুরুতে সুযোগ দিয়ে তারপর চেপে ধরা হয়। শেষ পর্যন্ত ফলটা পুরোপুরি বার্সার পক্ষে আসেনি। ঘরের মাঠে সমতাতেই শেষ হয়েছে ম্যাচ। তবে একদিক থেকে বার্সা নিজেদের ভাগ্যবানও ভাবতে পারে—এখন আর অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নেই! নয়তো ৩টি অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে এগিয়ে থাকা ইন্টারের বিপক্ষে ম্যাচটা আরও কঠিন হতে পারত বার্সার জন্য।
প্রথম লেগে ঘরের মাঠে ০–২ গোলে পিছিয়ে পড়েও বার্সেলোনা ইন্টার মিলানের সঙ্গে ৩–৩ গোলে ড্র করেছে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১১০৪ কোটি ৪১ লাখে দুই কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার
দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’-অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে পৃথক দুটি দরপত্রের মাধ্যমে দুই কার্গো এলএনজি ক্রয়ের লক্ষ্যে উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
এরমধ্যে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক মেসার্স ভিটল প্রা.লি. সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই দুই কার্গো এলএনজি সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ১১০৪ কোটি ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৬ টাকা।
দেশের বিদ্যমান ও ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে দেশীয় উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি কক্সবাজারের মহেশখালীতে স্থাপিত দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে জি টু জি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার থেকে ২.৫ এমটিপিএ (মিলিয়ন টন পার এনাম) এবং ওমান থেকে ১.০ এমটিপিএ এলএনজি অর্থাৎ মোট ৩.৫ এমটিপিএ (৫৬ কার্গো) এলএনজি ক্রয় করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর বাংলাদেশ এখন নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা
এডিবির সেমিনার
দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতা ও কার্যকারিতার ওপর গুরুত্বারোপ
এছাড়া, চাহিদার আলোকে অ্যানুয়াল ডেলিভারি প্রোগ্রাম (এডিপি) এর আওতায় স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কেনা হয়।
আগামী জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০২৫ সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে গত ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর তারিখে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অনুমোদন দেয় । সেপ্রেক্ষিতে পেট্রোবাংলা আগামী ০২-০৩ জুলাই ১(এক) কার্গো এলএনজি ক্রয়ের প্রস্তাব পাঠায়।
উল্লেখ্য, ‘পিপিআর-২০০৮’-এর বিধি-৬৫ অনুযায়ী আগামী ০২-০৩ জুলাই ২০২৫ সময়ে ১ (এক) কার্গো এলএনজি ক্রয়ের জন্য গত ৩০ এপ্রিল তারিখে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে পাঠানো হয়। ‘পিপিআর, ২০০৮’ এর বিধি ৮৫ অনুসরণে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্ধারিত সময়ে দাখিল করা ৬টি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের নিকট দাখিল করে। কোটেশনগুলো মধ্যে ৬টি কোটেশনই রেসপন্সিভ হয়।
এরমধ্যে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ভিটল এশিয়া প্রা.লি. প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.৫৭৮৮ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়।
উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫% কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.৫৭৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৫৫,৩২,৬৬,৫৮৪ টাকা।
অপর এক প্রস্তাবে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’-অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট হতে ১ কার্গো (৩০-৩১ মে ২০২৫ সময়ের জন্য ২৫তম) এলএনজি আমদানি করা হবে। এ লক্ষ্যে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৪টি কোটেশন দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে পাঠায়।
দাখিলকৃত ৪টি কোটেশনের মধ্যে ৪টি কোটেশনই রেপন্সিভ হয়। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির মূল্যায়নে প্রতি ইউনিট এলএনজি’র দাম ১১.৪৪৮৮ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সিঙ্গাপুর ভিত্তিক ভিটল প্রা.লি. সিঙ্গাপুরকে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে।
উক্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২,০০,০০০ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫% কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১১.৪৪৮৮ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৮,৪৬৭,৯৬৮.০০ মার্কিন ডলার। মুদ্রা বিনিময় হার ১ মার্কিন ডলার সমান ১২২.০০ টাকা হিসেবে বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রয়োজন হবে ৪৬৯,৩০,৯২,০৯৬ টাকা (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতিত)।
এলএনজি আমদানিতে ১৫% ভ্যাট এবং ২% এআইটি প্রযোজ্য বিবেচনায় সর্বমোট ১৭% ভ্যাট এবং এআইটি এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৭৯,৭৮,২৫,৬৫৬ টাকা। অর্থাৎ ৩৩,৬০,০০০ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট (৪৬৯,৩০,১২,০৯৬ + ৭৯,৭৮,২৫,৬৫৬)=৫৪৯,০৯,১৭,৭৫২টাকা। সে হিসেবে ২ কার্গো এলএনজি আমদনিতে মোট ব্যয় হবে ১১০৪ কোটি ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৬ টাকা।
এ সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা/হাসনাত/এস