বেসরকারি খাতের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম দামে যাতে ভোক্তারা তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাস পেতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে সরকার এটি বিক্রি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) মাধ্যমে। বিপিসির চার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যথাক্রমে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল) পরিবেশক নিয়োগ দেয়। বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, চার কোম্পানিতে এলপি গ্যাস পরিবেশকের সংখ্যা ৩ হাজার ১০১।
সরকারি উদ্যোগে কম দামে গ্যাস সরবরাহ করলেও এর সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। লাভের গুড় খেয়ে নিচ্ছেন পরিবেশকেরা। যেখানে ভোক্তাদের সাড়ে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার কেনার কথা ৮২৫ টাকায়, সেখানে তাঁরা কিনছেন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। ৪ মে প্রকাশিত মূল্য সমন্বয়ক আদেশ অনুযায়ী, ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি খাতে এলপিজির ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪৩১ টাকা। অন্যদিকে সরকারি কোম্পানির মূল স্থাপনা বা ডিপো থেকে পরিবেশকদের সিলিন্ডার কিনতে খরচ হচ্ছে ৭৮৪ টাকায় (১২ দশমিক ৫ কেজি)। এর সঙ্গে পরিবেশকদের স্থানীয় পরিবহন খরচ ২১ টাকা, পরিচালন খরচ যুক্ত হয় আরও ২০ টাকা। অর্থাৎ ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যহার হচ্ছে ৮২৫ টাকা। ৪ মের আগে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যহার ছিল ৬৯০ টাকা। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোক্তাদের দিতে হচ্ছে অনেক বেশি। গত পাঁচ বছরে মোট এলপি গ্যাস বিক্রি হয়েছে ৫২ হাজার ২৩০ টন বা ৫ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার কেজি।
বাড়তি দাম নেওয়ার কথা স্বীকার করে এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতি বলেছে, বিপিসির চার কোম্পানি থেকে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস পাওয়া যায় না। ফলে নির্ধারিত দামে গ্যাস বিক্রি করে দোকানভাড়া, ট্রেড লাইসেন্স ফি, বিস্ফোরক পরিদপ্তরের লাইসেন্সের নবায়ন ফি তোলা সম্ভব হয় না। এ কারণে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে বিপিসির চেয়ারম্যান মো.
সরকার নির্ধারিত মূল্যে গ্রাহকেরা গ্যাস পাচ্ছেন কি না, তা তদারকির দায়িত্ব বিইআরসি ও বিপিসির। বাস্তবে তারা সেই দায়িত্ব পালন করছে না বলেই পরিবেশকেরা বাড়তি দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিপিসির মাধ্যমে কম দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করায় সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জনগণ এর সুবিধা পেলে কেউ আপত্তি করত না। কিন্তু ভোক্তাদের যখন বিপিসি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সমান দামে গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে হচ্ছে, তখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে সরকার কেন এ ভর্তুকি দেবে?
এ ক্ষেত্রে বিপিসি দায় এড়াতে পারে না, সরকার নির্ধারিত দামে গ্যাস বিক্রি হচ্ছে কি না, সেটা তদারক করতে হবে তাদেরই। আর বিপিসি যদি সেটা না করতে পারে, তাহলে বেসরকারি খাতে পুরো গ্যাস সিলিন্ডারের বাজার ছেড়ে দেওয়া হোক। বিপিসির এলপি গ্যাস পরিবেশক নিয়োগ ও বিপণন নীতিমালাটি পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। অনেক সময় কমিটি গঠন করা হয়, তারা সুপারিশও করে। কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না। বিপিসির পরিবেশক নীতিমালার ক্ষেত্রেও তেমনটি হবে না আশা করি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব সরক র কম দ ম অন য য়
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা, নির্বাচনী আচরণবিধির সংশোধন চায় ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা এবং নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনে নির্বাচন কমিশনকে স্মারকলিপি দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। সোমবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের কাছে এ স্মারকলিপি দেন ছাত্রদলের নেতারা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘আসন্ন জকসু নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন গোষ্ঠী জকসু সংবিধি এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ। ন্যায্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতে আমাদের অনুরোধ, ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় প্রত্যেক ভোটারের ছবিসহ তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নির্বাচনে অমোচনীয় কালি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং স্বচ্ছ, নাম্বারযুক্ত ব্যালট বক্স রাখা আবশ্যক।’
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ব্যালট ছাপার সংখ্যা, ভোট প্রদানকারীর সংখ্যা এবং নষ্ট ব্যালটের তথ্য প্রকাশ করতে হবে। মিডিয়া ট্রায়াল বা ভুল তথ্য প্রচার হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকার অনুমোদিত সব মিডিয়াকে নির্বাচনকালীন সময়ে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ডাকসুর তফসিল ঘোষণার ৪১ দিন, চাকসুর ৪৪ দিন, রাকসুর ৮০ দিন এবং জাকসুর তফসিল ঘোষণার ৩১ দিন পর নির্বাচন হয়েছে। যেহেতু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়, তাই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। এ ছাড়া বাকি চার বিশ্ববিদ্যালয়ের তফসিল ঘোষণার সময় ও নির্বাচনের মধ্যবর্তী পার্থক্য বিবেচনা করে জকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠু একটা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, এজন্য ছাত্রদল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে।’