তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ ট্রাইব্যুনালে
Published: 8th, May 2025 GMT
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.
আজ ট্রাইব্যুনালের শুনানিতে তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীর আইনজীবী আজিজুর রহমান বলেন, তাঁরা এখনো ‘কপি অব অ্যালিগেশন’ পাননি। ফলে তাঁরা জানেন না যে তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরী কবে, কোথায়, কখন, কাকে হত্যা করেছেন বা হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তা ছাড়া এই আসামির বয়স ৭০ বছরের বেশি। তিনি নানা রোগে ভুগছেন। এ অবস্থায় তাঁর জামিন প্রয়োজন।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এই আসামিকে ‘প্রাইমারি অ্যালিগেশন’ দেওয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ আছে, তিনি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় দেশব্যাপী সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ছিলেন। ফলে সেই প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর দায় আছে। তাঁর দায় ‘কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’ পর্যায়ের। এই মামলায় তাঁর জামিন অচিন্তনীয়। ফরমাল চার্জ গঠন হলে তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীর অভিযোগ সম্পর্কে জানা যাবে। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অনেক আসামি পালিয়েছেন। ইন্টারপোল ও বন্দিবিনিময় চুক্তির মাধ্যমেও তাঁদের আনা যাচ্ছে না। তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীকে জামিন দিলে তিনিও মুহূর্তের মধ্যে হাওয়া হয়ে যেতে পারেন।
অভিযোগ সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানার জন্য মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত আসামিপক্ষকে অপেক্ষা করতে বলেন ট্রাইব্যুনাল। শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল বলেন, চিকিৎসকের নথিপত্রে এমন কিছু নেই, যে কারণে তাঁর জীবন হুমকির মুখে। বয়স হিসেবে তিনি ভালো আছেন। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তৌফিক–ই–ইলাহী চৌধুরীর জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
ফারুক খানের জামিন শুনানি সোমবারজুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হবে আগামী সোমবার। আজ ট্রাইব্যুনাল এই দিন ধার্য করেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম নবত ব র ধ অপর ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েত, বাহরাইন, আমিরাতের আকাশপথ আবার সচল
কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কুয়েত, বাহরাইন ও আমিরাতের আকাশপথ। পরে এই তিন দেশ তাদের আকাশপথ আবার সচল করেছে। কুয়েত ও বাহরাইনের আকাশপথ আবারো খুলে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশ দুটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলার পর আকাশপথ বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার কথা জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষও।
ইরাক ও কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কথা নিশ্চিত করেছে ইরান। এক বিবৃতিতে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ আল হুসেইন’ সাংকেতিক নাম ধারণ করে বিপ্লবী গার্ড বাহিনী কাতারের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। ‘বাশারাত ফাতেহ’ অপারেশনে কাতারের উদেইদ ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু’ করে ‘বিধ্বংসী ও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে।
বিবৃতির বরাত দিয়ে ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, কাতারের আল উদেইদে অবস্থিত আমেরিকান ঘাঁটিতে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। গত সপ্তাহে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন বিমান হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে, কাতার নিশ্চিত করেছে ইরান থেকে মোট ১৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র একটি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে।
হামলার পর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) বলেছে, হোয়াইট হাউস ও তাদের মিত্রদের প্রতি ইরানের বার্তা ‘সুস্পষ্ট’। ইরানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার উপর কোনো আক্রমণকে ‘খামোখা ছেড়ে দেওয়া হবে না’।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযান সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের নির্দেশে এবং খাতাম আল আম্বিয়া কেন্দ্রীয় সদর দপ্তরের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে।
এই বিবৃতির কিছু আগে কাতারের রাজধানী দোহা এবং এর উপকণ্ঠ লুসাইলে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আকাশে প্রজেক্টাইল দেখা গেছে।
সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সফল অভিযানে ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ বোমা ব্যবহার করেছিল তার সমান ছিল। শক্তিশালী ইরানি বাহিনীর হামলায় যে ঘাঁটিটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল তা কাতারের নগর স্থাপনা এবং আবাসিক এলাকা থেকে অনেক দূরে ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা ১৪টি বোমা দিয়ে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। এর কয়েক মিনিট আগে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সি জানায়, কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ‘বিশারাত ফাতেহ’ এবং ‘ইয়া আবা আব্দুল্লাহ’ কোড নামে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে।
তাসনিম জানায়, ‘বিশারাত ফাতেহ’ ও ‘ইয়া আবা আবদুল্লাহ’ নামে এসব হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় একাধিক ওয়ারহেড বা ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
আইআরজিসির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানাচ্ছে, এই প্রথমবার এই ক্ষেপণাস্ত্র কোনো হামলায় ব্যবহার করা হলো। সেই সঙ্গে হামলায় আধুনিক ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে।