জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একের পর এক বাস আসছে কাকরাইলে। আজ শুক্রবার ৯টা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত রোটেশনে প্রায় ৫০টি বাস ক্যাম্পাস থেকে কাকরাইল মোড়ে এসেছে।

আজ দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট বড়, ডাবল ডেকার বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী কর্মকর্তা কর্মচারী আসছেন। প্রতিটি বাসে সিট ছাড়াও দাঁড়িয়ে আসতে দেখা যায় অনেককে। আন্দোলনে আসা বাসগুলো আন্দোলনস্থল কাকরাইলে শিক্ষার্থী নামিয়ে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, আন্দোলনে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৫০টি বাস ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে গেছে। অনেক ড্রাইভার অসুস্থ, ফলে প্রতিটি বাসে রোটেশন আকারে মোট ৫০টি বাস ছেড়ে গেছে। একেকটি বাস ৩ থেকে ৪ বার গেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রভাষ সরকার সমকালকে বলেন, এই দাবি আমাদের সবার। সকল জবিয়ানদের। দাবি আদায়ে বাস ভর্তি করে কাকরাইলে যাচ্ছি। আমাদের দাবি মানতে হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক তারেক বিন আতিক বলেন, সকাল থেকেই বাস সার্ভিস চলমান আছে। নামাজের আগে ও পরেও চলমান থাকবে।

জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টানা তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ সকাল ১০টার দিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদ মোড়ে জড়ো হয়েছেন। জবি ঐক্যের পক্ষ থেকে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছউদ্দীন বৃহস্পতিবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, দাবি আদায়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শুক্রবার জুমার নামাজের পর গণঅনশন শুরু করবে। এতে সকল সাবেক ও বর্তমান জবিয়ানদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। 

এছাড়া আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ১৪ মে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কালো দিবস পালনের ঘোষণা দেন তিনি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। 

আগের দিন বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কাকরাইল মোড়ে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। অন্তত ৩০টি বাসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগ দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্দোলনের কারণে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যান চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।

আন্দোলনের মধ্যে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। পরে বিকেলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ। এ বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

এর আগে বুধবার বেলা পৌনে ১২টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে রওয়ানা হয়। পদযাত্রা প্রথমে গুলিস্তান মাজার গেটে বাধার মুখে পড়েন। পরে মৎস ভবনে ফের পুলিশের বাধা অতিক্রম করে যমুনা অভিমুখে এগিয়ে যেতে থাকেন জবি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে যেতেই অতর্কিত টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি নিক্ষেপ করতে শুরু করে পুলিশ। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। এরপর রাতে আলোচনার জন্য উপাচার্য অধ্যাপক ড.

রেজাউল করিম এবং ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন  শিক্ষা উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাসায় দীর্ঘসময় মিটিং করলেও কোনো সমাধান আসেনি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন স্থগিত

দাবি মেনে নেওয়ায় চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন।

শুক্রবার (১৬ মে) রাত রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাকরাইল মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন বলেন, “আমাদের দাবিগুলো যেহেতু মেনে নেওয়া হয়েছে, তাই চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে এই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে আবার আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাকরাইলের অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের কাছে এসে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ঘোষণা দেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনটি দাবির বিষয়ে স্পষ্ট করেছে সরকার।”

তিনি বলেন, “সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবাসন সংকট নিরসনে দ্রুত অস্থায়ীভাবে স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।”

পরে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের পানি পান করানো হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম ফায়েজ আহমেদ ও অন্যরা।

ঢাকা/লিমন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ