হাবল স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে প্রায় ৬০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি ক্ষুধার্ত কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কৃষ্ণগহ্বরটি একটি নক্ষত্রকে রীতিমতো গিলে ফেলেছে। গিলে ফেলার পর নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশ কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে একটি চাকতি তৈরি করেছে। এ ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট (টিডিই) বা জোয়ার-ভাটা ব্যাঘাতের ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

নাসার মতে, ১০ লাখ সৌরভরের কৃষ্ণগহ্বরটি তার হোস্ট গ্যালাক্সির কেন্দ্রে অবস্থান করছে না। যদিও সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর সাধারণত আশপাশের উপাদান গ্রাস করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বার্কলের বিজ্ঞানী ইউহান ইয়াও বলেন, এ ঘটনাকে এটি২০২৪টিভিডি নামকরণ করা হয়েছে। অপটিক্যাল আকাশ জরিপের মাধ্যমে ধারণ করা প্রথম অফসেট টিডিই ঘটনা এটি। এর মাধ্যমে অধরা কৃষ্ণগহ্বরের তথ্য উন্মোচনের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

একটি টিডিই ঘটে যখন একটি কৃষ্ণগহ্বরের বিশাল মহাকর্ষীয় জোয়ার বল কোনো নক্ষত্রকে প্রসারিত করে বা ছিন্নভিন্ন করে দেয়। সর্বশেষ আবিষ্কৃত এ ঘটনা নতুন তথ্য দিচ্ছে। ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত আরও বৃহৎ কৃষ্ণগহ্বর থেকে মাত্র ২ হাজার ৬০০ আলোকবর্ষ দূরে এমন ঘটনা ঘটেছে। দুটি সুপারম্যাসিভ কৃষ্ণগহ্বর একই ছায়াপথে সহাবস্থান করছে। যদিও মহাকর্ষীয়ভাবে একে অপরের সঙ্গে বাইনারি জোড়া হিসেবে আবদ্ধ নয়। নাসার তথ্যমতে, ছোট কৃষ্ণগহ্বরটি ভবিষ্যতে বড় কৃষ্ণগহ্বরের সঙ্গে মিশে যাওয়ার জন্য ছায়াপথের কেন্দ্রে সর্পিল আকার হয়ে যেতে পারে। আপাতত মহাকর্ষীয়ভাবে আলাদা রয়েছে।

এর আগেও কৃষ্ণগহ্বরকে প্রতিবেশী বা বিপথগামী নক্ষত্রকে গ্রাস করতে দেখা গেছে। গত বছরের নভেম্বরে বিজ্ঞানীরা এলআইডি-৫৬৮ নামের একটি কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কার করেছিলেন। সেই কৃষ্ণগহ্বর অতিমাত্রায় পদার্থ গ্রাস করছে বলে জানা যায়।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে সেবা ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত, নগরবাসীর স্বস্তি

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) ২৩টি নাগরিক সেবা ও সনদের ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে। আজ সোমবার দুপুরে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন করপোরেশনের প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ।

আজ সোমবার দুপুরে নগরবাসীর পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘আমরা কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা। গত ২০ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নাগরিক সেবার ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর গত ১৫ এপ্রিল সিটি করপোরেশনের সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এতে স্বাক্ষর করেন। এতে ২৩টি নাগরিক সেবার বর্তমান ফি ও পুনর্নির্ধারিত ফি তুলে ধরা হয়। এতে ১৯টি খাতে ফি বাড়ানো হয়। এই ক্ষেত্রে ৫ গুণ টাকা বাড়ানো হয় ১৬টি খাতে। কোনো ধরনের গণশুনানি ছাড়া এভাবে মূল্য বাড়ানোর নজির নেই।’

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ‘জানুয়ারি মাসের সিদ্ধান্ত, হঠাৎ করে মে মাসে বাজেটের এক মাস আগে জানানো হয়েছে। এত দিন এই সিদ্ধান্ত কেন জানানো হলো না। আবার বলা হচ্ছে, ১ মে থেকে এটি কার্যকর হবে। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যুগে এভাবে জনস্বার্থবিরোধী মূল্যতালিকা বৃদ্ধি কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন লাভবান প্রতিষ্ঠান, এখানে টাকার অভাব নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। সিটি করপোরেশনে ১ হাজার ৫৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকার অধিকতর উন্নয়নকাজ চলছে। অন্যান্য ফি নগরবাসী দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় জনস্বার্থবিরোধী পুনর্নির্ধারিত মূল্যতালিকা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় নগরবাসীকে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী (আবু), কলেজশিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন, প্রকৌশলী আকবর হোসেনসহ অনেকে।

আরও পড়ুন১৬ ধরনের সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি, গণশুনানি না করায় নাগরিকদের ক্ষোভ০৯ মে ২০২৫

প্রশাসক সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, নগরবাসীর কথা চিন্তা করেই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। যদিও অন্যান্য সিটি করপোরেশনের তুলনায় এই ফি এখনো কম, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াটি সঠিক ছিল না। ভবিষ্যতে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে ৯ মে প্রথম আলোয় ‘কুমিল্লা সিটি করপোরেশন: ১৬ ধরনের সেবার ফি ৫ গুণ বৃদ্ধি, গণশুনানি না করায় নাগরিকদের ক্ষোভ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং ১১ মে ‘নাগরিক সেবার ফি বৃদ্ধি, কুমিল্লাবাসীর মতামতকে বিবেচনায় নিন’ শিরোনামে সম্পাদকীয় ছাপা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ