রবীন্দ্রনাথের স্মৃতির নিদর্শন কাছারিবাড়ি
Published: 7th, May 2025 GMT
২ / ৯কাছারিবাড়িতে রয়েছে আবক্ষ ভাস্কর্য
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সইতে পারছি না, বিচার চাই—কান্নাজড়িত কণ্ঠে মা
‘ছেলের বউয়ের নির্যাতনে আমরা অতিষ্ঠ। তাই আমার সোনার ছেলে প্রাণ দিয়েছে। আমি সন্তান হারিয়েছি। এ শোক সইতে পারছি না। এর বিচার করতে হবে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লাশ উদ্ধার হওয়া র্যাবের কর্মকর্তা পলাশ সাহার মা আরতী সাহা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পলাশ সাহার মরদেহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তাড়াশি গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে গার্ড অব অনার ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
গোপালগঞ্জ-পয়সারহাট সড়কে কোটালীপাড়ার তাড়াশী বাসস্ট্যান্ডে দক্ষিণ পাশে পলাশ সাহার বাড়ি। তিনি তারাশী গ্রামের মৃত বিনয় কৃষ্ণ সাহার ছেলে। পাকা মেঝের টিনশেড ঘরের সামনে বসে আহাজারি করছিলেন পলাশের বড় বোন রমা সাহা, মেজ ভাই নন্দলাল সাহা ও বড় ভাই লিটন সাহার স্ত্রী।
নন্দলাল সাহা বলেন, চার ভাইবোনের মধ্যে পলাশ ছিলেন সবার ছোট ও আদরের। কোটালীপাড়া থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে। পাড়াশোনা শেষ করে সাব-রেজিস্ট্রার পদে শুরু করে কর্মজীবন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক, ৩৬তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডার ও ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পায়। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশে দায়িত্ব পালন করে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর তাকে র্যাবে পাঠানো হয়। তারপর থেকে পলাশ সেখানে কর্মরত ছিলেন।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন চৌধুরীপাড়ার সুস্মিতা সাহার সঙ্গে বিয়ে হয় পলাশের। বিয়ের ৬ মাস পর থেকে সংসারে নানা অশান্তি শুরু হয়।
নন্দলাল সাহা, পলাশ চেয়েছিল কর্মস্থল চট্টগ্রামে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে। কিন্তু তার স্ত্রী তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলেন না। মা বাসায় না থাকতে চাইলে পলাশ কষ্ট পেত। মা বাসায় থাকলে স্ত্রী সহ্য করতে পারত না। এ নিয়ে ঝামেলা লেগেই থাকত। ভাই চলে গেল, আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল।
নন্দলালের অভিযোগ, আত্মহত্যা প্ররোচনা করেছে পলাশের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে তার বিচার চাই।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে র্যাব–৭ ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য নিজের কক্ষে যান পলাশ সাহা। তখন সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দেখতে পান। তার রক্তাক্ত মরদেহের পাশে একটি চিরকুট পড়ে ছিল। এতে তার মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী বলে উল্লেখ করেন।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের ওপর। তাঁরা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে, তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো–অর্ডিনেট করে।’