হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে ফিরলেন রকেট
Published: 5th, May 2025 GMT
গত ১৭ বছর ধরে মালয়েশিয়ায় থাকেন রাকিবুল ইসলাম রকেট। সেখানে তিনি বিয়ে করেন কম্বোডিয়ান এক তরুণীকে। সেই থেকে বাবা-মায়ের একটি স্বপ্ন, ছেলে একদিন হেলিকপ্টারে চড়ে প্রবাসী স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফিরবে গ্রামে। সেই দৃশ্য দেখবে সাত গ্রামের মানুষ। অবশেষে বাবা-মায়ের সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিলেন রাকিবুল ইসলাম রকেট।
সোমবার (৫ মে) সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের পালশা গ্রামে হেলিকপ্টারযোগে স্ত্রী, কন্যা সন্তান, শাশুড়ি ও শ্যালককে নিয়ে পৌঁছান রকেট। হেলিকপ্টার অবতরণের খবরে ওই এলাকার পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও রকেটের বাড়ির সামনে জড়ো হন হাজারো মানুষ। প্রবাসী বউকে একনজর দেখতে এবং হেলিকপ্টার দেখার উৎসাহে বিভিন্ন এলাকার মানুষ ছুটে আসেন সেখানে।
রকেট পালশা গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত কৃষক আব্দুর রশিদ প্রামাণিকের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারটি পালশা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর রকেট ও তার পরিবারকে ফুলের মালা দিয়ে স্বাগত জানান স্বজন ও প্রতিবেশীরা। এলাকায় আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।
রকেটের বড় ভাই রাসেল রানা বলেন, “রকেট মালয়েশিয়ায় কাজ করেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় কম্বোডিয়ান তরুণীর। পরে তাকে বিয়ে করেন রকেট। তাদের ঘরে কন্যাসন্তান রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বাবা-মায়ের ইচ্ছা ছিল, রকেট যেন হেলিকপ্টারে করে বউ-সন্তান নিয়ে গ্রামে ফেরে। সেই ইচ্ছা পূরণ করতেই এই আয়োজন।”
প্রতিবেশী মেরাজুল ইসলাম বলেন, “১৭ বছর আগে রকেট মালয়েশিয়ায় যান। শুনেছি, সেখানে এখন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ছোটখাটো ব্যবসাও করেন তিনি। সেই ছেলে আজ হেলিকপ্টারে করে বিদেশি বউ ও সন্তান নিয়ে ফিরে এসেছে। এটা আমাদের সবার জন্য আনন্দের।”
রকেটের মা রাফিয়া বেগম বলেন, “আমার ছেলে ১৭ বছর পর বাড়িতে ফিরেছে। তাই ইচ্ছা ছিল, ও যেন হেলিকপ্টারে বউ-সন্তান নিয়ে আসে। আজ সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ও বিদ্যালয় মাঠে ভিড় করেছে।”
রাকিবুল ইসলাম রকেট বলেন, “বাবা–মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে এসে আত্মীয়-স্বজন আর প্রতিবেশীদের ভালোবাসা পাচ্ছি, এটা সত্যিই আনন্দের।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই দলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন পাঁচ জন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে এই রণক্ষেত্র তৈরি হয় সদর উপজেলার আলোকবালী এলাকায়।
সংঘর্ষে নিহতের নাম ইদন মিয়া (৫৫)। তিনি সদর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের তাৎক্ষণিক পরিচয় জানা না গেলেও তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নদী থেকে বালু উত্তোলন, জমি দখল এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দ্বন্দ্ব আরো ঘনীভূত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে এই সংঘর্ষ বাধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয়পক্ষই দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ইদন মিয়াকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য নতুন সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা বা আটকসংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়নি।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, “ঘটনার বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে। শুনেছি একজন নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।”
ঢাকা/হৃদয়/এস