পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি হিসেবে ভারতজুড়ে মক ড্রিলিং বা কৃত্রিম মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ২৩ জেলার ৩১ জায়গায় বুধবার এ মহড়া শুরু হবে।

বুধবার থেকে আগামী সাত দিন পর্যন্ত দফায় দফায় পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদহ, শিলিগুড়ি, বৃহত্তর কলকাতা, দুর্গাপুর, হলদিয়া, হাসিমারা, খড়্গপুর, বার্নপুর-আসানসোল,ফরাক্কা, চিত্তরঞ্জন,বালুরঘাট, আলিপুরদুয়ার, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ, মাথাভাঙা, কালিম্পং, জলঢাকা, কার্শিয়াং, কোলাঘাট, বর্ধমান, বীরভূম, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি ও মুর্শিদাবাদে এ মহড়া হবে।

সাধারণভাবে সরকারি দপ্তরের কর্মী থেকে কর্মকর্তা পর্যন্ত সবাইকে এই মহড়ায় অংশ নিতে হবে। তবে সাধারণ মানুষকে আপাতত মহড়ার বাইরে রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হবে বা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে—মহড়ায় সে বিষয়গুলো শেখানো হবে।

রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের কাছে ৬২টি স্যাটেলাইট ফোন রয়েছে। এগুলো ঠিকমতো কাজ করছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। কলকাতায় সাইরেন ব্যবস্থা রয়েছে ৯৫টি। বিভিন্ন জেলায় সাইরেন রয়েছে ২৫-৩০টি করে। আর জেলা সদরে রয়েছে একটি করে। এর মধ্যে অনেকগুলো সাইরেন কাজ করছে না বলে জানা গেছে। সেগুলো মেরামত করা হবে।

কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকে করেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব, বেসামরিক প্রতিরক্ষাসচিব, বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের মহানির্দেশক এবং অন্যান্য কর্মকর্তা। বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু অনেকগুলো সীমান্ত রয়েছে, তাই সীমান্ত সুরক্ষায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে। সংবেদনশীল জায়গাগুলো এরই মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে।

রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কোন কোন জায়গায় কৃত্রিম মহড়া হবে, তা চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসকেরা বেসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরকে জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে বুধবারের কৃত্রিম মহড়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটি হলো অতিরিক্ত স্পর্শকাতর অঞ্চল—অর্থাৎ সেতু, বিমানবন্দর, বিমান ওঠানামার অস্থায়ী অঞ্চল, সেনাবাহিনীর ঘাঁটি প্রভৃতি। দ্বিতীয় ভাগে রাখা হয়েছে তেল বা গ্যাসের পাইপলাইন রয়েছে এমন অঞ্চল। আর তৃতীয় ভাগে রয়েছে অপেক্ষাকৃত কম স্পর্শকাতর কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনে পিআরের বিকল্প নেই: আব্দুল্লাহ তাহের

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ভোটের সংখ্যানুপাতে (পিআর) সংসদের আসন বণ্টন পদ্ধতির বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। 

মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণে কার্যালয়ে জুলাই-আগস্টের শহীদ, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে ডা. তাহের বলেন, যারা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধ করতে সহযোগিতা করছে না, তারাও ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায়। ভোট ডাকাতির কোনো সুযোগ থাকবে না বলেই কেউ কেউ পিআর পদ্ধতিকে ভয় পায়। যারা নির্বাচনের আগেই সংসদে ২৮০ আসন পাবে বলে দাবি করে, তারাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা। তারা মূলত হাসিনা মার্কা যেনতেন নির্বাচন চায়। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে, বাংলাদেশ কঠিন পরিস্থিতিতে পড়বে। মানুষ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হারাবে। রাষ্ট্র কর্তৃক জুলুমের শিকার হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছি। কিন্তু  মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় জুলুম ও বৈষম্য ছিল। ২০২৪ সালে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে জাতি স্বাধীনতা লাভ করেছে। ২৪ এর স্বাধীনতা আর কাউকে ছিনিয়ে নিতে দেওয়া হবে না। ছাত্র-জনতার অর্জিত নতুন বাংলাদেশ মৌলিক পরিবর্তন চায়। বিএনপিসহ তিনটি দল ছাড়া সবাই শর্তহীনভাবে প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরের সীমাবদ্ধ চায়। কারও উদ্দেশ্য যদি খারাপ হয়, তাহলে মহৎ উদ্দেশ্যে তিনি সমর্থন জানান না, জানাতে পারেন না। 

দক্ষিণ জামায়াতের  নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকিরের সভাপতিত্বে দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন মহানগরের নেতা এবং আগামী নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ