গত ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন রাকিবুল ইসলাম রকেট। সেখানে তিনি বিয়ে করেন কম্বোডিয়ান এক তরুণীকে। সেই থেকে বাবা-মায়ের একটি স্বপ্ন, ছেলে একদিন হেলিকপ্টারে চড়ে প্রবাসী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফিরবে গ্রামে। সেই দৃশ্য দেখবে সাত গ্রামের মানুষ। অবশেষে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিলেন রাকিবুল ইসলাম রকেট।

সোমবার (৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পালশা গ্রামে হেলিকপ্টারযোগে স্ত্রী, কন্যা সন্তান, শাশুড়ি ও শ্যালককে নিয়ে পৌঁছান রকেট। হেলিকপ্টার অবতরণের খবরে ওই এলাকার পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও রকেটের বাড়ির সামনে জড়ো হন হাজারো মানুষ। প্রবাসী বউকে একনজর দেখতে এবং হেলিকপ্টার দেখার উৎসাহে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন সেখানে।

রকেট পালশা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কৃষক আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারটি পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর রকেট ও তার পরিবারকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকায় আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।

রকেটের বড় ভাই রাসেল রানা বলেন, ‍“রকেট মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় কম্বোডিয়ান তরুণীর। পরে তাকে বিয়ে করেন রকেট। তাদের ঘরে কন্যাসন্তান রয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল, রকেট যেন হেলিকপ্টারে করে বউ-সন্তান নিয়ে গ্রামে ফেরে। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই এই আয়োজন।”

প্রতিবেশী মেরাজুল ইসলাম বলেন, “১৭ বছর আগে রকেট মালয়েশিয়ায় যান। শুনেছি, সেখানে এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসাও করেন তিনি। সেই ছেলে আজ হেলিকপ্টারে করে বিদেশি বউ ও সন্তান নিয়ে ফিরে এসেছে। এটা আমাদের সবার জন্য আনন্দের।”

রকেটের মা রাফিয়া বেগম বলেন, “আমার ছেলে ১৭ বছর পর বাড়িতে ফিরেছে। তাই ইচ্ছা ছিল, ও যেন হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে আসে। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠে ভিড় করেছে।”

রাকিবুল ইসলাম রকেট বলেন, “বাবা–মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে এসে আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীদের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটা সত্যিই আনন্দের।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ 

সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়। 

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। 

ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে। 

এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”

সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। 

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।” 

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”

তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ